তৃণমূল কর্মীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করার ঘটনায় অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার রাতে হাওড়ার বেলগাছিয়ার কে রোডে বাড়ির কাছেই আক্রান্ত হন বাবন দাস নামে ওই তৃণমূল কর্মী। হাঁসুলি দিয়ে তাঁর পেট ফালাফালা করে দেয় দুষ্কৃতীরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
এ দিকে, সিপিএমের যে কর্মীর বিরুদ্ধে বাবনকে খুনের অভিযোগ ওঠে, সেই সোমনাথ চক্রবর্তী ওরফে ছোটুর বাড়ি ও তাঁর গেঞ্জি কারখানায় আগুন লাগিয়ে দেয় কিছু লোক। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় দু’টি মোটর বাইক ও একটি গাড়িতে। ভাঙচুর হয় আরও কয়েকটা বাড়ি। পরিস্থিতি সামাল দিতে গভীর রাতে র্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স নামানো হয়। ঘটনাস্থলে আসেন পদস্থ পুলিশ কর্তারা।
ময়না-তদন্তের পরে এ দিন মিছিল করে মৃত কর্মীর দেহ নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়।
সঙ্গে ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়, সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বাণী সিংহরায়-সহ রাজ্য ও জেলা তৃণমূলের নেতারা। গোলমালের আশঙ্কায় আগে থেকেই বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত কোনও অশান্তি হয়নি। |
সিপিএম ‘পরিকল্পিত ভাবে’ সন্ত্রাস সৃষ্টি করে বাংলাকে অশান্ত করতে চাইছে বলে মন্তব্য করেন মুকুলবাবু। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাওড়া মর্গে এসে বাবনকে ফুলের মালা দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান তিনি। পরে সাংবাদিকদের বলেন, “দিল্লিতে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীকে মারধর ও হেনস্থা করায় রাজ্য জুড়ে যে প্রতিবাদ হচ্ছে, তেমনই একটা প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন বাবন। তখনই সিপিএমের লোকজন তাঁকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপায়। পরে হাসপাতালে তিনি মারা যান।” মুকুলবাবুর অভিযোগ, সিপিএম পরিকল্পিত ভাবে খুন-সন্ত্রাস করছে। সারা রাজ্যে অশান্তি তৈরি করতে চাইছে। কিন্তু তৃণমূল তা করতে দেবে না।
মুকুলবাবুর এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন হাওড়া জেলা সিপিএমের সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার। তিনি বলেন, “তৃণমূলের মিছিল নিয়ে এই খুনের কোনও যোগ নেই। তৃণমূল আমাদের একটি শহিদ বেদি ভেঙে দিয়ে সিপিএম কর্মীদের লক্ষ্য করে অশালীন ভাষায় কথা বলছিল। তখনই ঘটনাটা ঘটে। কিন্তু তারপরে আমাদের কর্মী ও নেতাদের বাড়িতে ক্রমাগত আক্রমণ করা হচ্ছে। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়।”
এ দিকে, ওই তৃণমুল কর্মীর খুনের ঘটনায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে ছোটু ছাড়াও আরও তিন যুবকের নামে পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে দীপঙ্কর নন্দী ও সুমন চক্রবর্তী নামে দু’জনকে বুধবারই গ্রেফতার করে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত ছোটু আর বাবাইয়ের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। |