সাঁওতাল পরগনার পুরভোটে অস্তিত্ব রক্ষা বাঙালির
কোথাও প্রথমবার খাতা খুলল। কোথাও জয়ের পাশাপাশি আসন সংখ্যাও বাড়ল। পুর ভোট গণনার শেষে ঝাড়খণ্ডের বাঙালি মহলে অনেক জায়গাতেই তাই খুশির হাওয়া। ঝাড়খণ্ডের আটটি পুরসভার ভোটের ফল বেরিয়েছে আজ। সেগুলি হল: রাঁচি, হাজারিবাগ, সরাইকিলা খরসঁওয়া, পাকুড়, দুমকা, রাজমহল, সাহেবগঞ্জ ও জামতারা। একমাত্র সাহেবগঞ্জ পুরসভাতেই কোনও আসন পাননি বাঙালিরা।
পুরভোটে সাঁওতাল পরগনার ফল অবশ্যই উৎসাহ ব্যঞ্জক ঝাড়খণ্ডের বাঙালিদের কাছে। দীর্ঘদিন ধরেই বাঙালি অধ্যুষিত জায়গা হওয়া সত্ত্বেও পুরবোর্ডগুলিতে বাঙালিরা তেমনভাবে জায়গা পাচ্ছিলেন না। সেই বদনাম এবার ঘুচল জামতারার মিহিজাম পুরসভায় এবং পাকুড় জেলার পাকুড় পুরসভায়। দু’টি জায়গাতেই খাতা খুললেন বাঙালিরা। মিহিজামে দু’টি এবং পাকুড়ে তিনটি আসন জিতেছেন বাঙালি প্রতিনিধিরা। রাজমহলে এ বার বাঙালি প্রতিনিধিদের আসন সংখ্যা এক থেকে বেড়ে দাঁড়াল তিনে। দুমকা পুরসভায় বাঙালিরা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কোনও পদে জিততে না পারলেও জয়ের ধারা অব্যহত রেখেছেন বাঙালি চেয়ারপার্সন অনিতা রক্ষিত। গত বারের পরে এ বারেও তিনি চেয়ারপার্সন হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দুমকায়।
আদিত্যপুর পুরসভায় বিজয়ী বাঙালি কাউন্সিলর অঞ্জু চট্টোপাধ্যায়। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী
সাঁওতাল পরগনার বাঙালি বিজেপি নেতা শিবলাল ষোষের কথায়, “দলের প্রতীক না থাকলেও ওইসব জয়ী প্রতিনিধিরা আমাদেরই কর্মী। কিন্তু এখানে লড়াইটা বাঙালির অস্তিত্বের। যে কারণে দুমকার বাঙালি কংগ্রেস চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে এখানে বিজেপির তরফ থেকে কোনও প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি। এই জয় বাঙালিদের লড়াইয়ের মঞ্চ তৈরি করল।” হাজারিবাগ পুরসভায় এতদিন বাঙালি প্রতিনিধি ছিলেন দু’জন। এ বার সেই সংখ্যা বেড়ে হল তিন। যাঁরা সেখান থেকে জিতেছেন তিন জনই মহিলা।
ব্যতিক্রম একমাত্র রাজধানী রাঁচি। যেখানে বাঙালিদের প্রতিনিধি প্রায় খুঁজেই পাওয়া যায়নি। সেখানে আগের বোর্ডেও একজনই বাঙালি প্রতিনিধি ছিলেন। এ বারেও বাঙালি প্রতিনিধির সংখ্যা কার্যত একেই আটকে থাকল। ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন এক বাঙালি মহিলা। তিনি ওই ওয়ার্ডেরই প্রাক্তন কাউন্সিলর মৃণাল গুহর স্ত্রী, সন্ধ্যা গুহ। ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় সন্ধ্যাদেবী প্রার্থী হন। ভোটকর্মীদের ভুলে তাঁর ভোট গণনা আজ শেষ হয়নি। কিন্তু তিনি সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন।
ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক তথা রাঁচির বাঙালি নেতা সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের কথায়, “আমরা নিজেরাও হতাশ। বাংলা মেলা, যুব মঞ্চ-সহ নানান ধরনের কাজকর্ম করা হচ্ছে। কিন্তু রাঁচির বাঙালিদের রাজনীতির দিকে আনা যাচ্ছে না। ভোটের দিন বাঙালি ভোটারদের যদি ঘর থেকে টেনে বার করতে হয় তবে তাঁরা আর ভোটে দাঁড়াবেন কী ভাবে। অথচ রাঁচি থেকে বাঙালি সাংসদ, বিধায়কও হয়েছেন। এ ভাবে নিজেদের রাজ্যে নিজেদেরই অধিকার কমছে বাঙালিদের।”
জামশেদপুর সংলগ্ন সরাইকিলা খরসঁওয়া জেলার আদিত্যপুর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডটি জিতেছেন এক বাঙালি মহিলা।

পুরসভায় বাঙালি
• মিহিজাম(জামতারা): ঝিমলি মজুমদার (ওয়ার্ড-১), শুভাশিস মজুমদার (৬)
• পাকুড়: গৌতম মুখোপাধ্যায় (১৩), জয়দেব দত্ত (১৪),রাজেশ মুখোপাধ্যায় (১৫)
• রাজমহল: গীতা বর্মণ (৬), দীপু হালদার (৭), স্বপ্না পোদ্দার (৯)
• হাজারিবাগ: কাজল মুখোপাধ্যায় (৬), নিবেদিতা রায় (২৪), সুদীপ্তা চট্টোপাধ্যায় (২৭)
• আদিত্যপুর: অঞ্জু চট্টোপাধ্যায় (১৩)
• দুমকা: অনিতা রক্ষিত (চেয়ার পার্সন)
• রাঁচি: সন্ধ্যা গুহ (১৩, গণনা অসম্পূর্ণ)


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.