মাস্টারমশাই হিসেবে অবসর নিলেন কয়েক দিন আগে। কিন্তু তাঁর অবদানকে কিছুতেই যেন ভুলতে পারছেন না ইলামবাজারের বাতিকার গ্রামের বাসিন্দারা। তাই বাতিকার গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক স্বপনকুমার ঘোষের অবসর গ্রহণে তাঁরা যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়লেন। গত ৬ এপ্রিল ভিড়ে ঠাসা স্বপনবাবুর বিদায় জানানোর অনুষ্ঠানে তাঁদের এমন অনুভূতিই ব্যক্ত করলেন।
বাতিকারের কাছে মুসলিম অধ্যুষিত ইক্ষুসাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপনবাবু খাতায় কলমে অবসর নিয়েছেন গত মাসের শেষ দিনে। ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ও বর্তমানে ওই স্কুলের পার্শ্বশিক্ষক নাজমুল আলম বলেন, “এই গ্রামের মেয়েরা আগে পড়াশুনা করতে চাইত না। কম বয়সেই তাদের বিয়ে হয়ে যেত। মাস্টারমশাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে মেয়েদের পড়াশোনার জন্য উৎসাহিত করতেন। বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে অভিভাবকদের বোঝাতেন।” তাঁর দাবি, “ফলে গ্রামের কোনও মেয়েই আর অশিক্ষিত নেই।” প্রাক্তন ছাত্রী রোকেয়া খাতুন, প্রাক্তন ছাত্র মুজাফ্ফর হোসেন, অভিভাবক শেখ আব্দুস সালামরাও এই কথা সমর্থন করেন।
১১ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে ২৩ বছঝর আগে ওই স্কুলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন স্বপনবাবু। এখন পাকা ভবন, শৌচাগার, পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়েছে। তাঁর কর্ম জীবনে তিনি একবার ৯ মাস ও আর একবার ১ বছর একাই স্কুল চালিয়েছিলেন। অবসর নেওয়ার পর বড্ড একা লাগার কথা বললেন তিনি। স্বপনবাবুর অনুভূতি, “মেয়েকে বিয়ে দিলে যেমন হয়, তেমনি এখন আমার অবস্থা। কোনও কারণে একদিন স্কুলে যেতে না পারলে ছাত্রছাত্রীদের মন খারাপ হত। পরদিন তারা আমার না আসার ব্যাপারে খোঁজ নিত।” |