মার্গারেট থ্যাচারের মৃত্যু ‘উদ্যাপন’ করতে শনিবার ট্রাফালগার স্কোয়ারে পার্টি করার পরিকল্পনা নিয়েছেন থ্যাচার-বিরোধীরা। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকের মাধ্যমে এই পার্টিতে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে সব ব্রিটেনবাসীকে।
ব্রিটেনের একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের মৃত্যুর পরেই তাঁর কঠোর সমালোচকেরা উল্লাসে মেতে উঠেছিলেন। এ বার এক ধাপ এগিয়ে দক্ষিণ লন্ডনের ব্রিক্সটন থেকে উত্তর ব্রিটেনের গ্লাসগো, লিভারপুল ইত্যাদি শহরের থ্যাচার-বিরোধীরা শনিবার এই পার্টির আয়োজন করে ফেলেছেন। লিভারপুলের বন্দর বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা হারিয়েছিলেন থ্যাচার। ট্রাফালগার স্কোয়ারের শনিবারের অনুষ্ঠান ছাড়াও লিভারপুলের বাসিন্দারা আলাদা করে এক ‘অন্ত্যেষ্টি-পার্টি’র আয়োজন করেছেন। আর একটি ফেসবুক পেজ-এ বলা হয়েছে, “থ্যাচারের মৃত্যু হয়েছে। এক গ্লাস দুধ দিয়ে সেই মৃত্যু উদ্যাপন করব।” থ্যাচারের বিভিন্ন বিতর্কিত নীতির মধ্যে অন্যতম ৭ থেকে ১১ বছরের পড়ুয়াদের জন্য বিনামূল্যে দুধ বন্ধ করে দেওয়া। সেই প্রসঙ্গেই এই ফেসবুক পেজ-এ লেখা হয়েছে, “এই মহিলার জন্যই আমাদের বাড়ন্ত হাড়গুলো ঠিক মতো পুষ্টি পায়নি।”
কিন্তু এত দিন পরেও থ্যাচারের বিরুদ্ধে কিছু ব্রিটিশের এত রাগ কেন? ‘লৌহমানবীর’ বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, আর্থিক সংস্কার করতে গিয়ে দেশকে ‘সমৃদ্ধ দক্ষিণ’ আর ‘গরিব উত্তর’ এই দু’ভাগে ভাগ করে দিয়েছেন তিনি। নিজের দলেও বিদ্রোহ এড়াতে পারেননি থ্যাচার। ১৯৯০ সালে তাঁর বসানো একটি করের বিরুদ্ধে দেশে দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনাস্থাও এনেছিলেন দলের বিরোধীরা। খনি শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখেও পড়েছিলেন আয়রন লেডি। ১৯৮১ সালের একটি জনমত সমীক্ষায় দেশের সর্বকালের সব চেয়ে অপছন্দের প্রধানমন্ত্রীর তকমা পেয়েছিলেন থ্যাচার। তাঁর মৃত্যুর পরেও যে সমালোচকেরা তাঁকে ক্ষমা করেননি, তাঁর মৃত্যু-উদ্যাপনের পরিকল্পনাই তার প্রমাণ। আগামী বুধবার থ্যাচারের অন্ত্যেষ্টি। সেন্ট পল্স ক্যাথিড্রালের সেই অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি আমন্ত্রিতের সংখ্যা দু’হাজারেরও বেশি। খরচ হবে ৮০ লক্ষ পাউন্ড, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৬৪ কোটি টাকা। খরচের এই বহর দেখে লেবার পার্টির বহু এম পি’র অভিযোগ, আর কোনও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর অন্ত্যেষ্টিতে তো এত টাকা খরচ হয়নি। তবে থ্যাচারের ক্ষেত্রে এত রমরমা কীসের! |