চট্টগ্রামে শেষযাত্রায় বিনোদবিহারী, অন্ত্যেষ্টি আজ
শুক্রবার চট্টগ্রামের অভয় মিত্র ঘাট শ্মশানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বিপ্লবী বিনোদবিহারী চৌধুরীর। গত কাল গভীর রাতে কলকাতার একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ফেলেন সূর্য সেনের এই সহযোগী। ১০৩ বছর বয়সেও তাঁর স্মৃতি ছিল সতেজ। আগামিকাল সকাল ১০টা ৪০-এর বিমানে বিনোদবিহারীর দেহ ঢাকায় পৌঁছবে। সেখানে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে কয়েক ঘণ্টা শায়িত থাকার পরে দেহ যাবে চট্টগ্রামে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সামরিক হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা হয়েছে। বিনোদবিহারীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশও করেছেন হাসিনা।
উদীচী সাংস্কৃতিক সংস্থার সভাপতি বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানি বলেন, বিনোদবিহারীর মৃত্যুতে ব্রিটিশ-বিরোধী লড়াইয়ের একটি অধ্যায়ের অবসান হল। অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের অভিযানে নামা মাস্টারদার দলের তিনি ছিলেন শেষ জীবিত সদস্য। দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশের মানুষের কাছে তিনি জনপ্রিয়। সরকারও সর্বোচ্চ স্বাধীনতা সম্মানে তাঁকে ভূষিত করেছেন। স্বাধীনতার পরেও নানা প্রতিবাদী আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছেন বিনোদবিহারী। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছেন।
লোহানি জানান, বিনোদবিহারীর দেহ বেলা দু’টো থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে রাখা হবে। সেখানে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদনের তোড়জোড় চলছে। চট্টগ্রামেও সূর্য সেনের মূর্তির সামনে ও শহিদ মিনারে দেহ কিছু ক্ষণ করে শায়িত থাকবে। সেখানেও দল বেঁধে এসে মানুষ শ্রদ্ধা জানাবেন বিনোদবিহারীকে। তার পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য হবে।
আজ সকালেই হাসপাতালে যান কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই-কমিশনার আবিদা ইসলাম। সেখানে তিনি বিনোদবিহারীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর পরিবারকে বলেন, বিপ্লবীর দেহ চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সব রকম ব্যবস্থা করা হবে। আনুষ্ঠানিকতার পর্ব মিটিয়ে হাসপাতাল ছাড়তে সন্ধ্যা হয়ে যায়। সাড়ে ছ’টায় বিনোদবিহারীর দেহ বারাসতের অরবিন্দ পল্লীতে তাঁর পূত্রবধূ উপালি চৌধুরীর বাড়িতে পৌঁছলে মানুষের ঢল নামে। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষেও শ্রদ্ধার ফুল নিবেদন করা হয়। আসেন বারাসতের পৌরপ্রধান সুনীল মুখোপাধ্যায় ও ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা সরল দেব।
বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু কিছু দিন আগেই হাসপাতালে গিয়ে দেখে এসেছিলেন অসুস্থ বিনোদবিহারীকে। তাঁর পুত্রবধূ জানান, এই বয়সেও তাঁর স্মৃতিশক্তি ছিল সতেজ। সাল তারিখ ধরে ঘটনার কথা বলে যেতে পারতেন। চলাফেরায় কেউ সাহায্য করলে পছন্দ করতেন না। বয়সের কারণে নানা অঙ্গ বিকল হওয়ায় বিনোদবিহারীকে কলকাতায় এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বুকের একটি ইনফেকশন ওষুধে বাগ না মানায় তিন দিন আগে তাঁর শরীরে একটি অস্ত্রোপচার করা হয়। সেই ধাক্কা তিনি আর সামলে উঠতে পারেননি।
তাঁর পৌত্র সোমশুভ্র চৌধুরী বলেন, অসাধারণ প্রাণশক্তি ছিল বিনোদবিহারীর। ক্রিকেট খেলা, বিশেষত সচিন তেন্ডুলকরের ব্যাটিং দেখতে তিনি ভীষণ ভালবাসতেন। সাম্প্রতিক ইনিংসগুলোয় সচিন রান না পাওয়ায় বিনোদবিহারী ভীষণ উদ্বিগ্ন ছিলেন। ঠাট্টা করে বলতেন, “সচিন ক্রিকেটের সম্রাট। তার খেলা দেখতে পাব বলেই বোধহয় এই একশো বছরের বেশি বেঁচে রয়েছি।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.