কিছু দিন আগেই বেআইনি ভাবে ২৬ ছাত্রকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আসানসোল পুরসভা পরিচালিত একটি স্কুলের বিরুদ্ধে। মহকুমাশাসক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের কাছে কারণ দর্শাতে বলে নোটিশও পাঠিয়েছিলেন। এ বার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের পাঠানো উত্তর নিয়ে ফের বিতর্ক দানা বেঁধেছে। শিক্ষা দফতরের মেয়র পারিষদ জানিয়েছেন, প্রয়োজনে ওই টিচার ইন চার্জের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আসানসোল পুরসভা পরিচালিত আগাবেগ মাধ্যমিক স্কুলের হিন্দি বিভাগের ২৬ ছাত্রকে নিয়ম বর্হিভূত ভাবে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়েছে অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধী কাউন্সিলরেরা। পুরসভার অধিবেশনে এ নিয়ে তুমুল হট্টগোলও হয়। বিরোধী নেতা তথা প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের তাপস রায়ের অভিযোগ, এই ছাত্ররা বহিরাগত, কেউই এই স্কুলে পড়েনি। কোনওদিন ক্লাসও করেনি। অভিযোগ ওঠার পরে মহকুমাশাসক শিল্পা গৌরী স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের কাছ থেকে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি ও শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য চেয়ে পাঠান। কিন্তু টিচার ইন চার্জ কমলেশ তিওয়ারি ওই তথ্যগুলি না পাঠানোয় কমিশনারের পরামর্শে মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় কমলেশবাবুকে কারণ দর্শাও নোটিশ পাঠান। গত সোমবার সেই নোটিশের উত্তর পাঠিয়েছেন কমলেশবাবু। তিনি লিখেছেন, ওই ২৬ জন ছাত্রের অভিভাবকেরা স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন যে পরীক্ষায় ভাল ফল করার জন্য তারা বাড়িতেই মন দিয়ে পড়াশোনা করবে। স্কুলে আসতে পারবে না। তাদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত না থাকার অনুমতি দেওয়া হোক। কমলেশবাবু আরও জানান, শিক্ষা দফতরের মেয়র পারিষদ গোলাম সরওয়ারের নির্দেশেই ওই ২৬ ছাত্রকে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত না থাকার অনুমতি দেন তিনি। কমলেশবাবু বলেন, “আমি যা করেছি তা মেয়র পারিষদ গোলাম সরওয়ারের নির্দেশেই করেছি।”
কমলেশবাবুর এই উত্তরের পরেই নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী যারা মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে তাদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতির হার শতকরা ৭০ ভাগ হতে হবে। আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক অজিত হাজরা বলেন, “শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত না থাকলে ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে পারে না। আগাবেগ স্কুলে যে ঘটনা ঘটেছে তা অন্যায় ও নিয়ম বহির্ভূত।”
তা হলে মেয়র পারিষদ এমন নির্দেশ দিলেন কী ভাবে? এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে গোলাম সওয়ার অনুমতি দেওয়ার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, এ রকম কোনও নির্দেশ দেওয়ার হলে তিনি নিশ্চয় তা লিখিত ভাবে দেবেন। টিচার ইন চার্জ নিশ্চয় মুখের কথায় পর্ষদের নিয়ম ভেঙে কোনও কাজ করবেন না। গোলামবাবু বলেন, “ওই টিচার ইন চার্জ যা করেছেন তা অন্যায়। আমি তাঁকে কোনও নির্দেশ দিইনি। তাঁর পাঠানো উত্তর এখনও আমার হাতে আসেনি। প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।” |