দু’ঘণ্টা পড়ে রইলেন ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে
অক্সিজেন ছাড়াই নাকে নল প্রৌঢ়ার
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক প্রৌঢ়াকে প্রায় দু’ঘণ্টা খালি অক্সিজেন সিলিন্ডারের নল নাকে গুঁজে ফেলে রাখা হল। রোগিণীর পরিজনেরা বিষয়টি সুপারকে জানানোয় কর্তব্যরত নার্সরা উল্টে হুমকি দেন বলেও অভিযোগ।
মঙ্গলবার বিকেলে অসুস্থ মাকে নিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে এসে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে রঞ্জন গিরির। বুধবার হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপ কাঁড়ার-কে লিখিত অভিযোগে রঞ্জনবাবু জানান, অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাঁর মায়ের জীবন সংশয়ের আশঙ্কা করছেন তিনি। একই সঙ্গে রঞ্জনবাবুর প্রশ্ন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ঝাড়গ্রাম হাসপাতাল জেলা হাসপাতালে উন্নীত হয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন এই গালিফতি ও অব্যবস্থা?” ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপবাবু বলেন, “নার্সদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওই মহিলা এখন ভাল আছেন। আমি নিজেও নিয়মিত খোঁজ রাখছি।”
হাসপাতালে গঙ্গা গিরি। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
ঝাড়গ্রামের সুভাষপল্লির বাসিন্দা রঞ্জনবাবু পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁর মা গঙ্গাদেবী হৃদরোগী। মঙ্গলবার তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গাদেবীকে। কর্তব্যরত চিকিৎসক অবিলম্বে অক্সিজেন দিতে বলেন। ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয় বছর বাহান্নর ওই প্রৌঢ়াকে। রঞ্জনবাবু বলেন, “এক জন আয়া মায়ের নাকে অক্সিজেনের নল পরিয়ে দেন। কিন্তু তারপরেও শ্বাসকষ্ট কমেনি।” এই সময় কর্তব্যরত দুই নার্সের কাছে যান রঞ্জনবাবু। কিন্তু তাঁরাও গুরুত্ব দেননি। শুধু বলেন, ‘ডাক্তারবাবু ঠিক এসে দেখবেন’। এরপর নিজেই মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক দেবার্ঘ্য মণ্ডলের কাছে যান রঞ্জনবাবু। কিন্তু ওই চিকিৎসক বলেন, ‘ওয়ার্ড থেকে ডাকলে আমি যাব।’ ইতিমধ্যে রঞ্জনবাবুর মামাতো বোন মহুয়া ঝাঁ দেখেন, গঙ্গাদেবীর নাকে লাগানো নল থেকে অক্সিজেন বেরোচ্ছে না। মহুয়াদেবীর কথায়, “আমি নার্সদের সঙ্গে কথা বলি। ওরা দেখে বলেন, বড্ড ভুল হয়ে গিয়েছে, সিলিন্ডারে অক্সিজেন ছিল না।”
এরপর ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপবাবুকে সব জানান রঞ্জনবাবু। সুদীপবাবু ওয়ার্ডে আসেন। দু’জন নার্সকে ধমকও দেন। সুপারের হস্তক্ষেপে গঙ্গাদেবীর চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু সুপার যেতেই বেলা মাইতি ও আলো পাত্র নামে ওই দুই নার্স হম্বিতম্বি শুরু করেন বলে অভিযোগ। রঞ্জনবাবুর দাবি, “ওঁরা দু’জন রীতিমতো হুমকি দেন। বলেন, আন্দোলন করলেই কি আপনার মা সুস্থ হয়ে যাবেন? এরপরই লিখিত ভাবে সুপারের কাছে অভিযোগ জানাই।”
অভিযুক্ত বেলাদেবী কথা বলতে চাননি। তবে আলোদেবী বলেন, “সিলিন্ডারটি একেবারে খালি ছিল না। কিছুটা অক্সিজেন ছিল। সেটা শেষ হয়ে যেতেই রোগিণীর পরিজনেরা অশান্তি শুরু করে দেন। সুপারকে ডেকে আনেন। তবে সুপার চলে যাওয়ার পর আমরা কোনও হুমকি দিইনি।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য রঞ্জনবাবুর অভিযোগ গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত সিএমওএইচ ত্রিদীপ দাস বলেন, “কমিটি গড়ে গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.