শুরুটা হয়েছিল মঙ্গলবার। দিল্লিতে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে নিগ্রহের প্রতিবাদে বুধবারও দুই ২৪ পরগনার নানা এলাকায় সিপিএম কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে হাড়োয়ার গোপালপুর-২ পঞ্চায়েতের পাশে সিপিএম কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার বসিরহাটের টাউন হল এলাকায় সিপিএমের এক নম্বর সদর দফতরেও ভাঙচুর করা হয়। তৃণমূল সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখান হিঙ্গলগঞ্জ কলেজে। বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় রাস্তা ও ট্রেন অবরোধ করে তৃণমূল সমর্থকেরা। |
বনগাঁ এবং হাবরা শহরে এ দিন বিকেলে এসএফআই নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল করে তৃণমূল। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “ঋতব্রত ও ওই সংগঠনের আর এক নেতা শতরূপ ঘোষ উত্তর ২৪ পরগনায় ঢুকলে মানুষ তাদের ধাওয়া করবে। তার দায় তৃণমূলের থাকবে না। এই দু’জন এবং যারা এদের মদত দিয়েছে, তাদের গ্রেফতারের দাবিতে জেলা জুড়ে আন্দোলন চলবে।”
এ দিন বিকেলে কাকদ্বীপ বাজারে অক্ষয়নগর গ্রামের বাসিন্দা জয়দেব দাস নামে এক সিপিএম সমর্থককে মারধর ও ন্যাড়া করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তাঁর দোকানে লুঠপাটও চালানো হয়। কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “অভিযুক্তেরা দলের কেউ নয়। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কয়েক জন ওটা করেছে।” সিপিএমের জোনাল সম্পাদক রাম দাস বলেন, “তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে।”
বাসন্তীর শিমুলতলা হাসপাতাল মোড়ে এ দিন সিপিএমের একটি দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যায় তৃণমূল প্রতিবাদ-মিছিল করে ওই এলাকায়। মিছিলকারীদের কয়েক জন আচমকা সিপিএমের ওই কার্যালয়ে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে আসে বাসন্তী থানার পুলিশ। পুলিশ ও সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। |
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মান্নান শেখ বলেন, “ওই পার্টি অফিস এমনিই পড়েছিল। কী ভাবে আগুন লাগল বলতে পারব না। ঘটনার সঙ্গে আমাদের দল কোনও ভাবে যুক্ত নয়।” বাসন্তীর আরএসপির বিধায়ক সুভাষ নস্কর বলেন, “দিল্লিতে যা হয়েছে, আমরা বামফ্রন্টগত ভাবে তার তীব্র নিন্দা করি। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দলীয় কর্মীদের শান্ত থাকতে বলেছিলেন। তার পরেও এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”
মঙ্গলবার রাতে ক্যানিংয়ের গোলাবাড়ি এলাকায় আলাউদ্দিন সর্দার নামে এক সিপিএম কর্মীকে মারধর ও তাঁর দোকানে ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। ডায়মন্ড হারবারের রামনগর কলাতলাহাটেও সিপিএমের একটি কার্যালয়েও ভাঙচুর চালানো হয়।
|
বৃহস্পতিবার পার্থসারথি নন্দী ও নির্মল বসুর তোলা ছবি। |