আসন রফা হল না
বিমানের সামনেই শরিকি কাজিয়া
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর সামনেই সিপিএমের ‘জমিদারি’র প্রতিবাদে সরব হল ফ্রন্ট শরিকরা। শনিবার রাতে কোচবিহারে জেলা সিপিএম দফতরে পঞ্চায়েত ভোটে আসন রফা নিয়ে বামফ্রন্টের বৈঠকে জেলার সিপিএম, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি নেতৃত্ব এতটাই বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন যে, আসন রফা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। ১৩ এপ্রিল ফের বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার জন্য জেলার বাম নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছেন বিমানবাবু। কিন্তু ওই দিনও যে এ দিনের বিবাদের পুনরাবৃত্তি হবে না, তার নিশ্চয়তা নেই। যদিও বৈঠকের পরে বিমানবাবু বলেন, “ফ্রন্টের ফর্মুলা মেনে আসন রফা হবে। সার্বিক ঐক্যের কাজ অনেকটা এগনো সম্ভব হয়েছে। খুচখাচ কিছু সমস্যা আছে। ১৩ এপ্রিল বৈঠকে মিটে যাবে।” তবে রবিবার দিনহাটায় বামফ্রন্টের কর্মিসভায় ফ ব জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহর বক্তব্যে শরিকি বোঝাপড়ার ইঙ্গিত মেলেনি।
২০০৮ সালের মতো এ বার পঞ্চায়েত ভোটে যাতে বামেদের মধ্যে বিবাদ না হয়, তার জন্য বিমানবাবুর নির্দেশ, শরিকদের প্রতি সিপিএমকে উদার হতে হবে। তার পরেও তাঁরই সামনে কোচবিহারে ফ্রন্টের ওই কোন্দল জেলার বাম নেতৃত্বকে চিন্তায় ফেলেছে।
দিনহাটায় বিমান বসু।—নিজস্ব চিত্র।
কোচবিহার ফ ব-র শক্ত ঘাঁটি। তাই শনিবারের বৈঠকে তারাই সবচেয়ে বেশি সরব হয়। বামফ্রন্টের নেতা কে, ফ্রন্ট চেয়ারম্যানের সামনে উদয়নবাবুর তোলা ওই প্রশ্ন ঘিরে হইচই হয়। বৈঠকে জেলা পরিষদের ৩৩টি আসনের মধ্যে ১২টি দাবি করে ফ ব। গত বার তারা ৯টি আসন পেয়েছিল। এ বার তাদের আরও তিনটি আসনের দাবি নিয়ে সিপিএমের সঙ্গে বিবাদ বাধে। সিপিএমের বক্তব্য, গত পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদে ২৯টি আসন ছিল। এ বার যে চারটি আসন বেড়েছে, তার মধ্যে তিনটি সিপিএমের এবং একটি ফ ব-র সংগঠিত এলাকার। তাই ফ ব-কে ১০টির বেশি আসন দেওয়া যাবে না। বিমানবাবু দুই দলের নেতৃত্বকে আলোচনায় বসে সমস্যা মেটাতে বলেন। আরএসপি নাজিরহাট ও পুণ্ডিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে দু’টি অতিরিক্ত আসন দাবি করলে ফ্রন্টের বিবাদ আরও বাড়ে। কোনও শরিক দল ৫টি ভোট পেলে তাকে আসন ছাড়তে হবে কি না, এই প্রশ্ন তোলে সিপিএম। আরএসপি নেতারা বিমানবাবুকে বলেন, এত তুচ্ছ করে দেখার কিছু নেই। বিভিন্ন আসনে পাঁচটি ভোটও ফ্যাক্টর হতে পারে। সব মিলিয়ে বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত সম্ভব হয়নি।
এ দিন দিনহাটার বৈঠকে উদয়নবাবু অভিযোগ করেন, ‘সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতা’র জন্য গ্রামেগঞ্জে এখনও ঐক্যবদ্ধ সভা করা যাচ্ছে না। সিপিএমের নাম না করে উদয়নবাবুর কটাক্ষ, নিজের জমিদারিতে অন্য কাউকে জায়গা দেব না এই ভাবনার জন্য দূরত্ব বেড়েছে। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের প্রসঙ্গ টেনে তিনি জানান, পরস্পরকে জব্দ করতে গিয়ে দিনহাটায় জেলা পরিষদের দু’টি আসন হাত ছাড়া হয়েছে। দিনহাটা থেকে তৃণমূল উত্তরবঙ্গের প্রথম বিধায়ক পায়। পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। দিনহাটায় বিমানবাবু শনিবার ফ ব-র তোলা প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, জেলা বামফ্রন্টের সভায় উদয়ন বলেছেন, সবাই দলের নেতা। বামফ্রন্টের নেতা কে? বিমানবাবুর বক্তব্য, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁকে গঞ্জনা সহ্য করতে হয়। অনেকে বলেন বিমানদার দু’টি পার্টি। একটি সিপিএম, অন্যটি বামফ্রন্ট। কিন্তু জেলার শরিক দলের নেতারা বলতে পারবেন না, কখনও বাম ঐক্যকে তিনি লঘু করে দেখেছেন। এ দিন বিমানবাবু আত্মসমালোচনার ভঙ্গিতে জানিয়েছেন, বাম ঐক্য অক্ষুণ্ণ রাখার প্রয়োজন সব শরিক দলের নেতা সমান ভাবে উপলব্ধি করেন না। এটা দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সার্বিক বাম ঐক্য গড়ে তোলা জরুরি জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৮ সালের ফল মনে না রেখে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়তে হবে। এ দিন তুফানগঞ্জেও বামফ্রন্টের কর্মিসভায় বক্তৃতা করেন বিমানবাবু।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.