পরিকাঠামো নেই, স্বাস্থ্যকেন্দ্র বেহাল
হির্বিভাগের সামনে রোগীদের লম্বা লাইন। সেই লাইনের সামনে চিকিৎসকের পাশে বসে নির্বিকার মুখে রোগী দেখছেন ইসিজি টেকনিসিয়ান আর ফার্মাসিস্ট। নদিয়ার বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা দরিদ্র মানুষগুলো কিন্তু তাঁদের ‘পাশ করা’ চিকিৎসক বলেই জানেন। প্রতিদিন এমনই দৃশ্যের দেখা মেলে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শয্যা সংখ্যা ২৫টি। কিন্তু গড়ে রোগী থাকেন ৫০ থেকে ৬০ জনের মতো। গরমে সংখ্যাটা আরও বাড়ে। বহির্বিভাগে গরমে কোনও কোনও দিন রোগীর সংখ্যা বারোশো ছাড়ায়। সপ্তাহে দু’দিন ‘লাইগেশন’ বা ‘বন্ধ্যাত্বকরণ’ কর্মসূচি থাকে। এ ছাড়াও মাসে অন্তত একদিন গ্রাম পঞ্চায়েতের হেড কোয়ার্টার সাবসেন্টারগুলিতে একজন করে চিকিৎসককে নিয়ে রোগী দেখার ব্যবস্থা করতে হয়। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা মাত্র চার। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, ২৫টি শয্যার জন্য নূন্যতম ৬ জন চিকিৎসক থাকার কথা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, দিন দিন রোগীর চাপ ক্রমশ বাড়ছে অথচ চিকিৎসকের সংখ্যা মাত্র চার জন হওয়ায় সব দিক সামলে বহির্বিভাগে একজনের বেশি থাকতে পারেন না। অথচ একজন ডাক্তারবাবুর পক্ষে বহির্বিভাগের বিপুল রোগীর চাপ সামলানো কার্যত অসম্ভব। তাই টুকিটাকি রোগের চিকিৎসা করেন ইসিজি টেকনিসিয়ান ও ফার্মাসিস্ট। আগে এই হাসপাতালের চিকিৎসক সংখ্যা ছিল ৬ জন। মাস দুয়েক আগে বদলি হন সুপার। চাকরি ছাড়েন আরেক চিকিৎসক। ফলে শেষমেশ সাবসেন্টারগুলোতে চিকিৎসক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সুপার কমলেশ বিশাল বলেন, “ডাক্তারের সংখ্যা বাড়ানো দরকার। না হলে গরমে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হবে।”
শুধু চিকিৎসক সংকটই নয়, আরও নানা সমস্যায় জর্জরিত এই হাসপাতাল। চাপড়া এলাকায় জনসংখ্যা প্রায় তিন লক্ষ। এলাকার বাসিন্দা প্রদ্যুৎ মণ্ডল বলেন, “বিশাল সংখ্যক মানুষ এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। অথচ বেহাল দশা হাসপাতালের। পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ।” এক্সরে মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে প্রায় ৫ বছর ধরে। ফলে আঙুলে সামান্য চোটেই কিংবা রেফার করা হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। একমাত্র স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ছাড়া হাসপাতালে আর কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ঝা-চকচকে অপারেশন থিয়েটার থাকলেও যন্ত্রপাতি আর অ্যানাস্থেসিস্টের অভাবে হয় না অপারেশন। হাসপাতালের কর্মীরাই জানিয়েছেন, অপারেশন থিয়েটারের জন্য কিছু যন্ত্রপাতি কেনা হলেও সে সব সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে। রুগ্ণ চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালের বেহাল দশা ঘোচাতে উদাসীন স্বাস্থ্য দফতর।
রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তৃণমূল বিধায়ক রুকবানুর রহমান বলেন, “চিকিৎসক কম। চিকিৎসক সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি অন্যান্য পরিষেবা চালু করতে চেষ্টা করছি।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত হালদার বলেন, “ফার্মাসিস্ট রোগী দেখেন বলে আমার জানা নেই। চিকিৎসক কম রয়েছে। নতুন চিকিৎসক নিয়োগের কথা ভাবা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.