শেষ চৈত্রেই তাপপ্রবাহের চোখরাঙানি পাঁচ জেলায়
বে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ কাটল। এপ্রিল যে নিষ্ঠুরতম মাস, মালুম হচ্ছে এর মধ্যেই। কারণ চৈত্র শেষের মুখেই তাপপ্রবাহের কবলে পড়তে চলেছে দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচটি জেলা। কলকাতা মহানগর এলাকায় আপাতত তেমন আশঙ্কা নেই। তবে আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, আগামী কয়েক দিনে দূরের জেলার সঙ্গে সঙ্গে আরও তাপমাত্রা বাড়বে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকাতেও। দিল্লি, রাজস্থানের মতো শুকনো আবহাওয়া চলবে সুজলা বাংলায়।
কয়েক দিন ধরেই পারদ ঊর্ধ্বমুখী। দুপুরের দিকে বাতাসের গনগনে আঁচ দুঃসহ হয়ে উঠছে। জেলায় জেলায় দেখা যাচ্ছে রৌদ্রের রুদ্ররূপ। সেটাই তাপপ্রবাহ ডেকে আনতে চলেছে বলে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি হলে আবহবিজ্ঞানের পরিভাষায় সেটাকে বলে তাপপ্রবাহ। বিভিন্ন জেলায় সেই পরিস্থিতির আগুনে-আভাস মিলতে শুরু করলেও মহানগর ও সংলগ্ন এলাকায় এখনই তেমন আশঙ্কা নেই। রবিবার মহানগরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি বেশি। উপগ্রহ-চিত্রে মেঘ দেখা যায়নি। হাওয়া অফিস বলছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় মেঘের দেখা মিলবে না। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করবে ৩৯-৪০ ডিগ্রির আশেপাশে।
গরমটাও বিচিত্র। পোড়াচ্ছে, কিন্তু দরদরিয়ে ঘাম ঝরাচ্ছে না এখনও। কেন? হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে স্বাভাবিক পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকছে না। সেই জন্যই গরমের চেনা প্যাচপেচে আবহাওয়াটা মিলছে না। চৈত্রের শুরু থেকে অবশ্য গরমের এমন শুষ্ক চোখরাঙানি দেখা যায়নি। বরং রাতের দিকে ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব মালুম হচ্ছিল। কিন্তু চৈত্রের মাঝবরাবর পারদ চড়তে শুরু করে দ্রুত। আবহবিদেরা বলছেন, পারদের সেই শনৈ শনৈ ঊর্ধ্বগতির ধাক্কায় চৈত্র শেষের আগেই তাপপ্রবাহের কবলে পড়তে চলেছে পশ্চিমাঞ্চল। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন বলেন, “আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, বর্ধমান ও পশ্চিম মেদিনীপুরে তাপপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।”
আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনা অবশ্য নতুন কিছু নয়। শীত বা বসন্ত, ভোলবদলের খেলায় এ বার আবহবিদদের দফায় দফায় বিস্মিত করেছে আবহাওয়া। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে উত্তুরে হাওয়া ভেল্কি দেখিয়েছিল। দক্ষিণবঙ্গ একাধিক বার শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছিল। কখনও বা হঠাৎ তৈরি হওয়া নিম্নচাপ অক্ষরেখার প্রভাবে বসন্তের সকালে হাজির হয়েছিল বর্ষার মেজাজ।
তা হলে কি গ্রীষ্মেও আবহাওয়ার এই তুঘলকি মেজাজই দেখা যাবে?
চৈত্রের শেষ পর্বে রোদের যা রোষ দেখা যাচ্ছে, তাতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বার গরমের মেজাজ একটু বেশিই চড়া থাকবে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা। তাঁদের মতে, এপ্রিলের গোড়ায় তাপপ্রবাহের আবহই তার প্রমাণ। এখনও যে কালবৈশাখীর দেখা নেই, সেটাও আবহাওয়ার খামখেয়াল। তাঁরা বলছেন, গরমে রেহাই পেতে কালবৈশাখী দরকার। সাধারণত মার্চের দ্বিতীয় ভাগ থেকেই তার দেখা মেলে। কিন্তু চলতি মরসুমে এখনও কালবৈশাখী আসেনি। এই পরিস্থিতির কারণ লুকিয়ে রয়েছে সুদূর ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে। হাওয়া অফিস বলছে, ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় বায়ুপ্রবাহের পরিবর্তনের ফলে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেও একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা হাজির হচ্ছে কাশ্মীরে। আজ, সোমবারেও একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা হাজির হতে চলেছে বলে জানায় দিল্লির মৌসম ভবন। আর এই পশ্চিমী ঝঞ্ঝাই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কালবৈশাখীর। কী ভাবে?
আবহাওয়া দফতরের এক আবহবিদ জানান, কালবৈশাখীর জন্য সাগরে একটি উচ্চচাপ ও স্থলভূমিতে একটি শক্তিশালী নিম্নচাপ অক্ষরেখার প্রয়োজন। কিন্তু পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জন্য উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে ঠান্ডার রেশ কাটছে না। তার প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে শক্তিশালী উচ্চচাপ বলয় তৈরি হতে পারছে না। দেখা মিলছে না কালবৈশাখীরও। রবিবার পর্যন্ত তেমন পরিস্থিতি তৈরিই হয়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.