ইস্টবেঙ্গল এখনও আই লিগে চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য লড়াই চালাচ্ছে, কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়েও এগিয়ে রয়েছে। এ সবের মাঝেই ইস্টবেঙ্গল ছাড়া নিয়ে নস্ট্যালজিক ট্রেভর মর্গ্যান!
রবিবার অনুশীলনের পর ক্লাব তাঁবুতে দাঁড়িয়েই বলছিলেন ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার পর তিনি কী কী মিস করবেন, “আমার ছেলেদের মিস করব, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। একই সঙ্গে কলকাতার ফুটবল আবেগ, এখানকার সমর্থকদের উচ্ছ্বাস, ডার্বি ম্যাচ- সব খুব মিস করব।”
পরের মরসুমের জন্য অন্য ক্লাবে কথা বলার শাস্তি হিসেবে যখন মোহনবাগান ফুটবলারদের দল থেকে বাদ পড়তে হচ্ছে, তখন মর্গ্যান নিজেই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে মরসুমের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। স্বভাবতই সমর্থকদের মনে আশঙ্কার মেঘ, কোচের সিদ্ধান্তের প্রভাব মাঠের খেলায় পড়বে না তো!
এ দিকে ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার কারণ হিসেবে মর্গ্যান যতই পরিবারকে মিস করার কথা বলুন, লাল-হলুদ তাঁবুতে কান পাতলে অবশ্য অন্য গল্প শোনা যাচ্ছে। লাল-হলুদের কিছু কর্তার সঙ্গে কোচের মনোমালিন্য আর ড্রেসিংরুমের ভেতর বেশ কিছু ফুটবলারের কোচের প্রতি অসন্তোষ-- এ সব কারণেই নাকি অভিমানী মর্গ্যান ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফুটবলার তো বলেই দিলেন, “কোচ আমাদের পাশে সব সময় থেকেছেন। তবু আমাদের মধ্যেই অনেকে কোচের বিরুদ্ধে নানা কথা বলছে। এটা দুঃখজনক।”
মর্গ্যানের ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার সিদ্ধান্তে লাল-হলুদের অধিকাংশ ফুটবলারই মর্মাহত। মেহতাব হোসেন যেমন বললেন, “মর্গ্যানকে খুব মিস করব। তবে কোচ যদি নিজের পরিবারকে মিস করেন, তবে আমরা আটকাব কী ভাবে?” চিডি আবার বলছিলেন, “মর্গ্যান খুব ভাল কোচ। ওর জন্যই আমরা আজ সফল।”
মর্গ্যানের ক্লাব ছাড়ার প্রসঙ্গে অবশ্য দ্বিধাবিভক্ত লাল-হলুদ কর্তারা। সচিব কল্যাণ মজুমদার যখন বলছেন, “মর্গ্যান আসার আগেও ইস্টবেঙ্গল আরও বড় বড় সাফল্য পেয়েছে। ও চলে গেলেও কোনও সমস্যা হবে না।” তখন ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য বলে দিলেন, “মঙ্গলবার ম্যাচের পর কোচের সঙ্গে কথা বলব। আটকানোর চেষ্টা করব।”
সাহেব কোচকে সামনে রেখেই পরের মরসুমে দল তৈরি করতে চেয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। মর্গ্যান যা স্বীকার করে নিয়েছেন। ভিয়েতনামে এএফসি কাপের ম্যাচ খেলতে যাওয়ার আগে নাকি মর্গ্যানের সঙ্গে নতুন মরসুমের দল নিয়ে আলোচনা করতে বসেছিলেন কর্তারা। মর্গ্যান বলছিলেন, “সে সময়ই ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা ক্লাব-কর্তাদের জানিয়েছিলাম।” |