মোহনবাগান-৫ (ওডাফা-পেনাল্টি-সহ হ্যাটট্রিক, টোলগে-২)
স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া-১ (কালু-পেনাল্টি)
|
খোঁচা খাওয়া বাঘ? না কি নিজেদেরই পাতা ফাঁদে ঘায়েল স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া?
বাগান গোলকিপার শিল্টন বলছেন, “দুটোই। আমাদের গরমে কাবু করার পরিকল্পনা ছিল ওদের। কিন্তু মাঠে আমরা বাঘের মতোই খেলে জবাব দিলাম।”
মাপুসার মাঠে শেষ ছয় ম্যাচে হারেনি স্পোর্টিং। সেখানে করিমের মোহনবাগান নির্বাসনের ফাঁড়া কাটিয়ে ফেরার পর এই মাঠেই একতরফা ভাবে হেরেছিল সালগাওকরের কাছে। উলটে কার্ড সমস্যায় এই ম্যাচে ছিলেন না গত ফেব্রুয়ারি থেকে বাগান রক্ষণে হঠাৎই ‘প্রাচীর’ হয়ে ওটা নাইজিরীয় স্টপার ইচে। কিন্তু নব্বই মিনিটের লড়াইতে স্পোর্টিংয়ের নবাগত স্প্যানিশ কোচ একদম ১-৫ ‘ভোকাট্টা’। প্রথম পর্বের মতোই ফের হ্যাটট্রিক ওডাফার, সঙ্গে টোলগের জোড়া গোল। বাগান সমর্থকদের আদরের ‘টো-ফা’ জুটি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ‘জোর কা ঝটকা’ দিয়ে এনে দিলেন অমূল্য তিন পয়েন্ট। ১৯ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে একদম তলায় থাকা সিকিমের আগে চলে এল মোহনবাগান। অবনমন বাঁচানোর পালে লাগল আত্মবিশ্বাসের দমকা বাতাস। গোটা মরসুম ফিকে হয়ে থাকা ‘টো-ফা’ জুটি সবুজ-মেরুন আক্রমণভাগে ছড়িয়ে দিলেন গোলের ঝলমলে বর্ণালি। বে-নি-আ-স-হ-ক-লা। |
|
|
ওডাফা-টোলগে। শেষ লগ্নে ঝলমলে। |
|
তিরিশ বছর আগে ঝড় তুলেছিল জিতেন্দ্রর ছবি ‘হিম্মতওয়ালা’। রবিবার ছিল সেই জিতেন্দ্রর জন্মদিন। যিনি আবার নবির ছোটবেলার হিরো। গোয়ার মাঠে গিয়ে গোয়ার দলকে এত অব্যবস্থার মাঝেও পাঁচ গোল দিয়ে ফেরার পথে বাগানের ‘হিম্মতওয়ালা’-টি কে? জবাবে গোয়া থেকে হাসতে হাসতে নবির উত্তর, “দলের সবাই। বিশেষ করে কোচ।” মরসুমে পঞ্চম হ্যাটট্রিক করা ওডাফাও বলছেন, “হ্যাটট্রিকের চেয়েও বড় পাওনা তিন পয়েন্ট। কৃতিত্ব ঈশ্বর আর কোচের।”
আর সেই বাগান কোচ করিম বলছেন, “জানতাম ওদের আসল লোক কালু। ওকে মার্ক করার দায়িত্ব পেয়ে সফল সাবিথ ।”
সবুজ-মেরুন কোচ দল সাজিয়েছিলেন স্টপারে নির্মল-আইবরকে রেখে। আক্রমণে যাওয়ার সময় ‘টো-ফা’-র সঙ্গী হলেন কেরলের সাবিথ। বাগান তখন ৪-৩-৩। কিন্তু স্পোর্টিং আক্রমণে উঠলেই কালুর গায়ে ছায়ার মতো সেঁটে যাচ্ছিলেন বাগানের ওই মালয়ালি। বাগান তখন ৪-৪-২। একেই জোসেফ পেরিরাদের দলে ছিলেন না দুই নির্ভরযোগ্য ফুটবলার শ্যামানন্দ এবং আদিল খান। উলটে ৩৯ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে বাইরে চলে গেলেন স্ট্রাইকার ডসন। এতেই ঝাঁঝ কমে অস্কার ব্রুজনের ছেলেদের।
প্রথমার্ধ গোলশূন্য দেখে দ্বিতীয়ার্ধে গুলি খাওয়া বাঘের মতোই মরিয়া হলেন টোলগেরা। রাইট ব্যাক নবি চার জনকে কাটিয়ে যে সেন্টার তুলেছিলেন তা ম্যাথু গঞ্জালেজের হাতে লাগলে পেনাল্টি থেকে গোল ওডাফার। বাগান অধিনায়কের পাস থেকেই গোল টোলগের। কিন্তু দু’গোল খেয়েই ফের ছন্দপতন বাগান রক্ষণের। বক্সে স্পোর্টিংয়ের মার্টিন্সকে ট্যাকল করেছিলেন নির্মল। কিন্তু তা বিধিসম্মত না হওয়ায় রেফারি এ শেখর পেনাল্টি দিতেই ব্যবধান কমান কালু। বাকি দশ মিনিটে বাগানের হল তিন গোল। ওডাফা করলেন আরও দুটি। আর গোলকিপারকে কাটিয়ে জালে বল পাঠালেন টোলগে। হোটেলে ফিরে ফোনে বাগানের অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার বলেও বসলেন, “গোল আসছে। দলও জিতছে। আমরা এখন হ্যাপি ফ্যামিলি।” বুধবার কল্যাণীতে তাঁর দলের সামনে মুম্বই এফসি। ওই ম্যাচ জিতলে অবনমনের ভূত ঘাড় থেকে অনেকটাই নেমে যাবে বলে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে গঙ্গা পাড়ের তাঁবুতে। |
মোহনবাগান: শিল্টন, নবি, আইবর, নির্মল, বিশ্বজিৎ, ডেনসন, মণীশ মৈথানি (স্নেহাশিস), কুইনটন, সাবিথ (লালরিনফেলা), টোলগে (বিজেন্দ্র), ওডাফা। |