আইপিএলের প্রথম সপ্তাহটা এখনও শেষ হয়নি, অথচ নাটক বেশ জমে উঠেছে। কোথাও ফেভারিটরা হারছে, তো কোথাও চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স দেখছি।
রবিবারই যেমন পুণে-পঞ্জাব ম্যাচ দেখতে গিয়ে চমকে উঠলাম। কাগজে কলমে পুণে এ বার দারুণ শক্তিশালী দল। অথচ পর পর দুটো ম্যাচ হারল কী জঘন্য ভাবে। সব দেখে মনে হচ্ছে, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক পুরো ব্যাপারটা ঘেঁটে ফেলেছে। থিঙ্ক ট্যাঙ্কের মধ্যে কিন্তু আমি পুণের ক্যাপ্টেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজকেও রাখছি। পেপসি আইপিএলের বাকি টিমগুলোর দিকে একবার তাকিয়ে দেখুন। ক্যাপ্টেনদের নাম হল: ধোনি, গম্ভীর, পন্টিং, সঙ্গকারা, জয়বর্ধনে, গিলক্রিস্ট। এরা সবাই সুপারস্টার। এদের কারও টিমের উপর কর্তৃত্ব করতে সমস্যা হয় না। গত বার পুণেতে সৌরভ অধিনায়ক ছিল। ওরও সমস্যা হয়নি। কিন্তু ম্যাথেউজ সে গোত্রের প্লেয়ার নয়। নিজে ঠিক কী চায়, এটা বোধহয় টিমকে বোঝাতেই পারছে না ও। |
তার উপর পুণের ব্যাটিং লাইন আপের মাথা মুণ্ড কিছু বুঝতে পারলাম না। মিচেল মার্শের মতো হার্ডহিটারকে নামাচ্ছে আট নম্বরে। অথচ ওপেনাররা প্রথম দিকে রান তুলতেই পারছে না। মার্শকে যদি খেলাতেই হয়, ওপেন করাও। নতুন কিছু ভাবো। তা ছাড়া গত বার পুণেকে বোধহয় সব চেয়ে বেশি ম্যাচ জিতিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ। সেই স্মিথ এ বার প্রথম দুটো ম্যাচে সুযোগই পেল না। পুণের মিডল অর্ডার এ দিন ধসে গেল হ্যারিস, প্রবীণ কুমার, আওয়ানাদের মতো বোলারদের সামনে। স্ট্র্যাটেজি না বদলালে পুণের কপালে কিন্তু দুঃখ আছে।
দুঃখ মুম্বইয়ের কপালেও ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কায়রন পোলার্ড সুপারম্যান হয়ে উঠে ধোনির ক্যাচটা নেওয়ায় টানা দুটো ম্যাচ হারার থেকে বেঁচে গেল ওরা। চেন্নাই অধিনায়ক শনিবারের ম্যাচ জেতাতে না পারলেও একটা কথা কিন্তু আবার বুঝিয়ে দিল। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ‘গ্রেটেস্ট’ ফিনিশারের নাম এখন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। একটা সময় এই তকমাটা ছিল মাইকেল বিভানের গায়ে। ওয়ান ডে-তে ম্যাচ শেষ করতে ওর চেয়ে ভাল নাকি কেউ কখনও পারেনি। হতে পারে। কিন্তু সেই প্রাচীন প্রবাদটা এখন মিথ্যে হয়ে গিয়েছে।
আসলে ধোনির মধ্যে কয়েকটা গুণ আছে, যেগুলো ওকে বাকিদের থেকে আলাদা করে দিচ্ছে। যেমন, উইকেটের সব দিকে স্ট্রোক খেলার ক্ষমতা। প্রচণ্ড পাওয়ার হিটিং। দুর্দান্ত রানিং বিটউইন দ্য উইকেট। অসাধারণ ক্রিকেটীয় ব্রেন এবং নিজের উপর আত্মবিশ্বাস যে ম্যাচ আমি যে কোনও সময় বের করে দেব। রান তাড়া করতে নেমে ধোনির একটা ট্রেন্ড আছে, আস্কিং রেটটাকে বাড়তে দেওয়া। সবাই যখন বলছে, কেন বিগ হিট নিচ্ছে না, তখন ধোনি স্ট্রাইক রোটেট করছে। তার পরে সবাই যখন আশা ছেড়ে দিতে বসেছে, ও বিগ হিট নেওয়া শুরু করল। এ ভাবে কত ম্যাচ জিতিয়েছে, ইয়ত্তা নেই। আসলে ধোনি খুব ভাল করেই জানে, শেষ কয়েক ওভারে ১১-১২ আস্কিং রেট ও অনায়সে তুলে দিতে পারবে। আর পারেও। এখানেই ধোনির গ্রেটনেস। মুম্বইয়ের সঙ্গেও একই জিনিস হতে যাচ্ছিল। ২৬ বলে ৫১ রান করল। শেষ ওভারে ১২ রানটাও তুলে দিত পোলার্ড প্রায় দশ ফুট উঁচু থেকে ওই ক্যাচটা পেড়ে না আনলে। |