|
|
|
|
কংগ্রেসের কোন্দলে গগৈয়ের পাশেই এআইসিসি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন ও প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্ব বদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে অসমের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক দিগ্বিজয় সিংহ সাফ জানিয়ে দিলেন, “তরুণ গগৈই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। এমন কী, মন্ত্রিসভার রদবদলের পূর্ণ কর্তৃত্বও গগৈয়ের হাতেই থাকছে।” তিনি জানান, “দলে ভাঙন ধরানো বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা কড়া হাতেই দমন করা হবে।” ২০১৪-এর লোকসভা ভোটে গগৈয়ের নেতৃত্বেই লড়তে নামবে অসম প্রদেশ কংগ্রেস। মাসাধিক কাল যাবৎ প্রদেশ কংগ্রেসের যুব গোষ্ঠীর কয়েক জন বিধায়ক ও চা-গোষ্ঠীর বিধায়করা প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব ও তরুণ গগৈয়ের বিরুদ্ধে সরাসরি বিষোদ্গার শুরু করেন। সদ্য সমাপ্ত বিধানসভাও রাজ্য কংগ্রেসের ঘরোয়া কোঁদলের জেরে উত্তপ্ত ছিল। এরই মধ্যে, তরুণ গগৈ লোকসভা নির্বাচনে এআইইউডিএফ-এর সঙ্গে মিত্রতার পক্ষে সওয়াল করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। বিদ্রোহ দমনে গগৈ শিবির মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে ‘আস্থা-সই সংগ্রহ অভিযান’ চালান। কিন্তু কংগ্রেসের ৭৯ জন বিধায়কের মধ্যে ৫৮ জন সেখানে সই করেন। এর পর গগৈ ও বিদ্রোহী দলের ‘তথাকথিত’ নেতা হিমন্তবিশ্ব শর্মা দিল্লি যান। উত্তর-পূর্ব বিকাশ মন্ত্রী তথা চা-গোষ্ঠীর নেতা পবন সিংহ ঘাটোয়ারও রাজ্যে এসে দফায় দফায় চা-গোষ্ঠীর বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দাবি-দাওয়া না মেটায় তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। তিন দফা বৈঠকের পরে সরকার চা জনজাতি উন্নয়নে বেশ কিছু প্রকল্প ও পদক্ষেপ ঘোষণা করে।
কিন্তু রেকিবুদ্দিন আহমেদ, জয়ন্তমল্ল বরুয়া, চন্দন সরকার, সুস্মিতা দেবদের মতো ‘বিদ্রোহী’দের বাগে আনা যাচ্ছিল না। গগৈ-বিরোধী হিসেবে পরিচিত প্রবীন কংগ্রেস নেতা, কিরিপ চালিহার নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা এআইসিসির কাছে স্মারকপত্রও দেয়। বিরোধী শিবির সূত্রের খবর, গগৈকে নেহাত সরানো না হলেও একজন উপ-মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগের আবেদনও জানানো হয়েছিল। পরিস্থিতি সামলাতে সনিয়া গাঁধী দিগ্বিজয়কে গুয়াহাটি পাঠান। গত দু’দিন ধরে তিনি ও এআইসিসি সম্পাদক জয়দেব জেনা গগৈয়ের পক্ষের ও বিপক্ষের সব বিধায়ক-নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালান। কাল প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পরে দিগ্বিজয় সাংবাদিকদের বলেন, “তরুণ গগৈই ২০১৬ সাল অবধি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকছেন। উপ-মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগের প্রশ্নই নেই। আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে সকলকে একজোট হতে হবে। বিপিএফ-এর সঙ্গে মিত্রতা যেমন ছিল থাকবে। নতুন কারও সঙ্গে মিত্রতার কোনও প্রস্তাব নেই।”
তবে দলীয় সূত্রে খবর, এ হল জোড়াতালি দেওয়া শান্তি। ‘হিমন্ত শিবির’ মোটেই সর্বসম্মত ভাবে এআইসিসির ‘চাপিয়ে দেওয়া’ সিদ্ধান্ত মন থেকে মানেনি। বিরোধী শিবির দিগ্বিজয়কে তা জানিয়েও দিয়েছে। এ দিকে, গগৈও সাফ জানিয়েছেন, বিরোধী শিবিরের যুক্তিসঙ্গত দাবিপূরণে তিনি চেষ্টা করবেন। তবে ইচ্ছাকৃত অশান্তি জিইয়ে রাখা সহ্য করবেন না। গত কালের বৈঠকের জেরে বিরোধী মন্ত্রী বা বিধায়কদের বহিষ্কার করা বা মন্ত্রিত্ব কেড়ে নেওয়া হতে পারে বলে যে খবর রটেছিল, তেমন কিছু এখনও ঘটেনি। |
|
|
|
|
|