জেলে আদৌ জঙ্গিরা সঙ্গী নয় ইকবালের, দাবি কারাকর্তাদের
ংশোধনাগারে জঙ্গিদের সঙ্গে তাঁকে একই সেলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করে আদালতকে চমক দিয়েছিলেন গার্ডেনরিচের তৃণমূল কংগ্রেসের বরো চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্না। জেল প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য এই অভিযোগ স্বীকার করছেন না। তাঁদের দাবি, জঙ্গি নয়, মুন্নার সঙ্গে একই সেলে রয়েছে দু’জন খুনের আসামি। দিনের বেশির ভাগ সময় মুন্না সেলেই কাটাচ্ছেন। মেলামেশা যেটুকু করছেন, তা-ও জঙ্গিদের সঙ্গে নয়, কলকাতার বিভিন্ন দাগি অপরাধীদের সঙ্গে।
পুলিশকর্মী তাপস চৌধুরীকে হত্যার অভিযোগে মুন্নাকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। তাঁকে রাখা হয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলের একটি সেলে। গত বুধবার আলিপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মুন্না বিচারকের উদ্দেশে বলে ওঠেন, “স্যার, জেলে আমাকে টেররিস্টদের (জঙ্গি) সেলে রাখা হয়েছে।”
জেল সূত্রের খবর অন্য। জেলে সাধারণত দু’ভাবে বন্দিদের রাখা হয়। একটি ওয়ার্ড, অন্যটি সেল। ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে ঢালা বিছানা করে ৪০ থেকে ৮০-৯০ জন বন্দিকে একসঙ্গে রাখা হয়। অন্য দিকে, সেলে সাধারণত রাখা হয় ১ থেকে ৫ জন বন্দিকে। এক জেল কর্তার কথায়, “সাধারণ রীতি অনুযায়ী, সেলে বিজোড় সংখ্যার বন্দিদেরই রাখা হয়।” প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার সূত্রের খবর, ওখানে এ রকম সেল রয়েছে ৪৪টি। সেলগুলি রয়েছে দু’ভাগে। এক দিকে ১ থেকে ২২ এবং অন্য দিকে ২৩ থেকে ৪৪।
প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রের খবর, মুন্নাকে রাখা হয়েছে ১৮ নম্বর সেলে। সঙ্গে রয়েছে দুই বন্দি মহম্মদ ফিরোজ এবং শেখ রেজাউল। দুজনেই খুনের আসামি। এদের বিরুদ্ধে মাওবাদী বা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অভিযোগ নেই। তবে ১ থেকে ২২ নম্বর সেলের মধ্যে কোনও মাওবাদী বন্দি না থাকলেও রয়েছে জঙ্গি আফতাব আনসারির সঙ্গী জামিরউদ্দিন নাসির। নাসিরকে জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে আলিপুর জেল থেকে সরিয়ে প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয়। কেন, তার ব্যাখ্যা দিয়ে জেলের এক কর্তা জানান, গত বছরের অক্টোবর মাসে আফতাব আনসারি আলিপুর জেলে বসেই পাকিস্তানে বসবাসকারী তার স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এবং এই কাজে ‘গুরু’ আফতাবকে সাহায্য করত তার সঙ্গী নাসির। সেই কারণেই আলিপুর থেকে সরিয়ে প্রেসিডেন্সিতে পাঠানো হয় নাসিরকে। সে ছাড়া প্রেসিডেন্সি জেলে যত মাওবাদী বন্দি রয়েছে, তারা সবাই রয়েছে ২৩ থেকে ৪৪-এর মধ্যে। অর্থাৎ, অন্য দিকের সেলে।
জেলের এক কর্তার কথায়, “জেলে দুই দাগি অপরাধী জগ্গা ও গলাকাটা রাজুর সঙ্গে ওঠাবসা করেন মুন্না। কোনও মাওবাদী বা জঙ্গির সঙ্গে নয়।” ওই দু’জন মুন্নার সঙ্গে এক সেলে না থাকলেও জেলজীবনে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, জগ্গা এবং রাজু দু’জনের বিরুদ্ধেই কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় তোলাবাজি, খুন, ছিনতাই-সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
তা হলে আদালতের কাছে মুন্না ওই অভিযোগ করলেন কেন? জেল সূত্রে এর দু’রকম ব্যাখ্যা শোনা যাচ্ছে। কর্তাদের একাংশের মতে, “জামিন পাওয়ার জন্যই আদালতে নাটক করেছেন মুন্না।” অন্য অংশের মত, জেলে প্রভাব খাটিয়ে ‘আমদানি’ ওয়ার্ডে থেকে যেতে চেয়েছিলেন মুন্না। সাধারণ ভাবে জেলে যে সব বন্দিরা নতুন আসে, তাদের প্রথমে আমদানি ওয়ার্ডে রাখা হয়। আদালতের নথি আসার পরে তাদের ওয়ার্ডে বা সেলে পাঠানো হয়। মুন্নাও প্রথম রাতে আমদানি ওয়ার্ডেই ছিলেন। সেই এক রাতের মধ্যে সেখানকার কর্মীদের হাত করেছিলেন তিনি। ভাল খাবারেরও ব্যবস্থা হয়েছিল সেখানে। পরে সেলে সরাতেই ক্ষুব্ধ হন মুন্না। সেই কারণেই আদালতে তিনি জঙ্গিদের সঙ্গে একই সেলে রাখার অভিযোগ তুলেছেন।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.