পুস্তক পরিচয় ২...
তখনও ‘সেতু’ দেখেনি কলকাতা
নোজ মিত্র ও ময়ূরী মিত্রের সম্পাদনায় সুন্দর নাট্যসম্ভার-এর (প্রতি খণ্ড ২৫০.০০, দে’জ) দুটি খণ্ডে সুন্দরম-এর মৌলিক বাংলা নাটক রচনা-প্রতিযোগিতার সূত্রে ১৯৯০-২০১১-র সেরা নাটকগুলি গ্রন্থিত। হর ভট্টাচার্য তীর্থঙ্কর চন্দ অভিজিৎ তরফদার কৌশিক চট্টোপাধ্যায় সুপ্রীতি মুখোপাধ্যায় সাত্যকি হালদার রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী শর্মিলা মৈত্র সঙ্ঘমিত্রা চক্রবর্তীর মতো আরও অনেকের লেখা নাটক ঠাঁই পেয়েছে এতে। সঙ্গে মনোজ মিত্রের চমৎকার একটি গদ্য: ‘ফুল ফোটে ফল ধরে’। তাতে গত শতকের পঞ্চাশের দশকের শেষের স্মৃতিতে ফিরে গিয়েছেন তিনি, যখন প্রয়াত পার্থপ্রতিম চৌধুরীর সঙ্গে তাঁরা সুন্দরম নাট্যদল তৈরি করে মৌলিক নাট্যরচনায় ব্রতী হচ্ছেন: ‘‘তখন কলকাতায় সাত আটটার বেশি ব্যস্ত দল নেই, বছরে দু তিনবারের বেশি হল ভাড়া নিয়ে থিয়েটার করার সাধ্যই নেই কারো।... প্রচুর ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আর ধারধোর করে পার্থপ্রতিমের নাট্যরূপে বিভূতিভূষণের ‘পথের পাঁচালী’ মঞ্চস্থ করে আমরা ক্লান্ত আর নিঃস্ব। একটাই শুধু প্রাপ্তি ঘটেছিল— তাপস সেনের আলোর জাদু। মাঠভরা কাশফুলের মধ্যে রেলগাড়ি ছুটিয়েছিলেন তাপসদা। ... তখনো বিশ্বরূপার সেতু দেখেনি কলকাতা।”
কাব্যনাটক, একাঙ্ক নাটক, পূর্ণাঙ্গ গদ্যনাটক, ছোটদের নাটক— যা লিখেছেন বুদ্ধদেব বসু, সে সব নিয়েই দুই খণ্ডে বেরিয়েছে বুদ্ধদেব বসুর নাটক সমগ্র (প্রতি খণ্ড ৫০০.০০)। সম্পাদক দময়ন্তী বসু সিংহও দু’টিতে পরপর ‘ভূমিকা’ ও ‘মুখবন্ধ’ লিখে নাটককার বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন পাঠকের: ‘সাহিত্যিক জীবনের প্রথম পর্বে যখন তিনি (বুদ্ধদেব বসু) অনেক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা ছেড়ে কলকাতায় আসেন তখনও যে তাঁর “নাট্যকার’’ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবার অভিপ্রায় ছিল, সে তথ্য হয়তো অনেকেই জানেন না।’
বাংলাদেশের রূপান্তর ইনস্টিটিউট অব ফোক থিয়েটার থেকে প্রকাশিত অন্জন্ দাশগুপ্তের স্মরণীয় বিশ্বনাট্য (৪০০.০০) এক অবশ্য-সংগ্রহযোগ্য সংকলন, নাটকের নিয়মিত দর্শক থেকে গবেষক সকলের কাছে। এ-গ্রন্থের ‘প্রাক পরিচয়’-এ লেখক জানাচ্ছেন ‘আজকের প্রজন্মের কাছে পূর্ব-প্রজন্মের নাট্যকর্ম অবশ্যপাঠ্য। এই পাঠে মন শোধন হয়। সংস্কৃত হয়। এবং হয়ই। এটিই নিয়ম। নতুবা ঐতিহ্য তৈরি হয় না।... ’ খ্রিস্টপূর্ব যুগ থেকে একুশ শতকের প্রারম্ভ পর্যন্ত বাছাই করা ৪৪ রকমের থিয়েটারের রীতি-পদ্ধতি চালচিত্র নিয়ে আলোচনা করেছেন লেখক। প্রতিটি থিয়েটারের দর্শনভিত্তি, তাত্ত্বিক বুনট, সামাজিক ইতিহাস আর তার ব্যবহারিক প্রয়োগের দিকটি প্রাঞ্জল ভাবে আলোচিত।
‘প্রচলিত নাটকের ধারাবাহিকতা থেকে মুক্ত করে থিয়েটারকে জনগণের কাছাকাছি আনার প্রয়াস বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে বহু নাট্যবিদ্ করেছেন। তাঁরা বুঝেছিলেন থিয়েটারকে জনগণের সংগ্রামের শরিক হতে হবে।’— লিখেছেন শোভন গুপ্ত। তাঁর আন্দোলনের থিয়েটার-এ (কালিন্দী ব্রাত্যজন, ৮০.০০। পরি: দীপ) রোমাঁ রোঁলা, পিপলস্ থিয়েটার, পিসকাটর, প্রোলেতারিয়েত থিয়েটার থেকে শুরু করে পুওর থিয়েটার হয়ে ভারতীয় গণনাট্য আন্দোলন-এ এসে শেষ করেছেন শোভন। এর আগেও তাঁর তিনটি বই বেরিয়েছে ব্রডওয়ে থিয়েটার, ভারতবর্ষের থিয়েটার, আর শম্ভু মিত্রকে নিয়ে।
অমিতাভ রায় তপু বিশ্বাস ও সুচন্দ্রা ঘোষ-কৃত ব্রাত্য বসুর হেমলাট, দ্য প্রিন্স অব গরানহাটা-র সটীক ইংরেজি সংস্করণ (৪০০.০০) প্রকাশ করেছে আভাঁগার্দ প্রেস, শেক্সপিয়র সোসাইটি অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া-র পক্ষ থেকে। ভূমিকায় আলোচনা হ্যামলেট-এর রূপান্তর নিয়ে, শেক্সপিয়র-কে গরানহাটা আর কলকাতায় স্থানান্তর করা নিয়ে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.