|
|
|
|
বিদ্যুতের তারে চাষির মৃত্যু, দেহ ঘিরে বিক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • এগরা |
ছিঁড়ে পড়া উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের তারে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক চাষির। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে এগরা থানা এলাকার দুবদা গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে মৃত স্বপন দাস (৩৬) ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। ঘটনায় বিদ্যুত্ দফতরের গাফিলতির অভিযোগ তুলে সারা রাত মৃতদেহ ঘিরে রেখে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। শুক্রবার সকালে পুলিশ গিয়ে বিদ্যুত্ দফতরের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে। মৃতের স্ত্রী ভারতী দাস থানায় এগরার বিদ্যুত্ দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সৌম্যদীপ ভৌমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটা নাগাদ দুবদা গ্রামের মাঝমাঠে এগারো হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের একটি তার ছিঁড়ে পড়ে থাকতে দেখেন চাষিরা। ধানগাছ ভরা জমিতে এ ভাবে তার পড়ে থাকায় বিপদের আশঙ্কা করেন তাঁরা। এরপর বিদ্যুত্ দফতরে ফোন করে তার থেকে বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ও তার মেরামতির কথা জানানো হয়। অভিযোগ, বিদ্যুত্ দফতরের কর্মীরা গুরুত্ব দেননি বিষয়টিতে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ স্বপন দাস নামে গ্রামের এক বাসিন্দা সারের বস্তা নিয়ে নিজের জমিতে যাওয়ার সময় ওই ছেঁড়া তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। সন্ধ্যের সময় বাড়ি ফেরার পথে স্বপনবাবুকে পড়ে থাকতে দেখেন কয়েকজন গ্রামবাসী। তাঁরা স্বপনবাবুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সক মৃত বলে জানান। |
|
এগরায় বিদ্যুতের তার টানার জন্য চলছে গাছ কাটা |
এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। খবর দেওয়া হয় বিদ্যুত্ দফতর, থানা, ব্লক ও মহকুমাশাসককে। অভিযোগ, কোনও তরফে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। প্রতিবাদে মৃতদেহ আটকে রেখে রাতভর বিক্ষোভ দেখান হাজার দু’য়েক গ্রামবাসী। গ্রামের বাসিন্দা অরুণ পণ্ডা, দীপক জানারা বলেন, “বিদ্যুত্ দফতর ইচ্ছে মতো বেআইনি ভাবে বিদ্যুত্ সংযোগ দিয়েছে। ফলে চাপ নিতে না পেরে ওই তারে বারবার বিদ্যুতের ঝলকানি হত। এর আগেও তার ছিঁড়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করেনি বিদ্যুত্ দফতর।”
এগরা থানার ওসি গণেশ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে। জেলা পরিষদের বিদ্যুত্ কর্মাধ্যক্ষ স্বপন রায় বলেন, “মৃত্যুর ঘটনায় বিদ্যুত্ দফতর ও বিদ্যুতের লাইনের কাজে যুক্ত এজেন্সির গাফিলতি স্পষ্ট। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।” বিদ্যুত্ দফতরে এগরার অ্যাসিন্ট্যান্ট ইঞ্জিননিয়ার সৌম্যদীপ ভৌমিক বলেন, “এজেন্সির লোকেরা কাজ করার মাঝেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই কর্মীরা মৃতদেহ দেখে মারধরের ভয়ে পালিয়ে আসে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তা বিবেচনাও করা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|