দূরে প্রশিক্ষণে আপত্তি, ঘেরাও-বিক্ষোভ শিক্ষকদের
দূর জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই ক্ষোভ জানাচ্ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষকেরা। শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি স্বপন মু্র্মুকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন কর্মরত শিক্ষকদের একাংশ। জেলার সাঁকরাইল ব্লকের রোহিনী প্রাথমিক চক্রের ভারপ্রাপ্ত এসআই-কেও তালাবন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষকরা। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত ওই বিক্ষোভ চলে। অফিসের বিদ্যুত্‌ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন শিক্ষকেরা। পরে প্রশাসনের লোকজন এসে দাবিগুলি উর্ধ্বতন মহলে জানানোর আশ্বাস দিলে মুক্তি দেওয়া হয় বন্দি এসআই মানসকুমার দে-কে।
কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মুক্ত দূর-শিক্ষার মাধ্যমে বৃত্তিগত প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকার এক বছরের বৃত্তিগত প্রশিক্ষণ নেওয়া আছে, তাঁরা এক বছরের ব্রিজ কোর্স করবেন। যাঁদের কোনও প্রশিক্ষণই নেই, তাঁদের দু’বছরের ডি এল এড কোর্স (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টরি এডুকেশন) করতে হবে। শনি ও রবিবার (৬ ও ৭ এপ্রিল) ব্রিজ কোর্স এবং ডিএলএড কোর্সে ভর্তির ধার্য দিন। শেষ মহূর্তে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পাঠানো ভর্তি সংক্রান্ত রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট হাতে পেয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকার। প্রথমত, বেশ কিছু সার্টিফিকেটে শিক্ষকদের নামের বানান ভুল রয়েছে। কারও আবার বাবার নাম ভুল রয়েছে। কয়েকজনের সার্টিফিকেট নম্বরেও ভুল রয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে বিক্ষোভ। সাঁকরাইলের রোহিণীতে দেবরাজ ঘোষের তোলা ছবি।
রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে কেবলমাত্র প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নাম রয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি কোনও জেলায় বা থানার অন্তর্গত সেই উল্লেখ নেই। ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষকেরা। এ দিকে, মাস তিনেক আগে শিক্ষকদের কাছ থেকে কোন কেন্দ্রে তাঁরা প্রশিক্ষণ নিতে ইচ্ছুক, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তারপরও দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ শিক্ষককে নিকটবর্তী কেন্দ্রের পরিবর্তে দূরবর্তী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে, এমনকী অন্য জেলার কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি, হয় কাছের প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দিতে হবে নতুবা ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে। তারই জেরে এ দিন জেলা শিক্ষা সংসদে বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান শিক্ষকেরা। যদিও সভাপতি কোনও আশ্বাস দিতে পারেননি। তিনি শিক্ষকদের সাফ জানিয়ে দেন, রাজ্য থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁর কিছুই করার নেই। শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ৭০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই তুলনায় শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্র অনেক কম থাকার কারণেই অন্য জেলায় পাঠাতে হচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
এ দিন সাঁকরাইলে বিক্ষোভের সামনের সারিতে ছিলেন তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতা তথা স্থানীয় দেহগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশান্তকুমার পাত্র। সুশান্তবাবুর অভিযোগ, “শনি-রবি ও ছুটির দিনে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আবার অন্য দিন এলাকায় ফিরে শিক্ষকদের বাধ্যতামূলক ভাবে স্কুলও করতে হবে। যা শিক্ষকদের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করবে। এ দিন শিক্ষকেরা সার্টিফিকেটে গরমিল ও কেন্দ্রের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা জানার জন্য এলে এসআই কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।” খবর পেয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক (এআই) পূর্ণেন্দু উত্থাসিনি, জেলার সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রদীপ পতি এবং বিদ্যালয় পরিদর্শক সমিতির সভাপতি রঞ্জিত পাত্র রোহিনীতে এসে বিক্ষোভকারী শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা বিক্ষোভকারী শিক্ষকদের জানান, বিষয়টি সরাসরি রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ করেছে। তবে শিক্ষকদের দাবি ও অভিযোগের বিষয়গুলি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন মহলে জানানোর আশ্বাস দেন তাঁরা। এরপর মানসবাবুকে ছেড়ে দেওয়া হয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.