|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা |
পুর-উদ্যোগ |
মিটবে জলসঙ্কট |
কৌশিক ঘোষ |
বছর চারেক আগেই জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আর্বান রিনিউয়াল মিশন (জেএনএনইউআরএম) প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল তপসিয়ার গোলাম জিলানি খান রোডের জলাধার নির্মাণ প্রকল্প। তবে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত শর্ত কলকাতা পুরসভা মানতে না পারায় এই জলপ্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও অর্থ বরাদ্দ করেনি। এর ফলে, জেএনএনইউআরএম প্রকল্প থেকে বাদ পড়ে এই প্রকল্পটি। সম্প্রতি পুরসভার বরাদ্দ অর্থেই বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে এমনটাই পুরকর্তৃপক্ষের দাবি।
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই জলপ্রকল্পে তপসিয়া-সহ আশপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল উপকৃত হবে। পুরসভার নিজস্ব অর্থেই এই প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। পরিকাঠামোজনিত কারণেই এই প্রকল্পকে জেএনএনইউআরএম-এ অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। প্রস্তাবিত শর্ত মেনে পানীয় জলের জন্য নাগরিকদের ওপর জলকর চাপাতেও আমরা রাজি নই। আমরা নাগরিকদের পরিস্রুত পানীয় জল দিতে বদ্ধপরিকর। সেই কারণে নিজেরাই এই প্রকল্প নির্মাণ করছি।” |
|
পুরসভা সূত্রে খবর, ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের কাছে প্রায় তিন বিঘা জমির ওপর এই বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরি হচ্ছে। দিনে ২০ লক্ষ গ্যালন জল উৎপন্ন করা হবে। ফলে তিলজলা, তপসিয়া, আনন্দপুর, পার্ক সার্কাস, পিকনিক গার্ডেন-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ১৮ কোটি টাকা।
স্থানীয় কাউন্সিলর রাফাত জাভেদ বলেন, “এই এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা প্রকট। ফলে এই প্রকল্পের প্রয়োজন খুব বেশি। এই প্রকল্প শেষ হলে জলকষ্ট অনেকটাই মিটবে।” পুরসভার জল দফতরের এক আধিকারিক জানান, বর্তমানে, এই এলাকা মূলত ভূগর্ভস্থ গভীর নলকূপের উপরেই নির্ভরশীল। এই বুস্টার পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হলে পুরসভার ৬৫, ৬৬, ৫৯ এবং ১০৭ নম্বর ওয়ার্ড এই স্টেশনের আওতায় আসবে।
পুরসভার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে ৫৯, ৬৫, ৬৬ এবং ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে নলকূপের সংখ্যা যথাক্রমে ৩, ১, ২১ এবং ২টি গভীর নলকূপ রয়েছে। যত ক্ষণ না এই ওয়ার্ডগুলিতে পরিস্রুত পানীয় জল সম্পূর্ণ ভাবে সরবরাহ করা হচ্ছে, তত ক্ষণ নলকূপের জল ব্যবহার করা ছাড়া বাসিন্দাদের অন্য কোনও বিকল্প নেই বলেও পুরকর্তৃপক্ষের দাবি। |
|
জেএনএনইউআরএম-এর মধ্যে এই প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি কেন?
পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন, “জেএনএনইউআরএম-এর অন্যতম শর্তই ছিল এখানে ওভারহেড জলাধার নির্মাণ করে সেখান থেকে সারা দিনই এলাকায় জল সরবরাহ করার। এই ধরনের ওভারহেড জলাধার নির্মাণের জন্য কোনও জমি পাওয়া যায়নি। যেখানে জমি পাওয়া গিয়েছে তার উপর দিয়ে হাই টেনশন বৈদ্যুতিক তার থাকার ফলে এখানে ওভারহেড জলাধার নির্মাণ সম্ভব হয়নি। তার পরেই এখানে ভূগর্ভস্থ জলাধারের পরিকল্পনা হয়। এখন তার কাজই চলছে।” অন্য দিকে, ধাপা থেকে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে অপরিশোধিত জল পরিস্রুত করে তবেই এই বুস্টার পাম্পিং স্টেশনে আনা সম্ভব। আইনগত জটিলতায় সেই প্রকল্পটির কাজও দেরিতে শুরু হয়। ফলে, সমগ্র প্রকল্পটি বিলম্বিত হয় বলে বিভাসবাবু জানান।
|
ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী |
|
|
|
|
|