|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
পুর-বাজার |
নিশি-বিতর্ক |
কাজল গুপ্ত |
রাতে খোলা রাখতে হবে বাজারের প্রবেশপথ। কোনও ব্যবসায়ী বা তাঁর কর্মচারী রাতে বাজারে থাকতে পারবেন না। রান্নাও করা যাবে না বাজারের মধ্যে। সূর্য সেন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পরে এমনটাই রাজ্য সরকারের নির্দেশ। এরই ভিত্তিতে সল্টলেক পুরসভা পুরএলাকার বাজারগুলিতে রাতে কত জন থাকে, তা জানতে চিঠি পাঠাচ্ছে। তবে এই নির্দেশিকা মানতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। আলোচনা বা বিকল্প ব্যবস্থা না করেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ। পুরপ্রশাসনের অবশ্য পাল্টা দাবি, ব্যবসায়ীদের সমস্যার দিকটিও খতিয়ে দেখা হবে।
সল্টলেকের দ্বিতল বাজারগুলিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কতটা কার্যকরী তা নিয়ে প্রশ্ন আগেও উঠেছিল। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছে। নন্দরাম মার্কেট, আমরি হাসপাতাল, হাতিবাগান বাজারে অগ্নিকাণ্ডের পরেও নানা পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, কিছু পদক্ষেপ করা হলেও তাতে আখেরে কোনও লাভ হয়নি। সম্প্রতি সূর্য সেন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পরে রাজ্য সরকার নড়েচড়ে বসে। তার পরেই মার্কেট নিয়ে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সম্প্রতি সল্টলেক পুরসভা বাজারগুলিতে এমন চিঠি পাঠিয়েছে। |
|
দ্বিতল বাজারগুলিতে নির্দিষ্ট আয়তনের এক একটি দোকানঘর। হাওয়া চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট একটি জায়গা। ব্যস। অগ্নিনির্বাপণের বাকি ব্যবস্থা বলতে আছে কয়েকটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। দোকানগুলির জিনিসপত্র চলাচলের পথের উপরেই থাকে। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের তেমন কোনও তৎপরতা চোখে পড়ে না। যদিও ইতিমধ্যেই বাজার সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। বাজারের ওই দোকানের মধ্যেই কাঠের পার্টিশন দিয়ে আলাদা করে উনুন জ্বালিয়ে বিভিন্ন খাবার তৈরি হয়। পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ী কিংবা তাঁদের কর্মচারীরা রাতে বাজারে থাকেন। যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজারে অল্প সংখ্যক কর্মচারীই রাতে থাকেন। তাঁরাও বাজারের মধ্যেই রান্না করে খাবারের সংস্থান করেন।
পুরকর্তৃপক্ষের দাবি, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরসভার এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাস্তব অবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে না। সল্টলেকের কেন্দ্রীয় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক শ্যামলকান্তি রায় বলেন, “রাতে বাজারের প্রবেশপথ খোলা রাখলে দোকানের মালপত্র চুরি গেলে তার দায়িত্ব কে নেবে? পুরসভা বাজারের মালিক, নৈশরক্ষীর ব্যবস্থা তাদেরই করতে হবে। পুরসভা মার্কেটে রেস্তোরাঁ কিংবা মিষ্টির দোকানের ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে। অথচ সেখানে রান্না করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা আলোচনায় বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।” |
|
পুরপ্রশাসনের অবশ্য দাবি, দোকানের মালপত্রের দায়িত্ব দোকানদারদের। তাঁরা প্রয়োজনে নিরাপত্তারক্ষী রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন। পাশাপাশি খাবার বিক্রির জন্য ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হলেও রান্না করে খাবার বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়নি। ব্যবসায়ীদের দাবি, বিকল্প ব্যবস্থার অবকাশ রয়েছে। প্রতিটি মার্কেটের পাশেই জায়গা রয়েছে। সেখানে যাতে রান্না করা যায় পুর প্রশাসন তার ব্যবস্থা করুক। তাঁদের আরও অভিযোগ, বাজারগুলিতে অগ্নিনির্বাপণের কোনও ব্যবস্থাই করেনি প্রশাসন। এখন যাবতীয় দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্রেতা বা বিক্রেতাদের সুরক্ষার কথা ভেবেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের সমস্যার দিকগুলিও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।”
|
ছবি: শৌভিক দে |
|
|
 |
|
|