দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
তারাতলা-অছিপুর
যাতনার যাতায়াত
ছিপুর এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা তারাতলা হয়ে নিয়মিত কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় কাজে আসেন। অথচ তারাতলা এবং অছিপুরের মধ্যে আজও সরাসরি যাতায়াতের কোনও ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, অছিপুর থেকে তারাতলা যেতে হলে অন্তত তিন বার অটো বদলাতে হয়। কিন্তু পরিবহণের এই বেহাল দশা নিয়ে বিভিন্ন মহলে বার বার আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি।
এই রাস্তার নিত্যযাত্রী, অছিপুর এলাকার বাসিন্দা সুমন মণ্ডলের কথায়: “এখানে পরিবহণের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে অটো। অছিপুর থেকে তারাতলা যেতে হলে তিন বার অটো বদলাতে হয়। খরচ পড়ে প্রায় ত্রিশ টাকা। বাস চলে না।”
নিত্যযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এই রাস্তায় যাতায়াতের পদ্ধতি হল, অটোয় প্রথমে অছিপুর থেকে চড়িয়াল মোড়, সেখান থেকে বাটার মোড় বা মোল্লার গেট, তার পরে তারাতলা। সারা দিন যেমন তেমন চললেও সন্ধ্যার পরে কমে যায় অটোর সংখ্যা। বর্ষা আর শীতে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়েও যানবাহন পেতে যাত্রীদের কালঘাম ছুটে যায়।
কলকাতায় সহজে পৌঁছবার জন্য গঙ্গা পার হয়ে হাওড়া জেলার এক অংশের বাসিন্দারাও এই রাস্তা ব্যবহার করে থাকেন। এর ফলে যাত্রীসংখ্যা বাড়লেও যানবাহনের সংখ্যা কম হওয়ায় সারা বছর দুর্ভোগ লেগেই থাকে। এই সব এলাকায় গত কয়েক বছরে জনসংখ্যার চাপও বেড়েছে। তবুও পরিবহণ ব্যবস্থার কেন এই হাল? প্রশ্নের উত্তরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এই সব এলাকার সমস্যা আমাদের নজরে রয়েছে। এই সব রুটে নতুন গাড়ি চালানোর বিষয়ে এর মধ্যে কয়েক বার আলোচনাও হয়েছে।”
নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, এই রুটে অন্যান্য যানবাহন কম হওয়ায় অটোতে ছয়-সাত জন করে যাত্রী তোলা হয়। ছোটখাটো দুর্ঘটনা হামেশাই ঘটে। রাতের দিকে অনেক সময় অটোতে আট থেকে দশ জন যাত্রীও ওঠেন। তখন প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। অটো পাওয়া নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে বচসা এবং হাতাহাতিও এই এলাকায় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “এই সব প্রত্যন্ত এলাকার সমস্যা দীর্ঘদিনের। ৩৪ বছরে এই সমস্যাগুলোকে কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আমরা এই সব রুটে ছোট বাস চালানোর কথা ভাবছি।”

ছবি: অরুণ লোধ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.