উত্তর কলকাতা
কুমোরটুলি
সুরাহার প্রয়াস
মি থেকে রাস্তার উচ্চতা অনেক বেশি। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই বাড়িতে জল ঢুকে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কাজকর্ম। এই সমস্যা মেটাতে কুমোরটুলিতে উঁচু পিচের রাস্তা কেটে জমির সঙ্গে সমান করার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তা মেরামতির জন্য বিভিন্ন সময়ে পিচের প্রলেপ দিতে দিতে রাস্তার উচ্চতা জমির তুলনায় কয়েক ফুট বেড়ে গিয়েছে। পুরসভার মেয়র পারিষদ (সড়ক) সুশান্তকুমার ঘোষ বলেন, “কুমোরটুলিতে রাস্তা উঁচু হয়ে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। উঁচু হয়ে যাওয়া পিচের আস্তরণ কেটে নিলে সমস্যার সমাধান সম্ভব। মিলিং মেশিন দিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। বাংলা নববর্ষের আগেই এই কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। আগেও পুরসভা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এ ধরনের কাজ করেছে।”
পুরসভার সড়ক বিভাগের এক আধিকারিক জানান, মিলিং মেশিন দিয়ে রাস্তা কেটে ফেলার সময়ে যে পরিমাণ পিচ রাস্তা থেকে ছেঁটে ফেলা হয় তার ৩০ শতাংশ পুরসভার পিচ তৈরির কারখানায় নিয়ে গিয়ে ফের পিচ হিসেবেই পুনর্ব্যবহার করা যায়। তাই এই ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার খুব বেশি। গল্ফগ্রিন, কালীঘাটে এই ধরনের কাজ হয়েছে। সম্প্রতি, কুমোরটুলি এবং তার আশপাশের রাস্তায় এই কাজ হচ্ছে। পুরসভার সড়ক বিভাগের সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ক্রমাগত রাস্তায় পিচ দেওয়ার ফলে মাটি থেকে রাস্তার উচ্চতা প্রায় ছয় ইঞ্চি বেশি রয়েছে। এর জেরেই এই সমস্যা। এক পুর-আধিকারিক জানান, এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা দীর্ঘ দিন ধরেই উঁচু রাস্তা নিচু করার জন্য পুরসভার কাছে আবেদন করেছিলেন। অভিযোগ, রাস্তা উঁচু হওয়ায় তাঁদের ঘরে জল ঢুকে যায়। এমনকী, যেখানে তাঁরা মূর্তি তৈরি করেন সেখানেও জল ঢুকে গিয়ে ব্যবসার ক্ষতি হয়। এর পরেই পুরসভা রাস্তার উঁচু হয়ে যাওয়া পিচ কাটার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ পুরনো রাস্তা ভেঙে নতুন করে রাস্তা তৈরি করা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ। সে জন্য অনেক বেশি অর্থেরও প্রয়োজন।
পুরসভা সূত্রে খবর, কুমোরটুলির বনমালী সরকার স্ট্রিট, কুমোরটুলি স্ট্রিট এবং গোপেশ্বর পাল স্ট্রিট ছাড়াও আশপাশের প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটার রাস্তায় কাজ শুরু হয়েছে।
‘কুমোরটুলি প্রগতিশীল মৃৎশিল্প ও সাজশিল্প সমিতি’র সম্পাদক অপূর্ব পাল বলেন, “রাস্তায় ক্রমাগত পিচের প্রলেপ দেওয়ায় মূল রাস্তা জমির থেকে অনেকটা উঁচু হয়ে গিয়ে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই কারখানার মধ্যে জল ঢুকে কাজের ক্ষতি হচ্ছে। বাড়িতেও জল ঢুকছে। দুর্গাপুজোর সময়ে সমস্যা হয় সব থেকে বেশি। পুরসভাকে জানানো হয়েছিল। সম্প্রতি কাজ শুরু হয়েছে।”
স্থানীয় কাউন্সিলর মিতালি সাহা বলেন, “কুমোরটুলি অঞ্চলে এ ধরনের কাজ আগে হয়নি। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি মৃৎশিল্পীরাও উপকৃত হবেন। রাস্তা কাটার সঙ্গে সঙ্গেই পিচ দিয়ে সমান করে দেওয়া হচ্ছে যাতে কারও অসুবিধা না হয়। এই প্রকল্প দ্রুত শেষ করার জন্য গোটা দিন এবং রাত ধরে কাজ হচ্ছে।”
১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, “বহু দিন বাসিন্দাদের দাবি থাকলেও এই কাজ করা সম্ভব হয়নি। কুমোরটুলি অঞ্চলে এই সমস্যা সব থেকে বেশি। তবে রাস্তার উচ্চতা কমিয়ে তা সমান করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.