ঘরের কোর্টে ঘরের ছেলেই নেই। ফর্মের জন্য নয়, জাতীয় দলে ব্রাত্য ফেডারেশনের ‘বিদ্রোহী’ হওয়ায়। সেই ফেডারেশনই তাঁকে দেশের টেনিসের সেবা করার জন্য এই ম্যাচের মধ্যেই ঢাকঢোল পিটিয়ে সংবর্ধনা দেবে শনিবারই। আবার সেই প্লেয়ারের উদ্যোগে তৈরি প্লেয়ার’স্ অ্যাসোসিয়েশন একই দিনে ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকে বসবে নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে। এ হেন বিচিত্র পরিস্থিতির মধ্যেও মহেশ ভূপতির শহরে আঠাশ বছর পর প্রথম বসা ডেভিস কাপের আসরে ভারত অনায়াসে ২-০ ম্যাচে এগিয়ে থাকল প্রথম দিনে ইন্দোনেশিয়ার বিরুদ্ধে। শনিবার তাঁর হাফসেঞ্চুরি ডেভিস কাপ টাইয়ে ডাবলস লিয়েন্ডার (সঙ্গী সনম সিংহ) জিতে নিলে ভারতের আঞ্চলিক গ্রুপের অন্তত প্রথম ডিভিশনে টিকে যাওয়াটা দ্বিতীয় দিনই পাকা হয়ে যাবে। এবং তার সম্ভাবনাই বেশি। অলৌকিক ছাড়া! |
সোমদেব। দলে ফিরলেন, জয়েও। বেঙ্গালুরুতে শুক্রবার। ছবি: পিটিআই |
কারণ? কার্বন পার্কের মিডিয়াম পেস আর বাউন্সের হার্ডকোর্ট যে ভারতীয় টেনিস দলের কাছে পুরো ডিজাইনার সারফেস। ধোনি যেমন ঘরের মাঠে অর্ডারি পিচ চান কিউরেটরের কাছে। সোমদেব দেববর্মন এবং য়ুকি ভামব্রি দুই সিঙ্গলস প্লেয়ারই আজ পছন্দের সারফেসে স্বচ্ছন্দে উড়িয়ে দিলেন নিজেদের প্রতিপক্ষকে। তার মধ্যেও র্যাঙ্কিংয়ে দেড় হাজারের উপরে থাকা অখ্যাত নুগ্রহকে দেড় ঘণ্টায় সোমদেবের ৬-১, ৬-২, ৬-২ হারানোর থেকে পরের ম্যাচে যুযুধান প্লেয়ারদ্বয়ের প্রায় কাছাকাছি র্যাঙ্কিং এবং প্রতিপক্ষ দেশের সেরা প্লেয়ার রুঙ্কাটকে য়ুকির ৬-৩, ৬-২, ৬-৩ হারানোটা তাৎপর্যের। রুঙ্কট ব্যাডমিন্টনের দেশ ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় টেনিস দলের চাপ বহু দিন যাবত টেনে আসছেন। য়ুকির চেয়ে অনেকটাই ভাল জানেন কী ভাবে ডেভিসে আন্ডারডগ হয়ে লড়তে হয়। তা সত্ত্বেও তরুণ য়ুকি প্রতিপক্ষকে ফেরার কোনও সুযোগই দেননি। আর সোমদেবের সামনে তো নুগ্রহকে ততটাই অসহায় দেখাল, যতটা মাস দুয়েক আগে দিল্লিতে কোরিয়া ম্যাচে প্রথম সিঙ্গলসে ভারতের রঞ্জিতকে দেখিয়েছিল। সেই ম্যাচের মতোই আজকের স্কোরলাইন। তফাতের মধ্যে শুধু সেটা ভারতের পক্ষে।
ভারতকে প্রথম দিনের শেষে রীতিমতো স্বস্তিতে রেখে সোমদেব, য়ুকি দু’জনেই খুশি। সোমদেব যখন বলছেন, “দেশকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দিতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’ তখন য়ুকির মন্তব্য, “আশা করি কালই দেশের হয়ে টাই জিতে নিতে পারব।” হঠাৎই ‘ফিল গুড’ পরিবেশ ভারতীয় টেনিসে!
|
লি ৫০ |
|
আজ বেঙ্গালুরুতে তাঁর ৫০তম ডেভিস কাপ
টাইয়ে নামবেন লিয়েন্ডার পেজ। ভারতের
সর্বকালের সফলতম ডেভিসকাপার এক নজরে। |
|
|
ভারতীয় রেকর্ড |
মরসুম ২৩ |
টাই ৫০ |
ম্যাচ ১১৯ |
সিঙ্গলস ম্যাচ ৭০ |
ডাবলস ম্যাচ ৪৯ |
ডাবলস জয় ৩৯ |
ডাবলস পার্টনার ১০
(জিশান আলি, রমেশ কৃষ্ণন, গৌরব নাটেকর, মহেশ ভূপতি, সৈয়দ ফজলউদ্দিন,
বিশাল উপ্পল, সুনীল সিপাইয়া, রোহন বোপান্না, পূরব রাজা, সনম সিংহ) |
|
অভিষেক ১৯৯০ (১৬ বছর বয়সে) বনাম জাপান (চণ্ডীগড়ে)
(শুধু ডাবলস খেলেছিলেন বর্তমান ভারতীয় দলের
কোচ জিশান আলির পার্টনার হয়ে)
সিঙ্গলসে জয়-হার ৪৮-২২
ডাবলসে জয়-হার ৩৯-১০
ডাবলসে বিশ্বরেকর্ড মহেশ ভূপতির সঙ্গে পার্টনারশিপে টানা ২৪ ম্যাচ জয় (’৯৭ চেক টাই থেকে ২০১০ ব্রাজিল টাই পর্যন্ত)
|
সেরা তিন সিঙ্গলস জয় |
সেরা তিন ডাবলস জয় |
• অঁরি ল্যকত (ফ্রান্স) ’৯৩ ফ্রেজু ওয়ার্ল্ড গ্রুপ কোঃ ফাইনাল
• ওয়েন ফেরিরা (দক্ষিণ আফ্রিকা) ’৯৪ জয়পুর ওয়ার্ল্ড গ্রুপ প্রথম রাউন্ড
• গোরান ইভানিসেভিচ (ক্রোয়েশিয়া) দিল্লি ওয়ার্ল্ড গ্রুপ প্রথম রাউন্ড |
• মার্টিন ডাম-পের কোর্দা (চেক) ’৯৭ প্রাগ ওয়ার্ল্ড গ্রুপ প্রথম রাউন্ড
• নিকোলাস মাসু-মার্সেলো রিয়স (চিলি) ’৯৭ দিল্লি ওয়ার্ল্ড গ্রুপ প্রথম রাউন্ড
• ডোনাল্ড জনসন-জারেড পামার (যুক্তরাষ্ট্র) ২০০১ ক্যালিফোর্নিয়া ওয়ার্ল্ড গ্রুপ প্রথম রাউন্ড
(সব ম্যাচেই পার্টনার ভূপতি) |
|