ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
বৃদ্ধাবাস, স্কুলের জমিতে দাদাগিরি, উদাসীন পুলিশ
বৃদ্ধার বাড়িতে জল-সংযোগের জন্য তোলা দাবি থেকে শুরু করে বৃদ্ধাবাস গড়ার মতো কল্যাণকাজে বাধাদান। সর্বত্র দাপট সমাজবিরোধীদের। তবু পুলিশ নিষ্ক্রিয়, উদাসীন। কেন? ফের ক্ষোভ করল কলকাতা হাইকোর্ট। জানিয়ে দিল, দুষ্কৃতী হটিয়ে কল্যাণকাজের বাধা দূর করতে হবে পুলিশকেই।
অনাথ আশ্রম, দারিদ্রসীমার নীচের বাসিন্দাদের জন্য স্কুল, কলেজ ও বৃদ্ধাবাস গড়তে তিলজলায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে এক একর জমি দিয়েছিল কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি)। কিন্তু ওই জমিতে কোনও কাজ করতে দিচ্ছে না সমাজবিরোধীরা। পাঁচিল দেওয়ার জন্য তোলা স্তম্ভ ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের সর্বস্তরে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
শুক্রবার এই মামলায় বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি মুরারিপ্রসাদ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়ে বলে, গরিবদের জন্য একটি মহৎ প্রচেষ্টা কিছু সমাজবিরোধী বন্ধ করে দিতে চাইছে। তা সত্ত্বেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে পুলিশ। এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না।
এমনই এক দাদাগিরির শিকার হয়ে মার্চে হাইকোর্টের যান মিনতি ঘোষ নামে মুচিপাড়ার এক বৃদ্ধা। জলের পাইপ বসানোর সময় এলাকার কিছু দুষ্কৃতী মিনতিদেবীর কাছে ১০ হাজার টাকা তোলা চায়। তিনি তা দিতে না-পারায় তাঁর বাড়িতে পুরসভার জলের পাইপ বসানোর কাজ বন্ধ করে দেয় ওই সমাজবিরোধীরা। এই নিয়ে মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি। পরে হাইকোর্টে দেওয়ানি মামলা দায়ের করা হয়। তার শুনানিতে বিচারপতি জয়ন্ত বিশ্বাস বলেছিলেন, “আমি ওই অসহায় বৃদ্ধার কষ্টের কোনও সুরাহা করতে পারছি না বলে অত্যন্ত বিচলিত বোধ করছি।” মিনতিদেবীকে ফৌজদারি আদালতের দ্বারস্থ হতে বলেন তিনি। পরে আদালতের রায়ে মিনতিদেবীর বাড়িতে জলের লাইন বসে।
তিলজলায় দরিদ্র কল্যাণ প্রকল্পের মামলায় আবেদনকারীদের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য শুক্রবার বলেন, এই জমির লিজে সই করেছিলেন রাজ্যপাল। জমিতে স্কুল-কলেজ হলে সেখানে শুধু দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পড়ুয়ারাই নিখরচায় পড়তে পারবে। আর বৃদ্ধাবাসে থাকবেন দারিদ্রসীমার নীচে থাকা বৃদ্ধবৃদ্ধারা। এমন প্রতিষ্ঠান গড়তে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে যদি এ ভাবে নাজেহাল হতে হয়, সরকার ও প্রশাসনের সহায়তা যদি না-মেলে, তা হলে তো মানবিক কারণে কেউ আর পিছিয়ে থাকা মানুষের জন্য কিছু করতে আসবে না।
বিচারপতিরা রায় দিয়েছেন, ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যাতে নির্বিঘ্নে কাজ চালাতে পারে, কলকাতার পুলিশ কমিশনার, ডিসি (সাউথ-ইস্ট) এবং তিলজলা থানার ওসি-কে নিশ্চিত করতে হবে। বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি দণ্ডবিধি বা দেওয়ানি বিষয় এ-সব নিয়ে কূটকচালির সময় এটা নয়। পুলিশের উদাসীনতা, নিষ্ক্রিয়তায় দুষ্কৃতীরা উৎসাহিত হচ্ছে। দুষ্কৃতীরা জমির মালিককে এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছে না, কাজ করতে দিচ্ছে না হাইকোর্ট এটা বরদাস্ত করতে পারে না। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, নির্মাণকাজ চালানোর জন্য পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করতে হবে। তার জন্য সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছ থেকে কলকাতা পুলিশ টাকা নিতে পারবে না। পুলিশের কাজ মানুষের জীবন এবং সম্পত্তির অধিকার রক্ষা করা। দুষ্কৃতীদের উৎসাহিত করা নয়।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.