|
|
|
|
স্বতন্ত্র থানা হিসেবে কাজ করবে এসটিএফ
সুরবেক বিশ্বাস |
সন্ত্রাসবাদ, মাওবাদ, জাল নোটের কারবার এবং সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ও আন্তঃরাজ্য বিভিন্ন অপরাধ দমনে বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন বিভাগ স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) এ বার কলকাতা পুলিশের একটি স্বতন্ত্র থানা হিসেবে কাজ করবে। আগামী সোমবার, ৮ এপ্রিল স্বতন্ত্র থানা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে এসটিএফ।
এর ফলে কলকাতা পুলিশের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় কোনও মামলা রুজু করার ক্ষেত্রে এসটিএফ-কে এখন থেকে আর কোনও থানার উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে না। সে দিক থেকে গোটা দেশে সিবিআই কিংবা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি (এনআইএ)-র কাজের যেমন স্বাধীনতা, কলকাতার মধ্যেও এসটিএফ তেমন ক্ষমতা পেতে চলেছে।
যে ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ ও দমনে এসটিএফ কাজ করে, সেই সম্পর্কে অভিযোগ এখন থেকে সরাসরি নতুন এসটিএফ থানায় দায়ের করা যাবে। লালবাজারের মূল ভবনের চার তলায় এসটিএফের দফতর। এসটিএফ থানাও হচ্ছে সেখানেই। অন্যান্য থানার মতো এসটিএফ থানাও ২৪ ঘণ্টা কাজ করবে। লালবাজার সূত্রের খবর, সোমবার বিকেলে কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ এসটিএফ থানার উদ্বোধন করবেন।
এসটিএফ আলাদা থানা হওয়ায় সুবিধে কী হবে? লালবাজারের এক কর্তা বলেন, “সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোডে কোনও জাল নোটের কারবারিকে এসটিএফ বমাল গ্রেফতার করলে এখন নিউ মার্কেট থানায় ধৃতকে নিয়ে গিয়ে মামলা রুজু করতে হয় এবং তার পর আবার এসটিএফে ওই মামলা হস্তান্তরিত করতে হয়। এসটিএফ স্বতন্ত্র থানা হলে এ সব দীর্ঘসূত্রতা বন্ধ হবে, নিজেই তারা মামলা রুজু করতে পারবে।”
ওই কর্তার বক্তব্য, এসটিএফ যে স্তরে কাজ করে, তাতে গোপনীয়তা রক্ষা জরুরি। সাধারণ থানায় মামলা রুজু করতে হলে অনেক সময়েই সেটা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ, সেখানে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ নিয়ে যান। লালবাজার সূত্রের খবর, বেশ কিছু ক্ষেত্রে এসটিএফের অফিসারদের আদালতে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। কারণ, কোনও অফিসার তদন্তে বেরোলে নিয়ম অনুযায়ী সেটি থানার একটি জেনারেল ডায়েরি করে নথিবদ্ধ রাখার নিয়ম, তদন্ত করে ফিরে আসার ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা। এসটিএফ থানা হলে সেই অসুবিধেও দূর হবে বলে লালবাজারের কর্তারা মনে করছেন। এক অফিসারের কথায়, “নতুন থানা হলে এসটিএফের কাজ মসৃণ ও সহজ হবে।”
২০০৮-এর জুলাইয়ে যুগ্ম কমিশনার (এসটিএফ) নামে কলকাতা পুলিশে একটি নতুন পদ তৈরি হয় ও ওই কর্তার অধীনে বিভিন্ন বিভাগ ও ডিভিশন থেকে অফিসার কাজ শুরু করেন। সেই অর্থে তখনই এসটিএফের কাজ এক রকম শুরু। তবে ২০০৯ সালের নভেম্বরে রাজ্য সরকার এসটিএফ-কে পুরোদস্তুর একটি স্বতন্ত্র বিভাগের মর্যাদা দেয়। সরকারি অনুমোদন অনুযায়ী, বর্তমানে এসটিএফে এক জন যুগ্ম কমিশনার, এক জন ডেপুটি কমিশনার, দু’জন সহকারী কমিশনার, ১২ জন ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট মিলিয়ে ২৫ জন, চার জন এএসআই এবং ৭৫ জন কনস্টেবল রয়েছেন।
কাজ শুরু করা ইস্তক এখনও পর্যন্ত এসটিএফ বেশ কয়েক জন জঙ্গি, মাওবাদীদের রাজ্য কমিটির সম্পাদক ও সংগঠনের টেকনিক্যাল শাখার প্রধান-সহ তাবড় নেতা ও দু’বার সুব্রত বায়েনের মতো বাংলাদেশের কুখ্যাত অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে। গত পৌনে পাঁচ বছরে এসটিএফ পৌনে চার কোটি টাকার ভারতীয় জাল নোট আটক করেছে এবং গ্রেফতার করেছে একশোরও বেশি জাল নোটের কারবারিকে। |
|
|
|
|
|