ফের বড়সড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল শুক্রবার সকালে। এই নিয়ে গত দু’তিন দিনে জেলার পাঁচ জায়গায় আগুনে ২০০টির মতো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বাড়ি ক্ষতি হয়েছে ময়ূরেশ্বর থানা এলাকায়। এ দিন ওই থানার দুই গ্রামের প্রায় ৮০টি বাড়ি পুড়ে গিয়েছে। দমকল দেরিতে পৌঁছনোয় এত বড় ক্ষতি হয়েছে। এদিনই ইলামবাজারের দ্বারন্দায় ৩০টি বাড়ি আগুনের গ্রাসে পড়েছে।
বেলা ১১টা নাগাদ শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে টেকেড্ডা গ্রামের ব্লক কর্মী শিশির লেটের বাড়িতে। দমকা হাওয়ায় ওই আগুন ছড়িয়ে পড়ে লেটপাড়ার অন্যান্য বাড়িতে। প্রথমে বাসিন্দারা পাম্প চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। ১.২০ মিনিট নাগাদ রামপুরহাট থেকে দমকল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় ৬৫টি বাড়ি পুড়ে গিয়েছে। ঝড়ে দু’টি তার জুড়ে গিয়ে এই দুর্ঘটনা বলে জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দা ও ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কাজল সাহা। তবে দমকল ভুল করে সেকেড্ডার পরিবর্তে ঝিকড্ডায় চলে গিয়েছিল বলে দুর্ঘটনাস্থলে আসতে দেরি হয়েছে। |
এ দিনই ১টা নাগাদ উনুন থেকে আগুন ছড়িয়ে বাজিতপুরে স্কুলপাড়ায় ১৫টি বাড়ি পুড়ে গিয়েছে। বাজিতপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সৈয়দ কাসাফদ্দোজা বলেন, “সকলেই দিনমজুর পরিবার। ত্রাণের জন্য বিডিওকে জানানো হয়েছে। আপাতত রান্না করে খাবার দেওয়া হচ্ছে।” নিজেদের পোড়া বাড়ির সামনে বসে কপাল চাপড়াচ্ছিলেন বাজিতপুরের ঝিন্টু মাল, কালীপদ কর্মকার বলেন, “সব শেষ হয়ে গেল। কোনও রকমে দিন মজুরি করে আমাদের পেট চলে। এখন কী করব বুঝতে পারছি না।” ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের বিডিও বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, “দু’টি গ্রামে প্রায় ৮০টি বাড়ি পুড়েছে। ত্রাণ গ্রামে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।”
অন্য দিকে, দ্বারন্দার মালপাড়ায় বেলা ১০-৩০টা নাগাদ প্রথম ভৈরব মালের বাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। কিছু বোঝার আগেই বাতাসের তীব্রতায় পাশের তালগাছে আগুন ধরে। এর পর এক একটি বাড়ি আগুনের কবলে পড়ে। ওই গ্রাম-সহ আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা নারায়ণদাস পুকুরে পাম্প চালিয়ে আগু নেভানোর চেষ্টা করেন। কার্তিক পাল বলেন, “জমিতে কাজ করছিলাম। আচমকা আগুনের তাপ, আর পাড়ার চিত্কারে ছুটে গিয়ে দেখি এই অবস্থা।” বাসিন্দাদের ক্ষোভ, “সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হলেও দমকলের গাড়ি আসে প্রায় দু’ঘণ্টা পরে। সময় মতো এলে কিছু জিনিসপত্র হয়তো বাঁচানো যেত।” ঘটনার খবর পেয়ে ইলামবাজারের ওসি ত্রিদিব প্রামাণিকের নেতৃত্বে পুলিশ পৌঁছয়। বোলপুর দমকলকেন্দ্রের ওসি শেখ আব্বাস বলেন, “এক সময়ে একাধিক জায়গায় আগুন লাগার জন্য এই বিপত্তি। কর্মীর অভাব আছে। তবুও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। ইলামবাজারের যুগ্ম বিডিও বাবলু সাঁতরা বলেন, “আপাতত ২৬টি পরিবারের অস্থায়ী থাকার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” |