এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদ পানিশালার ১০০ একর জমির যে আনুমানিক দাম ধরেছে, তাতে অসন্তুষ্ট বেশ কয়েকজন চাষি।
সোমবার রায়গঞ্জের সাংসদ দীপা দাশমুন্সি সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন, রায়গঞ্জের পানিশালায় ওই জমির মোট অর্থমূল্য ২২ কোটি টাকা। ওই জমি সংগ্রহের জন্য জেলা পরিষদ সেই টাকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে। কিন্তু মঙ্গলবার রায়গঞ্জের পানিশালায় এইমসের জন্য প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত ওই জমির মালিকদের অন্যতম তফিল মহম্মদ, ইলিয়াস আলি, মজিব মহম্মদ ও ইসলামের মতো চাষিরা দাম নিয়ে তাঁদের অসন্তোষের কথা জেলা পরিষদকে জানিয়ে দেন। তফিল, ইলিয়াসরা বলেন, “জেলা পরিষদ ১০০ একর জমির দাম ধরেছে প্রায় ২২ কোটি টাকা। বিঘা প্রতি জমির দাম দাঁড়াচ্ছে প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা। ওই টাকায় জমি দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এখানে জমির বর্তমান বাজার দর চলছে বিঘা প্রতি ৯ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা। আশা করব, জেলা পরিষদ আমাদের কথা মাথায় রেখে পদক্ষেপ করবে।”
ঘটনাচক্রে, ওই চাষিরাই রায়গঞ্জে এইমসের জন্য স্বেচ্ছায় জমি দিতে আগ্রহী বলে জানিয়ে আন্দোলন করছে কংগ্রেস। তবু জমির দাম নির্ধারণের আগে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হল না কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন চাষিদের অনেকেই। দীপার অবশ্য বক্তব্য, “জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ আনুমানিক ভাবে জমির গড় দাম কত হতে পারে তা কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছেন। প্রয়োজনে জমির দাম বাড়লে কেন্দ্রীয় সরকার বেশি টাকা বরাদ্দ করবে।”
কিন্তু জেলা পরিষদ ওই দাম ঠিক করল কী ভাবে? জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোক্তার আলি সর্দার বলেন, “জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের আধিকারিকদের মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করানো হয়েছে। তবে জমির মান অনুযায়ী কোনও কোনও এলাকায় জমির দাম বেশিও হতে পারে।” জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব রেজিস্ট্রার নিমা শেরপা বলেন, “কী ভাবে ওই জমির মূল্যায়ন হয়েছে, তা এখন বলতে পারব না।”
বাম ও তৃণমূলের অভিযোগ, কংগ্রেস সাংসদ ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “চাষিরা শঙ্কিত। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এ কাজ করা হয়েছে।” সিপিআই নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়ও জানান, চাষিদের ঠকিয়ে জমি নেওয়ার চেষ্টা হলে আন্দোলনে নামা হবে।
|