এ বার হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেলেন মেদিনীপুর বালিকা হোমের এক কিশোরী। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ফিমেল ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল বছর ষোলোর ওই মেয়েটি। সোমবার সকাল থেকে তার খোঁজ মিলছে না। এই নাবালিকাই আরও তিন জনের সঙ্গে দোলের দিন সকালে হোম থেকে পালিয়ে ছিল। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। এ বার সে পালাল হাসপাতাল থেকে। হোম সুপার ভারতী ঘোষের বক্তব্য, “হাসপাতালে এক আবাসিক ভর্তি ছিল। সোমবার সকাল থেকে তার খোঁজ মিলছে না। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
গত বুধবার সকালে মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর বালিকা হোম থেকে চার জন নাবালিকা পালিয়ে যায়। তাদের এক জনকে ধাওয়া করে মেদিনীপুর স্টেশন থেকে ধরে আনেন হোম সুপার নিজে। অন্য এক জনকে উদ্ধার করে পুলিশ। বাকি দু’জনের এখনও খোঁজ মেলেনি। পুলিশ যে মেয়েটিকে উদ্ধার করেছিল, সে-ই এ দিন পালিয়েছে। হাসপাতাল থেকে হোমের আবাসিক পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা অবশ্য এই প্রথম নয়। গত ফেব্রুয়ারিতে অসুস্থ এক আবাসিকের দেখভালে এসে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল বছর একুশের এক তরুণী। হোম সূত্রে খবর, এ বার তাই হাসপাতালে ভর্তি আবাসিককে নজরে রাখতে পুলিশ মোতায়েনের আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের তরফে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
বছর ষোলোর ওই নাবালিকাকে গত তিন দিনের মধ্যে দু’দফায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত বুধবার রাতে পুলিশ তাকে উদ্ধার করার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছিল। শনিবার দুপুরে সুস্থ হয়ে সে হোমে ফেরে। কিন্তু রবিবার বিকেলে ফের তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। অভিযোগ, উদ্ধারের পর ওই নাবালিকাকে মারধর করা হয়েছিল। ফলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রথম দফা চিকিত্সার পর সুস্থ হয়ে ফিরলেও ওই কিশোরী ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছিল না বলে হোম সূত্রে জানা গিয়েছে। তাই তাকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হোম থেকে পালানোর ঘটনার যেমন নতুন নয়, তেমন আবাসিককে মারধরের অভিযোগও নতুন নয়। গত ফেব্রুয়ারিতে এক আবাসিককে মারধরের অভিযোগ ওঠে হোমেরই কয়েকজন সহ-আবাসিকের বিরুদ্ধে। প্রহৃত মেয়েটির মা লিখিত ভাবে অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম দত্তের কাছে অভিযোগ জানান। বারবার আবাসিক পালানোর ঘটনায় এক দিকে যেমন নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তেমনই হোমের পরিবেশ নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, এই সরকারি হোমের পরিবেশ যথাযথ রাখতে সব রকম ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।
|