মেসো থেকে শম্ভু, বহুরূপে সম্মুখে ‘পলাতক’ কাও
প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে শম্ভুনাথ কাওকে খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টা চালানোর পরে অবশেষে গোয়েন্দাদের উপলব্ধি, কাও কোথাও বেশি দিন থাকছেন না। কাওয়ের বারংবার আশ্রয় বদলের সময়ে সঙ্গে থেকেছে তাঁর পরিবারও। অর্থাৎ, সপরিবার আস্তানা বদল করলেও পুলিশ টের পায়নি। তদন্তে সামিল এক পুলিশকর্তা সোমবার বলেন, “শম্ভুনাথ এমন জায়গায় লুকিয়ে থাকছেন, যা আমাদের পক্ষে আগে জানা সম্ভব হচ্ছে না। যখন আমরা জানতে পারছি, ততক্ষণে পাখি উড়ে যাচ্ছে।”
শম্ভুনাথ কাওকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ শনিবার রাতে মহেশতলার জিঞ্জিরাবাজার থেকে তাঁর শ্যালিকার ছেলে দেবাশিস সরকারকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, দেবাশিসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, ধাপা-কাণ্ডের দিন শম্ভু প্রথমে নিজের গাড়িতে ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন। পরের দিন শিয়ালদহের কামারডাঙা থেকে পুলিশ ওই গাড়িটি উদ্ধার করে আনে। পরে তিনি জিঞ্জিরাবাজারে শ্যালিকার ছেলের বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন।
নাম শুনে যাতে কেউ চিনতে না পারে, তাই শুধু ‘মেসো’ পরিচয় দিয়ে শম্ভুনাথ কাওকে বন্ধুর বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন ধৃত দেবাশিস সরকার। পুলিশ জানতে পেরেছে, দেবাশিস তার বন্ধুর পরিবারকে মেসোর নাম বলেছিলেন ‘শম্ভু’। অর্থাৎ, পদবীটি বলেননি। পুলিশকর্তাদের অনুমান, শম্ভুনাথ কাও এখন পরিচিত নাম। নাম শুনে চিনে ফেলতে পারে যে কেউ। তাই মেসোর পুরো পরিচয় দেননি।
দেবাশিস পুলিশকে বলেছেন, তাঁর বাবা অসুস্থ। তা ছাড়া, বাড়িতে জায়গা নেই। তাই পাশে বন্ধুর বাড়িতে শম্ভুর দু’দিন থাকার ব্যবস্থা করেন তিনি। ওই দু’দিন শম্ভু বাড়ি থেকে বেরোননি বলে তদন্তকারীরা জানতে পারেন। ঘটনার পরের দিন শম্ভুনাথের ঘনিষ্ঠ পিন্টু নামে এক যুবক তাঁর মোটরবাইকটি ধাপার বাড়ি থেকে পৌঁছে দেয় জিঞ্জিরাবাজারের আশ্রয়ে। অবশ্য শম্ভুনাথ আর ওই বাইকটি ব্যবহার করেননি। শনিবার রাতে শম্ভুনাথের ওই মোটরবাইকটি উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, শম্ভুনাথ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠেরা কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কথা বলছেন না। পুলিশের অনুমান, নিজেদের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার না করলেও সকলেই নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখছেন।
এ দিকে, অবিলম্বে পলাতক শম্ভুনাথ কাওকে গ্রেফতারের দাবি তুলল বামফ্রন্ট। সেই সঙ্গে কী করে কাও এত নগদ টাকা জমালেন ও সোনা কিনলেন, তা নিয়েও তদন্তের দাবি করা হয়েছে। সোমবার বামফ্রন্টের বৈঠকের পরে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ সত্ত্বেও এখনও কাও গ্রেফতার হননি। নির্বাচিত তৃণমূল কাউন্সিলর দুর্নীতি থেকে শুরু করে একের পর এক বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। সাংঘাতিক অবস্থা! যাঁরা নিজেদের সততার প্রতীক বলে দাবি করেন, তাঁরা কী করে নগদ ৫৯ লক্ষ টাকা ও ৫৬ ভরি সোনা অন্যের কাছে জমিয়ে রাখেন, তাঁদের এ সবের উৎস কোথায়, তা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।” কাও যে ভাবে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাতে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ‘লোক দেখানো’ বলেও মন্তব্য করেন বিমানবাবু।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.