ইনফোসিসের জন্য বিকল্প প্রস্তাব খুঁজতে অবশেষে তথ্যপ্রযুক্তি কমিটির দ্বারস্থ হতে পারে রাজ্য। যে-কমিটির মাথায় রয়েছেন ইনফোসিসের প্রাণপুরুষ নারায়ণমূর্তি। তবে ঢাকঢোল পিটিয়ে তৈরি এই কমিটির প্রথম বৈঠকের পরে গত দেড় বছরে আর কোনও বৈঠক হয়নি। নারায়ণমূর্তি, স্যাম পিত্রোদা-সহ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের রথী-মহারথীদের নিয়ে তৈরি কমিটির দেখানো দিশায় তৈরি হয়েছে নয়া নীতি। কিন্তু ওই পর্যন্তই।
অভিযোগ, শিল্পমহলের প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি ওই কমিটিকে সে ভাবে কাজেই লাগানো হচ্ছে না। লগ্নি টানতে যে-সব বিষয় বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সে নিয়েও কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসেনি রাজ্য। যেমন বিশেষ আর্থিক অঞ্চল জটে আটকে থাকা ইনফোসিস ও উইপ্রোর প্রকল্প নিয়ে এই বিশেষ কমিটির কাছ থেকে কোনও পরামর্শ চায়নি রাজ্য। কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য “পরামর্শ দিলেই তা নিতে হবে এমন কোনও কথা নেই। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র বেরিয়েও আসতে পারত।”
সেই ভুল অবশ্য এ বার শুধরে নিতে চায় রাজ্য সরকার। শিল্প তথা তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, নীতি ঘোষণা করা হয়েছে। ‘ইনসেনটিভ’ বা আর্থিক সুবিধা সংক্রান্ত নীতিও তৈরি হয়েছে। ফলে এই কমিটির বৈঠক ডাকার প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু সেজ সংক্রান্ত জট ছাড়াতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের পরামর্শ নিতে কমিটির বৈঠক ডাকা হতে পারে বলে তিনি জানান।
২০১১-র সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম বৈঠক করেন কমিটির সদস্যরা। সেই বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন নারায়ণমূর্তি। এর পরে তৈরি হয় পরিকাঠামো, বিনিয়োগ গন্তব্য, ছোট ও মাঝারি সংস্থার প্রয়োজনীয়তা-সহ বিভিন্ন বিষয়ের জন্য সাব কমিটি। সাব কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তৈরি হয় তথ্যপ্রযুক্তি নীতির কাঠামো।
এর পর কমিটির সদস্যদের পরামর্শ মেনে নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতিও তৈরি হয়েছে। কিন্তু ছ’মাস পরেও সেই নীতি বাস্তবে কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে, তা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। ফলে ‘তারকা-খচিত’ তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা কমিটির অভ্যন্তরে প্রশ্ন উঠেছে, শুধু মাত্র খাতায়-কলমে অস্তিত্ব রেখে কী লাভ? এক সদস্যের অভিযোগ, নীতি কতটা কার্যকরী হয়েছে, তা না-জানতে পারলে পরের ধাপের কাজ শুরু সম্ভব নয়।
অথচ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে এক নম্বর জায়গা দখলের স্বপ্ন পূরণ করতেই শীর্ষ ‘কৌশলী’দের একজোট করে উপদেষ্টা -মণ্ডলী তৈরি করে রাজ্য। কমিটিতে নারায়ণমূর্তি, পিত্রোদা ও ন্যাসকমের প্রাক্তন প্রধান কিরণ কার্নিক ছাড়াও আছেন কেপিএমজি-র অম্বরীশ দাসগুপ্ত, ডেলয়েটের জয়দীপ দত্তগুপ্ত, ইনফিনিটি নলেজ ভেঞ্চার্স-এর কল্যাণ কর-সহ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বিভিন্ন প্রতিনিধি।
|