|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
শিকড়ের দিকে পুনর্যাত্রা |
বইপোকা |
বাঙালি বিস্মৃতিপ্রবণ অথবা আত্মবিস্মৃত জাতি বলিয়া প্রায়শ নিন্দিত হইয়া থাকে। আধুনিক বঙ্গসাহিত্য যতটা বিদেশি ভাষার সাহিত্য-প্রভাবিত সেই তুলনায় প্রাচীন বঙ্গসাহিত্যের দিকে তাহার নজর নাই এমন অভিযোগও প্রায়শ শুনা যায়। কিন্তু অতি সাম্প্রতিক বাংলা উপন্যাসের ধারাটি বিচার করিলে দেখা যাইবে এমনতর অভিযোগ সর্বাংশে সত্য নহে। সমসাময়িক উপন্যাস এক্ষণে অনেক ক্ষেত্রেই আখ্যানবস্তুর জন্য প্রাচীন বঙ্গসাহিত্যের দ্বারস্থ হইতেছে। দ্বারস্থ কথাটির মধ্যে একটি শরণ লইবার ভাব আছে, কিন্তু আপাতত সেই লইয়া তর্ক তুলিয়া রাখা যাউক।
দুইটি উপন্যাসের সূত্রে সম্প্রতি দেখিতেছি প্রাচীন বঙ্গসাহিত্যের একপ্রকার যেন নবজন্ম ঘটিতেছে। একুশ শতকীয় কথাসাহিত্যে চর্যাগীতির কবি কাহ্ন-র পুথিপত্রে বিবর্ণ হইয়া পড়া জীবনকে রক্তমাংস-সহ নবজীবিত করিয়াছেন শিবাশিস মুখোপাধ্যায়, তাঁহার কাহ্ন (সপ্তর্ষি) উপন্যাসে। এ বঙ্গে এমনতর কাজ এই প্রথম। আবার চণ্ডীমঙ্গলের ধনপতি-উপাখ্যান লইয়া রামকুমার মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস ধনপতির সিংহলযাত্রা (মিত্র ও ঘোষ) সেই সময়ের কাহিনির বিনির্মাণ করিয়াছে আধুনিকতার প্রেক্ষাপটে। বর্তমান সময় জমজমাট আখ্যানের জন্ম দিতে পারিতেছে না বলিয়াই এই উজান-যাত্রা কি না সে তর্ক এ স্থলে অবান্তর। বাংলা উপন্যাস প্রাচীন বঙ্গসাহিত্যের শিকড় পুনর্বার উন্মোচন করিতেছে ইহা আশার কথা, আনন্দেরও। |
|
|
|
|
|