যন্ত্রে ফুঁয়ে গন্ধবিচার, দু’দিনে গ্রেফতার সাড়ে চারশো মদ্যপ
ন্ধবিচারে দড়। তবে রাজসভার ‘বৃদ্ধ নাজির’ নয়, যন্ত্র। যন্ত্রের মাথায় নল। আর সেই নলে ফুঁ দিলেই বোঝা যাবে, গন্ধটা ‘মন্দ’, থুড়ি মদের কি না। রক্তে অ্যালকোহলের মাত্রা পরিমিতির বাইরে কি না। এ বারের দোলে উত্তর ২৪ পরগনার রাস্তায় অসংযত মদ্যপায়ীদের মধ্যে ‘ফুঁ-আতঙ্ক’ ছড়ানোয় বড় ভূমিকা নিয়েছে ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’।
দোলের আগের দিন থেকে জেলা পুলিশ রাস্তায় নামিয়েছে মোবাইলের থেকে একটু বড় মাপের এই যন্ত্র। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “ওই যন্ত্রের দৌলতে শুধু দোলের দিনেই ধরা গিয়েছে দু’শোরও বেশি জনকে। আর মঙ্গল ও বুধবার মিলিয়ে ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে চারশো জন মদ্যপকে।” ধৃতদের জরিমানা হয়েছে, জেলও হয়েছে অনেকের।
চলছে ফুঁ পরীক্ষা। বারাসতের কেএনসি মোড়ে ছবি তুলেছেন সুদীপ ঘোষ।
কলকাতা শহরে ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’ অবশ্য নতুন নয়। তবে এ বছরের মার্চের আগে পর্যন্ত তার সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। মার্চ থেকে কলকাতার প্রত্যেক ট্রাফিক গার্ড ওই যন্ত্র পেয়ে গিয়েছে। ভিন্‌-রাজ্যেও চালু রয়েছে ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’। কর্মসূত্রে হরিয়ানার গুড়গাঁওতে নিয়মিত যাতায়াত করা এক বহুজাতিক সংস্থার কর্তার অভিজ্ঞতা, “গুঁড়গাওতে এই যন্ত্র চালু হয়েছে বছরখানেক আগেই। প্রায় প্রতিটি মোড়েই ট্রাফিক পুলিশের হাতে এই যন্ত্র দেখেছি। ওখানে যে দিন অফিসে পার্টি-ঠার্টি থাকে, সে দিন আমি নিজে গাড়ি না চালিয়ে সঙ্গে চালক নিয়ে যাই।”
দোল বা তার আগের দিন গতিবিধি ‘সন্দেহজনক’ ঠেকলেই গাড়ি বা মোটর বাইক থামাতে বাধ্য করে চালকের মুখে ধরা হয়েছে যন্ত্রের নল। এই পরীক্ষায় থাকা এক পুলিশ-কর্তার কথায়, “আগে কাউকে সন্দেহ হলে হাসপাতালে পাঠিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষার পরে মদ্যপ বলে প্রমাণ করা যেত। এখন যাঁদের আমরা সন্দেহ করছি, তাঁদের মুখে নল ঢুুকিয়ে যন্ত্র চালু করতেই চড়াত করে মিটারের কাঁটা কয়েক ডিগ্রি ঘুরে জানিয়ে দিচ্ছে, ঠিক ভেবেছি আমরা। অনেক ঝামেলা থেকে রেহাই দিয়েছে এই যন্ত্র।”
এসডিপিও (বারাসত) সুবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বারাসতে গত বছর দেড়েকে যে ক’টি অপরাধের ঘটনা ঘটেছে, সেগুলির মধ্যে অনেক ক’টিতেই অভিযুক্তেরা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। দোলের দিন এই যন্ত্রের দৌলতে শুধু বারাসত থেকেই অনেককে ধরা গিয়েছে।” পুলিশের দাবি, শুধু দোলের দিনই মদ্যপান করে গাড়ি চালানোয় অভিযুক্তদের কাছ থেকে আটক করা হয়েছে ৫৪টি মোটরবাইক এবং ৩০০ লিটার মদ।
গন্ধবিচার এড়াতে মরিয়া লোকজন ইতিমধ্যেই নানা পন্থার খোঁজে রয়েছে। কিছু পুলিশকর্মীর অভিজ্ঞতা, “মদের গন্ধ ঢাকতে মুখে প্যাকেটের পরে প্যাকেট পানমশলা ঢেলে এসেছিল কিছু কলেজের ছেলে। লাভ হয়নি। যন্ত্র ঠিক ধরে ফেলেছে।”
মদ্যপান করে পথে অসংযতদের জন্য ‘ফুঁ-আতঙ্ক’ থাকছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.