দীপক ভরদ্বাজ হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তিন জন ভাড়াটে খুনিকে বৃহস্পতিবার আটক করল দিল্লি পুলিশ। যে স্কোডা গাড়িতে করে আততাতীরা এসেছিল সেটিও খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার দক্ষিণ দিল্লির রাজোকরি এলাকার নিজের খামারবাড়িতে রহস্যজনক ভাবে খুন হন বিতর্কিত ওই বহুজন সমাজ পার্টির (বসপা) নেতা।
দিল্লির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) ছায়া শর্মা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে তদন্ত চলছে। নিহত নেতার স্ত্রী এবং ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বেশ কয়েক মাস আগেই দীপকের স্ত্রী তাঁর ছোট ছেলে নীতীশের বাড়িতে থাকতে চলে যান। দীপকের খামারবাড়ির রক্ষীদেরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, খুনের পর খামারবাড়ি থেকে স্কোডা গাড়িটি নিয়ে বেরোনোর পর কিছু দূর গিয়ে একটি স্যান্ট্রো গাড়িতে চড়ে পালিয়ে যায়।
বুধবার দীপক ভরদ্বাজের দেহ এইমসে ময়না-তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। দু’টি গুলি পাওয়া গিয়েছে তাঁর দেহ থেকে। এই হত্যাকাণ্ড মনে করিয়ে দিচ্ছে গত ১৭ ডিসেম্বরে পন্টি চাড্ডার খুনের ঘটনাটি। দিল্লিরই এক খামারবাড়িতে গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী।
খামারবাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছে। সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, গুলি চালানোর পর তিন আততায়ীর এক জন স্কোডায় বসে। বাকি দু’জন রিভলভার হাতে মূল ফটক খুলছে। এবং তার পর গাড়িতে উঠে পড়ে ওই দু’জন। পুলিশের ধারণা, ওই তিন জনই ভাড়াটে খুনি। নিহত বসপা নেতার ফোনের কললিস্টও পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
তথ্য বলছে, ২০০৯ সালে যখন বসপার টিকিটে পশ্চিম দিল্লি নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি, তখন তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ছ’শো কোটি টাকারও বেশি। হোটেল, নির্মাণ ব্যবসা-সহ একাধিক ব্যবসা ফাঁদেন দীপক। শুরুর দিকে কিন্তু সাধারণ স্টেনোগ্রাফার ছিলেন তিনি। পরে চাকরি ছেড়ে প্রথমে গাড়ির যন্ত্রাংশ ও পরে জমির কারবার শুরু করেন। ব্যবসা বাড়ার পর দিল্লিতে একের পর এক খামারবাড়ি কিনতে শুরু করেন দীপক। শুরু হয় চাষের জমি কেনাও। মূলত পশ্চিম দিল্লিতেই বাড়তে থাকে তাঁর প্রতিপত্তি। তবে অল্প কয়েক বছরের মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে ওঠা দীপককে ঘিরে ছিল নানা বিতর্ক। সম্পত্তি নিয়ে আর্থিক প্রতারণা ছাড়াও দু’টি ফৌজদারি মামলাতেও জড়ায় ওই বসপা নেতার নাম।
|