দুর্ঘটনায় মৃত ডাক্তার দম্পতি
ম্যাসাঞ্জোর থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক চিকিৎসক দম্পতির। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলায়। ওই দম্পতি হাওড়ার বালির বাসিন্দা ছিলেন। পুলিশ জানায়, তাঁদের নাম কল্যাণ বিশ্বাস (৫৪) ও মালবিকা বিশ্বাস (৪৯)।
পুলিশ সূত্রের খবর, বালি কালীতলা এলাকার একটি আবাসনে থাকেন ওই দম্পতি। কল্যাণবাবু স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ এবং তাঁর স্ত্রী মালবিকাদেবী শিশু বিশেষজ্ঞ। তাঁদের এক মাত্র ছেলে গোয়ায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন। দোল উপলক্ষে গত ২৬ মার্চ, মঙ্গলবার বিকেলে শান্তিনিকেতনে গিয়েছিলেন ওই দম্পতি। পরের দিন ২৭ মার্চ সকাল ৯টার সময় সেখান থেকে একটি গাড়ি ভাড়া নিয়ে তাঁরা ম্যাসাঞ্জোর বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময়ই ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলার রঘুনাথপুর মোড়ের কাছে বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ দুমকা-সিউড়ি রোডে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কল্যাণবাবুর। পরে রাতে সিউড়ি সদর হাসপাতালে মালবিকাদেবীও মারা যান। তবে ভাড়া গাড়ির চালক বেঁচে গিয়েছেন। শেখ জাকির নামে ওই চালককে গ্রেফতার করেছে দুমকার রানিশ্বর থানার পুলিশ।
শেখ জাকিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রানিশ্বর থানার পুলিশ জেনেছে যে, ম্যাসাঞ্জোর থেকে বেরিয়ে তাঁরা বোলপুরেই ফিরছিলেন। দুমকা জেলার রঘুনাথপুর মোড়ে কাছেই আচমকা তাঁদের টাটা ইন্ডিকা গাড়িটির সামনে একদল ছাগল এসে পড়ে। তাদের বাঁচাতে গিয়ে তীব্র গতিতে চলা গাড়ির ব্রেক কষতে হয়। কিন্তু গাড়ি না দাঁড়িয়ে সোজা রাস্তার পাশের গাছে সজোরে ধাক্কা মারে।
গাড়িটির সামনের দিকটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। তার পরেই সেটি পাক খেয়ে আর একটি গাছে ধাক্কা লাগলে গাড়িটির পিছন দিকটিও দুমড়ে যায়। গাড়ির দরজা খুলে প্রায় ১০ ফুট দূরে ছিটকে পড়েন কল্যাণবাবু এবং মালবিকাদেবী ছিটকে পড়েন প্রায় পাঁচ ফুট দূরে। আহত দুই জনকে একটি গাড়িতে চাপিয়ে প্রায় ২৫ কিমি দূরে সিউড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ঘটনার পরে শেখ জাকির পালানোর চেষ্টা করলে রঘুনাথপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারাই তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে রঘুনাথপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, দুমকা-সিউড়ি রোডের ডান দিকে পড়ে রয়েছে দোমড়ানো গাড়িটি। ঘটনাস্থলে এসে বিজেপি-র রানিশ্বর ব্লকের সভাপতি বিশ্বজিৎ সরকার বললেন, “গাড়ির ভিতরটা দেখে বোঝাই যাচ্ছে না দুর্ঘটনা হয়েছে।” তবে সিউড়ি সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরে কল্যাণবাবুকে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। মালবিকাদেবীকে সেখানেই ভর্তি করা হয়। রাত পৌনে ৮টা নাগাদ তিনিও মারা যান বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। বুধবার খবর পেয়ে সিউড়ি সদর হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন শ্রমজীবী হাসপাতালের কর্মী, চিকিৎসকেরা।
বালি কালীতলায় ৬৩ নম্বর জিটি রোডে শ্যাম অ্যাপার্টমেন্টে কল্যাণবাবুদের একতলার ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা গেল, সেখানেও ভিড় জমিয়েছেন প্রতিবেশী, আত্মীয়েরা।
বাড়িতে রয়েছেন মালবিকাদেবীর বৃদ্ধ মা-বাবা ও ১৯ বছরের ছেলে ময়ূখ। বুধবার দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি বাড়ি এসেছেন। তাঁরা তখনও জানেন না কল্যাণবাবু ও মালবিকাদেবী মারা গিয়েছেন। কল্যাণবাবু বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মালবিকাদেবী বালি, বেলুড় ও লিলুয়া এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় শিশু চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.