মেঘলা চিতাবাঘের মৃত্যু ঘিরে কাঠগড়ায় বন দফতর
কার গাফিলতিতে মারা গেল বিরল মেঘলা চিতাবাঘ তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দিলেন রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল সুরেশ চাঁদ। গত কাল সকাল ৮টা নাগাদ, দক্ষিণ কামরূপের বরঝারে মেঘলা চিতাবাঘটিকে প্রথম দেখা যায়। গ্রামবাসীদের তাড়ায় সে পালায়। পরে লোহারঘাট এলাকায় একটি বাঁশঝাড়ে ফের মেঘলা চিতাটির দর্শন পায় গ্রামবাসীরা। এই এলাকায় বিরল মেঘলা চিতাবাঘের দেখা মেলেনি। খবর দেওয়া হয় বনবিভাগকে। চিড়িয়াখানা থেকে পশুচিকিৎসক এম এল স্মিথের নেতৃত্বে একটি দল এলাকায় হাজির হন। তখন চিতাবাঘটি একটি বাঁশ গাছের উপরে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানেই তাকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। বাঁশ গাছের মাথায়, মাটি থেকে প্রায় ৪০ ফুট উপরে ঘুমিয়ে পড়ে মেঘলা চিতাবাঘটি। কিছুক্ষণ পরে উপর থেকে আছড়ে পড়ে নীচে। চিড়িয়াখানায় আনার পথেই তার মৃত্যু হয়। স্মিথ বলেন, “সম্ভবত উপর থেকে পড়ার ফলেই মেঘলা চিতাবাঘটির মৃত্যু হয়।”
কিন্তু প্রশ্ন তুলেছেন খানাপাড়া পশু চিকিৎসালয়ের বিশেষজ্ঞরা এবং অন্যান্য পশুপ্রেমী সংগঠনের চিকিৎসকরা। তাঁদের বক্তব্য, পুরো প্রক্রিয়াটিতেই বন দফতরের একাধিক ভুল হয়েছে। পশু চিকিৎসক অঞ্জন তালুকদার এমন বহু চিতাবাঘ, বাঘ, গন্ডারকে ঘুম পাড়িয়েছেন। তিনি বলেন, “কখনওই গাছের উপরে, বিশেষত শাখা-প্রশাখাহীন বাঁশ গাছের উপরে থাকা চিতাবাঘকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়তে নেই। সময় দিলে তারা নিজেরাই পালায়। মেঘলা চিতাবাঘটি অন্ধকার হলে এমনিই সরে যেত।” কিন্তু স্মিথের দলের দাবি, এলাকায় বহু মানুষ জড়ো হয়েছিল। চিতাবাঘটিকে ঘুম না পাড়ালে সে মানুষের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারত। সে ক্ষেত্রে জনরোষের বলি হতে হত তাকে। তা আটকাতেই ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। অঞ্জনবাবুর মতে, “প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল গ্রামবাসীদের সরিয়ে রাখা। পুলিশ বা প্রশাসন বার বার এই কাজে ব্যর্থ হবে বলে নিয়ম ভেঙে গুলি চালাতে হয়েছে---এই যুক্তি কিছুতেই মানা যায় না। সঠিকভাবে জাল পাতা থাকলেও বাঘটি মরত না।”
সর্বোপরি স্মিথের দলের এক সদস্য কার্যত মেনে নেন, তাঁরা গাছের উপরে থাকা প্রাণীটিকে চিনতে ভুল করেছিলেন। সেটিকে সাধারণ চিতাবাঘ ভাবা হয়েছিল। তাই ঘুমের ওষুধের ডোজও বেশি দেওয়া হয়। কিন্তু মেঘলা চিতাবাঘ সাধারণ চিতাবাঘের তুলনায় ছোট ও দুর্বল হয়। তারা চট করে আক্রমণও করে না। পশু চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের চিকিৎসকদের ধারণা, চিতাবাঘ ভেবে মেঘলা চিতাবাঘটিকে ঘুমপাড়াতে বেশি ডোজের ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। যা সে সহ্য করতে পারেনি। ঘটনার যথাযথ তদন্ত দাবি করেছেন তাঁরা। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল সুরেশ চাঁদ জানান, ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ার পরে কী ভাবে মেঘলা চিতাবাঘটি মারা গেল তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.