গুলতির গুঁতোয় পালাল গন্ডার, রক্ষা বনকর্তার
ন্ডারের গুঁতো থেকে বনকর্তাকে বাঁচাল গুলতির গুলি।
হাতির পিঠ থেকে মাটিতে পড়ে গিয়েছেন ডিএফও ও বনরক্ষী। ছিটকে গিয়েছে রাইফেল। মাথা লক্ষ্য করে ধেয়ে আসছে গন্ডারের খড়্গ। সেই মোক্ষম সময়ে অব্যর্থ নিশানায় ছোড়া মাহুতের গুলতির পাথর গিয়ে লাগল গন্ডারের মাথায়। খানিকটা ভ্যাবাচাকা খেয়ে, খানিকটা পাথুরে গুলির আঘাতে গন্ডার থমকে গেল। তারপর তাকে ধাওয়া করে আরও দূরে হটিয়ে দেয় হস্তিনী মণিমালা। প্রাণে বাঁচলেন বিশ্বনাথ চারিয়ালির ডিএফও অনিরুদ্ধ দে এবং বনরক্ষী পবিত্র বসুমাতারি। আজ কাজিরাঙায় গন্ডার সুমারির সময় এই কাণ্ড ঘটে।
গন্ডারের গুঁতোয় জখম ডিএফও অনিরুদ্ধ দে। —নিজস্ব চিত্র।
আগামী কালও কাজিরাঙায় গন্ডার সুমারি হওয়ার কথা। ২০০৯ সালে কাজিরাঙায় গন্ডারের সংখ্যা ছিল ২০৪৮টি। গত বছর সংখ্যাটি দাঁড়ায় ২২৯০। গত একবছরে নাগাড়ে গন্ডার হত্যার জেরে পশুপ্রেমীরা কাজিরাঙার গন্ডারের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছিলেন। তাই, ফের এই বছর সুমারি হচ্ছে। চলতি বছরে কাজিরাঙায় ইতিমধ্যেই ১০টি গন্ডারকে শিকারিরা মেরে ফেলেছে। ৬টির স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে। তবে বনকর্তাদের আশা, সুমারির প্রথম দিনে যে পরিমাণ গন্ডারশাবক দেখা গিয়েছে, তাতে গন্ডারের সংখ্যা কমা দূরের কথা অনেকটাই বেড়েছে। জঙ্গলকে ৭০টি ভাগে ভাগ করে শুরু হয় গণনার কাজ। এই প্রথম অন্যান্য ডিভিশনের বনকর্তা ও কর্মীরাও সুমারির কাজে অংশ নেন। সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ শুরু হয় গণনা। তার ঘণ্টা দেড়েক পরেই ঘটনাটি ঘটে।
জখম ডিএফও অনিরুদ্ধবাবু ফোনে বলেন, “পৌনে আটটা নাগাদ আমরা বাগোরি রেঞ্জের কালিয়া বিলের কাছাকাছি পৌঁছই। মণিমালা নামে হাতিটির উপরে আমি ছাড়াও ছিলেন বনরক্ষী হেমচন্দ্র দত্ত। মাহুত ছিলেন পবিত্র বসুমাতারি। বিলে একাই একটি বয়স্কা গন্ডার ঘুরছিল। সাধারণত গন্ডার এমন তাড়া করে আসে না। কিন্তু এ দিন স্ত্রী-গন্ডারটি কোনও কারণে ধেয়ে এলে দত্ত এক রাউন্ড গুলি চালান। মণিমালাও গন্ডারকে তাড়া দেয়। প্রথমে সরে গেলেও পরে ফের পিছন থেকে গন্ডারটি মণিমালাকে আক্রমণ করে। দত্তবাবু ফের গুলি চালান। গন্ডারটি তাতেও দমেনি। এরপর মণিমালা গন্ডারের দিকে ধেয়ে গেলে আমি ও দত্তবাবু উপর থেকে পড়ে যাই।” ডিএফও ও রক্ষী নীচে পড়ে গিয়েছেন দেখে মাহুত চটজলতি সঙ্গে থাকা গুলতি বের করে গন্ডারের মাথা লক্ষ্য করে একের পর এক গুলতির গুলি ছুড়তে থাকেন। কাজিরাঙার নিরস্ত্র মাহুতদের কাছে সর্বদাই গুলতি থাকে। মণিমালাকেও গন্ডার ও ডিএফওর মধ্যে দাঁড় করিয়ে দেন মাহুত। গুলতির গুলি আর মণিমালার তাড়ায় শেষ অবধি পিছু হটে গন্ডার। হেমচন্দ্র দত্তকে যোরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অনিরুদ্ধবাবু চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটি আসেন।
মণিমালা ও তাঁর মাহুতের বীরত্বের ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে, ২০১১ সালের ২১ মার্চ, বাগোরি রেঞ্জে কলকাতার চার জন পর্যটককে নিয়ে ঘোরানোর সময় মণিমালা দুই শাবক-সহ এক রয়্যাল বেঙ্গলের মুখোমুখি পড়ে। সে বারেও পবিত্রবাবুর উপস্থিত বুদ্ধি ও মণিমালার সাহসে পর্যটকেরা প্রাণে বাঁচেন। অন্য দিকে, কাজিরাঙা থেকে মানসে প্রতিস্থাপিত একটি গন্ডারের বাচ্চা হয়েছে। মা ও সন্তান আপাতত সুস্থ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.