দলের কিছু নেতা থানার ওসিদের ভয় দেখাচ্ছেন, জেলাশাসক-পুলিশ সুপার স্তরের আধিকারিকদের উপরে চাপ সৃষ্টি করছেন বলে মেনে নিলেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী।
শনিবার মালদহে সত্য চৌধুরী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে জেলা শ্রমিক সংগঠনের প্রকাশ্য সভায় দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সামনে পর্যটনমন্ত্রী বলেন, “আমার কাছে খবর আছে, দলের কিছু নেতা থানার ওসিকে চমকাচ্ছেন। বিডিও, ডিএম, এসপি-কেও ধমকধামক দিচ্ছেন। ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার আগে সিপিএমের যে ব্যাধি হয়েছিল, আমাদেরও সেই ব্যাধি ধরেছে।”
এর পরেই দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি কৃষ্ণেন্দুর বার্তা, “আমরা ক্ষমতায় আছি বলে ডিএম-এসপি চাকরবৃত্তি করবেন, এটা ভাবা ঠিক নয়। পুলিশ-প্রশাসন নিজেদের মতো কাজ করবে।” তাঁর সংযোজন, “কোনও অসুবিধা হলে আমাদের বলুন। আমরা প্রশাসন, পুলিশের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করব। তৃণমূলের নাম করে কাউকে চমকাবেন না।”
দলের নাম করে হুমকি-শাসানির রাজনীতি যে তাঁর না-পসন্দ, কর্মী-সমর্থকদের অনেক বার, অনেক ভাবে সে বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নেত্রীর সে বার্তা যে দলের নিচুতলা পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না এ দিন পর্যটনমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট। রাজ্যের প্রেক্ষিতেই কি দলের নেতা-কর্মীদের এই বার্তা দিলেন? কৃষ্ণেন্দুর জবাব, “আমি জেলা থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতেই কথা বলেছি। প্রশাসনের মাথায় যেখানে মুখ্যমন্ত্রী, সেখানে কোনও প্রশাসনিক আধিকারিককে অসম্মান করলে মুখ্যমন্ত্রীই হেয় হন।” রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একটা বড় অংশের ধারণা, দলের রাজ্য সভাপতির উপস্থিতিতে কৃষ্ণেন্দুর এই বার্তায় ‘রাজ্যওয়াড়ি’ তকমা পড়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। কারণ, একই মঞ্চ থেকে সুব্রত বক্সীও দলের নেতা-কর্মীদের বলেছেন, “দলের ছত্রছায়ায় কেউ অসামাজিক কাজ করলে, দল রেয়াত করবে না।” সম্মেলনে হাজির শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেনও জোর করে চাঁদা আদায় বন্ধ করতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। |