উত্তরবঙ্গের দুই বড় মাপের নেতা শনিবার যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। তাঁদের একজন কালচিনির মোর্চা-সমর্থিত নির্দল বিধায়ক উইলসন চম্পামারি। অপরজন সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য চৈতি বর্মন। তিনি কোচবিহার জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি ছিলেন। এর ফলে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে ডুয়ার্সের আদিবাসী সম্প্রদায়, ও কোচবিহারের রাজবংশী সম্প্রদায়ের মধ্যে কতটা প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে সব দলের মধ্যেই চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে।
উইলসন ২০০৯ সালে কালচিনি বিধানসভা উপনির্বাচন ও ২০১১ বিধানসভা নির্বাচন, দু’বারই মোর্চার সমর্থনে জেতেন। শনিবার তৃণমূল ভবনে উইলসন বলেন, “জিটিএ হওয়ার পর পাহাড়ে উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু তরাই-ডুয়ার্স অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। সেখানকার উন্নয়ন করার জন্যই দিদির কাছে এসেছি।” তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “উইলসন তাঁর অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় তরাই ডুয়ার্সের পাশাপাশি দার্জিলিঙে তৃণমূল এ বার আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।” |
উইলসন দল ছাড়ায় দার্জিলিং পাহাড়ের মোর্চা নেতারা অস্বস্তিতে। কারণ, ডুয়ার্সের কালচিনি ও লাগোয়া জয়গাঁ এলাকায় উইলসনকে সামনে রেখেই পায়ের নিচে মাটি শক্ত করছিল মোর্চা। উইলসন গুরুত্বপূর্ণ কোনও সরকারি পদ কিংবা মন্ত্রিত্ব পেলে মোর্চার জনসমর্থন আরও তলানিতে নামার আশঙ্কা করছেন মোর্চা নেতাদের অনেকেই। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি উইলসনের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, “যথাসময়ে যা বলার বলব।”
অপর দিকে শনিবার দুপুরে কোচবিহারে ‘তৃণমূল যুবা’ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চে উপস্থিত হয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন চৈতি দেবী। সিপিএমের কোচবিহারের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক চণ্ডী পালের ‘স্নেহভাজন’ হিসেবে ১৯৯৮ সালে জেলা পরিষদের টিকিট পেয়ে জিতে সভাধিপতি হন। ২০০৩ সালেও নির্বাচনে জিতেছিলেন। দলীয় সূত্রের খবর, দলে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ার কারণেই জন্যই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায় বলেন, “চৈতিদেবী তৃণমূল কংগ্রেসের সভায় গিয়েছেন। এ কথা জানার পরে জরুরি আলোচনা সভা ডেকে ওঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।” পাশাপাশি, সিপিএমের জেলা কমিটির একাধিক সদস্যের অভিযোগ, চৈতি দেবীকে সভাধিপতি বানানোর টোপ দিয়ে দলে টেনেছে তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা নেতৃত্ব অবশ্য এখনই সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। |