যেখানে তাঁর উপরে হামলা হওয়া নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড়, সেই ভাঙড়েই ফের হাজির রেজ্জাক মোল্লা। ঘরছাড়া সিপিএম সমর্থকদের ফেরাতে শনিবার আক্ষরিক অর্থেই মাঠে নামতে দেখা গেল এই বর্ষীয়ান নেতাকে। তবে এ বার এই ডাকাবুকো নেতার সঙ্গী লাঠি। হাঁটছেন যার ভরসায়। বলছেন, “এখনও কোমরে ব্যথা হচ্ছে বলে লাঠি নিচ্ছি। বেল্টও পরে আছি। তবে অসহায়দের পাশে তো দাঁড়াতে হবে। তা ছাড়া, সামনে পঞ্চায়েত ভোট। ”
গত ২ জানুয়ারি ভাঙড়ের বামনঘাটায় আক্রান্ত হন সত্তরোর্ধ্ব রেজ্জাক। দাঁত নড়ে যায়। চোট লাগে শিরদাঁড়ায়। ২৩ দিন হাসপাতালে ছিলেন। বামনঘাটার ওই ঘটনার পর থেকে তারডা পঞ্চায়েতের বামনঘাটা ও কাঁটাখালি, বেওতা-১ পঞ্চায়েতের দাদুপাড়া, বুড়িরপুকুর ও হানাখালি এলাকার ১৪৬টি সিপিএম সমর্থক পরিবার তৃণমূলের অত্যাচারে ঘরছাড়া হয় বলে অভিযোগ সিপিএমের। কিছু বাড়িতে ভাঙচুরও চলে। ওই পরিবারের সদস্যদেরই এ দিন সকালে ফেরানো হয়। লাঠিতে ভর দিয়ে কাটাঁতলায় সিপিএম পার্টি অফিস থেকে কিছুটা দূরে মাঠে বসেছিলেন রেজ্জাক মোল্লা। সঙ্গে দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী, সাত্তার মোল্লারা। ২ জানুয়ারি হামলার সময়ে দলের যে গাড়িতে ছিলেন রেজ্জাক, এ দিনও এসেছিলেন সেটি চেপেই। |
ঘরে ফেরা মহিলা-পুরুষেরা জানান, বাসন্তী, সোনারপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি তাঁরা। যদিও দুর্যোধন মণ্ডল, বাচ্চামণি মণ্ডল, সুমিত্রা সিন্ধুরা অনেকেই দেখলেন, তাঁদের কারও বাড়ির চাল নেই। কোথাও আসবাব ভাঙা। রেজ্জাকের হুঁশিয়ারি, “এর পরে যদি ওঁদের উপরে ফের হামলা হয়, আশা করি পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। না হলে আমরাই যা করার, করব।”
ঘরছাড়াদের অধিকাংশই কাজ করতেন স্থানীয় একটি ভেড়িতে। রেজ্জাকের অভিযোগ, “তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের নেতৃত্বে তার দলের লোকেরা ওই ভেড়ির দখল নিতে চাইছে। তাই ওই ভেড়ির কর্মীদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।” রেজ্জাকের উপরে হামলায় মূল অভিযুক্ত ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল অবশ্য বলেন, “আমাদের কেউ ওই পরিবারগুলির উপরে হামলা করেনি। রেজ্জাক মোল্লা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।” |