|
|
|
|
লিয়াকত-কাণ্ডে তদন্ত করুক এনআইএ: ওমর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সন্দেহভাজন হিজবুল জঙ্গি লিয়াকত শাহের গ্রেফতার নিয়ে কেন্দ্র বনাম জম্মু-কাশ্মীর তরজার পারদ ক্রমশই চড়ছে। গোরক্ষপুর থেকে ধরা পড়া লিয়াকত দোলের দিন রাজধানীতে বিস্ফোরণের চক্রান্ত করছিল বলে
কাল দাবি করে দিল্লি পুলিশ। দিল্লির জামা মসজিদের কাছে তার বলে দেওয়া এক অতিথিশালা থেকে উদ্ধারও হয় প্রচুর বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্র। কিন্তু ওমর আবদুল্লা প্রশাসন জানায়, লিয়াকত শাহ পুরোপুরি নির্দোষ।
শাহের তদন্তভার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা(এনআইএ)-র হাতে তুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে শনিবারই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।
’৯০ এর দশকে বহু কাশ্মীরি যুবক জঙ্গি হামলার প্রশিক্ষণ নিতে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানে গিয়েছিল। তারা সন্ত্রাসবাদের পথ ছেড়ে দিয়ে দেশে ফিরতে চাইলে তাদের পুনর্বাসনের বন্দোবস্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কাশ্মীর প্রশাসন। তাঁদের দাবি, সমাজের মূল স্রোতে ফেরার ইচ্ছে জানিয়ে ২০১১-এর ফেব্রুয়ারিতে যোগাযোগ করেছিল শাহ। আগে কোনও জঙ্গি হামলায় তার নাম জড়িয়েছিল কি না, এই দু’বছর ধরে পরীক্ষা করা হয় তার সমস্ত খুঁটিনাটি। পাকিস্তানে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা অসুবিধে বলে ঠিক হয় নেপাল সীমান্তের সানাউলি চেক পোস্ট হয়ে ভারতে ঢুকবে সে। কাশ্মীর প্রশাসন সূত্রে খবর, লিয়াকতের ফেরার কথা রাজ্য প্রশাসন থেকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা সকলেই জানতেন।
পাকিস্তান থেকে অবশ্য লিয়াকত একা আসেনি। তার দ্বিতীয় স্ত্রী আখতার ও তাদের মেয়েও সঙ্গে ছিল। লিয়াকতের প্রথমা স্ত্রী আমিনা বেগম গত কালই জানান, এদের অতীত যাচাই করে ছাড়পত্র দেওয়ার পরই ভিসা-পাসপোর্ট সব সঙ্গে নিয়েই এরা দেশে ফেরে।
১৯ মার্চ ভারত-নেপাল সীমান্তরক্ষী বাহিনী লিয়াকতদের ভারতে ঢুকতে সাহায্য করে। ওমর আবদুল্লা সরকারের অভিযোগ, এর পর তাদের কোনও কিছু না জানিয়েই চুপিসারে লিয়াকতকে গ্রেফতার করে নেয় দিল্লি পুলিশ। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা জানান, শাহের সত্যিই কোনও দোষ আছে কি না তা জানতে তদন্ত করুক এনআইএ। এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চেয়ে এ দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন তিনি।
উপত্যকার প্রশাসনের আশঙ্কা, প্রাক্তন জঙ্গিদের পুনর্বাসন প্রকল্প ঘোষণার পর দেশে ফেরার যে প্রবণতা দেখা গিয়েছিল, লিয়াকতের গ্রেফতারির ফলে ছেদ পড়বে
তাতে। তা ছাড়া সংসদ হামলায় অভিযুক্ত আফজল গুরুর পরিবারকে না জানিয়েই ফাঁসি দিয়ে দেওয়ায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে কাশ্মীরে। এই অবস্থায়
নির্দোষ কাশ্মীরির গ্রেফতার ফের অশান্তির আগুন জ্বালতে পারে উপত্যকায়।
কাশ্মীরের পরিস্থিতি যে ফের খারাপ হতে পারে সেই সম্ভাবনা অবশ্য আজ উড়িয়ে দিয়েছেন
অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। দিল্লিতে ন্যাশনাল এডিটরস কনফারেন্সে অর্থমন্ত্রী বলেন, আফজল গুরুর ফাঁসির পর উপত্যকায় কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু এপ্রিল-মে’র মধ্যে সেখানে শান্তি ফিরে আসবে। এ দিন চিদম্বরম লিয়াকত শাহের গ্রেফতারির উল্লেখ না করেও বলেন, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ডাকে কাশ্মীরবাসী সাড়া দেবেন না বলেই বিশ্বাস তাঁর। |
|
|
|
|
|