|
|
|
|
বেগতিক দেখে ছেলের সমালোচনায় মুলায়ম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
তারুণ্যের প্রতীক হিসেবে মাত্র এক বছর আগে উত্তরপ্রদেশের শাসনের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ইতিমধ্যেই অখিলেশ যাদব সরকারের বিরুদ্ধে জনমানসে ক্ষোভ তৈরি হওয়ায় কার্যত সমাজবাদী পার্টির (সপা) বিবেকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন তাঁর বাবা মুলায়ম।
রামমনোহর লোহিয়ার ১০৩তম জন্মবার্ষিকীতে আজ অখিলেশের প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান মুলায়ম। মুলায়মের মতে, ক্ষোভ দূর করতে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের মূল্যায়ন করা উচিত অখিলেশের। ছেলের সমালোচনা এর আগেও করেছেন তিনি। আজও মুলায়ম বলেন, “মন্ত্রীরা লাগামছাড়া আমোদে ব্যস্ত। আর প্রশাসন ব্যস্ত নির্লজ্জ ভাবে তোষামোদিতে।” তাঁর মতে, এতে সরকারের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। অখিলেশের বোঝা উচিত সরকার চালাতে গেলে কঠোর হতে হয়।
মুলায়মের এ ভাবে সরব হওয়ার মধ্যে নির্দিষ্ট একটি ছক রয়েছে বলেই দাবি অনেকের। তাঁদের মতে, অখিলেশ সরকারের বিরুদ্ধে আম-জনতার ক্ষোভের কথা জানেন মুলায়ম। লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। এই ক্ষোভকে কাজে লাগাতে পারেন বহুজন সমাজ পার্টির (বসপা) নেত্রী মায়াবতী। তাই আগে ভাগেই অখিলেশের সমালোচনা করে মায়াবতীর পালের হাওয়া কেড়ে নিতে সক্রিয় হলেন মুলায়ম। অর্থাৎ, বিষয়টি পিতা-পুত্রের গড়াপেটা খেলা।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের পরে মুলায়মকে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চাইছেন সপা নেতৃত্ব। উত্তরপ্রদেশের ৮০টি লোকসভা আসনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি আসনে জিততে পারলে প্রধানমন্ত্রী পদের অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠবেন মুলায়ম। বিধানসভা নির্বাচনে মায়াবতীকে পর্যুদস্ত করার পর ওই রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করার বিষয়ে আশাবাদী ছিল সপা। কিন্তু যত দিন গড়িয়েছে রাজ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছেন অখিলেশ। এক বছরের মধ্যে ওই রাজ্যে অন্তত এক ডজনের বেশি সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ, সপা নেতাদের জুলুম, প্রশাসনের নির্লিপ্ততা দেখে ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষের অখিলেশ সম্পর্কে মোহভঙ্গ হয়েছে বলে দাবি বসপার। বিরোধীদের এই দাবি যে অমূলক নয় তা আজ প্রমাণিত হয়েছে মুলায়মের বক্তব্যেও।
তৃণমূল ইউপিএ সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার পর থেকেই দ্রুত লোকসভা নির্বাচনের দাবি করে আসছিলেন মুলায়ম। মুখে ওই দাবি করলেও বর্তমানে তাঁর দলের
হাতেই রয়েছে ইউপিএ সরকারের জিয়নকাঠি। কিন্তু ডিএমকে সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও সংখ্যালঘু সরকারকে ফেলতে তিনি খুব একটা ইচ্ছুক নন। সপা নেতৃত্বের বক্তব্য, এখন কেন্দ্রের পাশে দাঁড়ালে সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি করে রাজ্যের জন্য আরও আর্থিক সাহায্য আদায় করে নেওয়া যাবে।
কিন্তু মুলায়ম ঘনিষ্ঠেরা মনে করছেন, এর ফলে উল্টো সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এক বছরেই সপা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়েছে। পরে সেই ক্ষোভ বাড়তে পারে। বহু বর্ষীয়ান সপা নেতাও রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছেন। সেই পরিস্থিতি সামলাতেই অখিলেশ সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন মুলায়ম। তাঁর সতর্কবাণী, “যারা আমাদের বিধানসভায় জিতিয়ে আনতে সাহায্য করেছে মন্ত্রীদের কারণে তারাই এখন পিছনের সারিতে। এই পরিস্থিতি পাল্টানো প্রয়োজন।” |
|
|
|
|
|