চলতি খাতে বাণিজ্যিক লেনদেন ঘাটতি কমাতে এ বার ঋণপত্রের বাজারে বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নির পথ আরও মসৃণ করল কেন্দ্র।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, দীর্ঘ মেয়াদি সরকারি ঋণপত্রে (গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিজ) ২,৫০০ কোটি ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি (এফআইআই)। আগে যা ছিল ১,৫০০ কোটি ডলার।
বিভিন্ন সংস্থার ঋণপত্রে (কর্পোরেট বন্ড) টাকা ঢালার ঊর্ধ্বসীমা অবশ্য ৫,১০০ কোটি ডলারই থাকছে। কিন্তু আগে সেখানে বিভিন্ন ধরনের ঋণপত্রে লগ্নির আলাদা-আলাদা সর্বোচ্চ সীমা ছিল। যেমন, পরিকাঠামো বন্ডে ২,৫০০ কোটি ডলার। অন্যান্য নথিভুক্ত কর্পোরেট বন্ডে ২,০০০ কোটি। ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের
|
পি চিদম্বরম।
ছবি: পিটিআই |
এক্তিয়ার ছিল বিভিন্ন ওয়েলথ ফান্ড, পেনশন ও বিমা ফান্ডগুলির। কিন্তু আগামী পয়লা এপ্রিল থেকে চালু হওয়া নয়া নিয়মে সেই সমস্ত বিভাজন আর থাকবে না। সব মিলিয়ে কর্পোরেট বন্ডে ৫,১০০ কোটি ডলার ঢালতে পারবে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি।
শনিবার এই ঘোষণা করে অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম জানান, “পয়লা এপ্রিল থেকে ঋণপত্রের বাজারে লগ্নির জন্য দু’টিই ‘ঝুড়ি’ থাকবে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির সামনে। একটি ২,৫০০ কোটি ডলারের সরকারি ঋণপত্র। আর অন্যটি হল ৫,১০০ কোটি ডলারের কর্পোরেট বন্ড।” চাহিদা ভাল বুঝলে আগামী দিনে এই ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বসীমা আরও বাড়ানো হতে পারে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। চলতি খাতে বাণিজ্যিক লেনদেন ঘাটতিতে (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট) রাশ টানতেই যে এই উদ্যোগ, এ দিন তা বার বার স্পষ্টও করে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে ওই ঘাটতি মোট অভ্যন্তরীণ উত্পাদনের রেকর্ড ৫.৪ শতাংশে পৌঁছনোর পর যা একেবারে অপ্রত্যাশিত ছিল না বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলও। এ বারের বাজেট বক্তৃতাতেই চিদম্বরম জানিয়েছিলেন, চলতি খাতে বাণিজ্যিক লেনদেন ঘাটতি কমাতে প্রয়োজন বিদেশি লগ্নি। তাই তাকে স্বাগত জানানোর কোনও বিকল্প নেই। সেই বিনিয়োগের খোঁজে বাজেটের আগে লন্ডন-ফ্রাঙ্কফুর্ট-হংকং-সিঙ্গাপুর ঘুরে এসেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, সংসদে অর্থ বিল পাশ হলেই ওই একই লক্ষ্যে ফের তাঁর গন্তব্য হবে আমেরিকা, জাপান ও কানাডা। শুধু তা-ই নয়। বাজেটের পরে শিল্পমহলের সঙ্গে বৈঠকেও চিদম্বরম স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, রাজকোষ ঘাটতির থেকে তাঁর কাছে বেশি চিন্তার কারণ বাণিজ্যিক লেনদেনে ঘাটতি। আমদানি আর রফতানির মধ্যে ক্রমশ চওড়া হতে থাকা ওই বিভাজন কমাতে সোনা কেনা কমানোর জন্য দেশের সাধারণ মানুষকে সরাসরি আবেদনও জানান তিনি। সুতরাং সোনা আমদানি কমানো ও প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি টানায় জোর দেওয়ার পর ঘাটতি কমাতে এ বার ঋণপত্রের বাজারে বিদেশি আর্থিক সংস্থার ডলার আসা আরও মসৃণ করলেন চিদম্বরম। |