এবার মহানন্দায় ভাসল মরা মাছ
রলা, তিস্তার পর এবার মহানন্দায় ভেসে উঠল মাছ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফুলবাড়ি ক্যানাল সংলগ্ন এলাকায় মহানন্দা নদীতে প্রচুর পরিমাণ মৃত ও অর্ধমৃত মাছ ভেসে উঠতে থাকে। জলের মধ্যে খাবি খেতে থাকে পুঁটি, ট্যাংরা, তা, পয়া, বান মাছ। আশেপাশে থেকে শ’য়ে শ’য়ে বাসিন্দা জলে নেমে মাছ ধরা শুরু করে। কেউ হাত দিয়ে, কেউ শাড়ি, ওড়না, জাল দিয়ে মাছ ধরে বালতি ভর্তি করে নিয়ে যায়। ফুলবাড়ি মোড়, মার্ডার মোড়ে, চুনাভাটি মোড়ে দুপুর থেকে মাছ বিক্রি করে অনেকে। বিকালে ফুলবাড়ি হাটেও মহানন্দার মাছ বিক্রি হয়। এত সব কান্ড ঘটে গেলেও বিকালের আগে খবরই পৌঁছেইনি পুলিশ, প্রশাসন, পুরসভার কাছে। একমাত্র মৎস্য দফতরের কয়েকজন আধিকারিক বেলা ১২টা নাগাদ ঘটনাস্থলে যায়।
ফুলবাড়িতে মহানন্দা নদীতে ভেসে ওঠা মরা মাছ। —নিজস্ব চিত্র।
তিস্তায় মাছ ভেসে ওঠার পরে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তার সিকিভাগও দেখা যায়নি মহানন্দার ঘটনায়। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “ঘটনাটি কেউ জানায়নি। বিকেলের দিকে জানতে পেরেছি। বিডিও’র সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে আধিকারিদের পাঠানো হয়েছে। মৎস্য দফতরের কাছেও রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।” শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “ওই বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “ওই ঘটনা আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।” মৎস্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর তিমিরবরণ মণ্ডল জানান, মাছ ভেসে ওঠার খবর পাওয়ার পরই কয়েকজন কর্মীকে সেখানে পাঠানো হয়। তাঁরা সেখান থেকে জল ও মাটি সংগ্রহ করেছে। তা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হবে। মৎস্য দফতরের তরফে ধারণা, বৃহস্পতিবার রাতে মহানন্দা নদী সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। তার ফলে বৃষ্টির সঙ্গে নদীর পাশে জমে থাকা আবর্জনা জলে মিশেছে। সেখান থেকে ‘বিষক্রিয়া’ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নদী সংলগ্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি চা বাগান রয়েছে। দাগাপুরে একটি দেশি মদের কারখানা রয়েছে। সেখান থেকে আবর্জনা নদীতে ফেলা হয়। তা থেকেই বিষক্রিয়া হতে পারে। ডেপুটি ডিরেক্টর বলেন, “জলে অক্সিজেনের পরিমাণ কম হয়ে যাওয়ায় মাছগুলি ভেসে উঠেছে। কোনও ভাবে বিষক্রিয়া হয়েছে কি না তা এখনও পরিষ্কার নয়। জল ও মাটি পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।”
এলাকার বাসিন্দা সাজদা খাতুন, রবিনা খাতুন’রা জানান, এদিন সকাল ৬টা নাগাদ নদীতে মাছ ভেসে থাকতে দেখেন তাঁরা। সাজদা বলেন, “আমি নদীতে নেমে হাত দিয়েই মাছ ধরতে শুরু করি। এর মধ্যে প্রতিবেশীরা সবাই এসে মাছ ধরতে শুরু করি। আশেপাশের এলাকা থেকে বাসিন্দারা এসে বালতি, জাল ভর্তি করে মাছ নিয়ে যায়।” দুপুরের পরই এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মাছ বিক্রি শুরু হয়। পশ্চিম ধনতলার পঞ্চায়েত সদস্য পরেশ রায় বলেন, “অনেক মাছ সকালে ভেসে ওঠে। ঠিক কী হয়েছে বোঝা যাচ্ছে না। অনেকে বিষক্রিয়ার কথা বলছেন। আবার মাছ বাজারেও বিক্রি হচ্ছে।” জেলাশাসক জানিয়েছেন, কেউ মাছ মারার জন্য জলে বিষ দিয়ে থাকলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হবে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.