বাঘ-সিংহের পর এ বার ভালুক সাফারি
গাছের আড়ালে একে অপরের সঙ্গে খুনসুটিতে ব্যস্ত। আর সেই দৃশ্য ঝটপট ক্যামেরা বন্দি করছিলেন অনেকেই। বিষয়টি দেখতে পেয়েই সঙ্গিনীটি তড়িঘড়ি চলে গেল ঝোপের আড়ালে। আর তার দেখা নেই। সঙ্গিনী লজ্জা পেয়ে চলে যাওয়ায়, রাগে তখন রীতিমত গজগজ করছে তার সঙ্গীটি।
খুনসুটির এই গল্প দুই ভালুককে ঘিরে। তাদের ঠিকানা নন্দনকানন, ভুবনেশ্বর। দু’টি পুরুষ ও চারটি মহিলা ভালুককে নিয়ে এখানে গড়ে উঠেছে একটি মুক্তাঞ্চল। যেখানে কখনও চলে প্রেম, কখনও বিরহ। কখনও সঙ্গিনীকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার রাগে চলে মারামারিও। আর জাল দিয়ে ঘেরা বাসে চেপে সেই দৃশ্য তাড়িয়ে উপভোগ করেন দর্শনার্থী ও পর্যটকরা। সিংহ, সাদা বাঘ ও হরিণের পরে সম্প্রতি এই ‘বিয়ার সাফারি’ চালু করেছে নন্দনকানন কর্তৃপক্ষ। সাফারি পার্কটির উদ্বোধন করেছেন ওড়িশার বন ও পরিবেশ মন্ত্রী বিজয়শ্রী রাউতরায়। তাঁর কথায়, “এই সাফারি নন্দনকাননের একটি গর্বের বিষয়। তবে ভালুুকের সংখ্যা আরও বাড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।”
ওড়িশার নন্দনকানন। এখানেই শুরু হয়েছে ভালুক সাফারি।—নিজস্ব চিত্র
নন্দনকানন কর্তৃপক্ষ জানান, ‘বিয়ার সাফারি’ চালু করার তৃতীয়। হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরুর পরে ওড়িশার এই নন্দনকানন। নন্দনকাননের এক কর্তার কথায়, ওড়িশার বিভিন্ন গ্রামের জঙ্গলে এখনও অনেক ভালুক রয়েছে। মাঝে মধ্যেই সেগুলি লোকালয়ে বেরিয়ে আসে। তাদের মধ্যে আহত ভালুকগুলিকে নন্দনকাননে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে এখানে মোট ১৪টি ভালুক রয়েছে। তাদেরই ৬টিকে নিয়ে তৈরি হয়েছে এই ‘সাফারি পার্ক’। বাকিগুলিকে রাখা হয়েছে খাঁচায়। যাদের মধ্যে তিনটি হিমালয়ান প্রজাতির ভাল্লুক।
নন্দনকাননের সহ-অধিকর্তা কে এল পুরোহিত বলেন, “আমাদের জায়গা ছিল। পর্যাপ্ত ভালুকও ছিল। তাই এই সাফারি পার্ক তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। অভয়ারণ্যের মধ্যে প্রকৃতিপ্রেমীরা যাতে খুব কাছ থেকে এই ভালুক দর্শনের সুবিধা পেতে পারেন তারই ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
নন্দনকানন সূত্রের খবর, সিংহ ও হরিণ সাফারি পার্কের পাশেই প্রায় ১০ একর জমির উপরে এই ভালুক সাফারি পার্কটি তৈরি করা হয়েছে। স্থপতিদের দিয়ে এই পার্কের নকশা তৈরি করার পরে কেন্দ্রীয় জু অথরিটি তা অনুমোদন করেছে। পার্কের গেট থেকে শুরু করে অভ্যন্তর, সবই করা হয়েছে বন্যপ্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। এটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ২ কোটি টাকা। পার্কের ভিতরেই রয়েছে চওড়া রাস্তা। জাল দিয়ে ঘেরা বাসে চেপে দর্শনার্থীরা ভালুক সাফারি পার্কে ঘোরার সুযোগ পান। দর্শনী মাথাপিছু ১০ টাকা। এ ছাড়াও, প্রতিটি সাফারি পার্কের ভিতরেই রয়েছে আবাসিক প্রাণীদের চিকিৎসা কেন্দ্র। রয়েছে খাবার জায়গা, জলের জায়গা।
১৯৬০ সালে নন্দনকানন তৈরি হয়। ১৯৮৪ সালে চালু হয় সিংহ সাফারি পার্ক ও ১৯৯১ এ চালু হয় সাদা বাঘ সাফারি পার্ক। ২০১১ সালে চালু হয় হরিণ সাফারি পার্ক। সহ-অধিকর্তা পুরোহিতের কথায়, “নন্দনকানন শুধু একটি চিড়িয়াখানা নয়। এটি আদপে একটি অভয়ারণ্য। আর তাই এখানে বন্য প্রাণীদের জন্য মুক্তাঞ্চল তৈরি করা হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.