মরা তোর্সার নদী সংস্কার করে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন। প্রায় ১৫ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করে ইতিমধ্যে রাজ্য পর্যটন দফতরে জমাও দিয়েছে প্রশাসন। শুক্রবার বিধানসভায় বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলে বরাদ্দ মঞ্জুরের দাবি জানান পরিষদীয় সচিব তথা জেলার নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “পর্যটন মন্ত্রী বিষয়টি শুনেছেন। নথিপত্র দেখে বরাদ্দ অনুমোদন করার আশ্বাসও দিয়েছেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে কোচবিহারে পর্যটক আকর্ষণ যেমন বেড়ে যাবে, তেমনিই বোটিং, মাছ চাষ, পিকনিক স্পট চালু করে কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে।”
আলিপুরদুয়ার মহকুমার সোনাপুর লাগোয়া খয়েরবাড়ি এলাকায় তোর্সার মূলস্রোত থেকে বার হয়ে এসে কোচবিহার কালীঘাটে ফের ওই নদীতেই মিশেছে মরা তোর্সা। সবমিলিয়ে নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০ কিমি। এরমধ্যে কোচবিহার বিমান বন্দরের পিছন দিক থেকে মূল তোর্সার প্রবাহ পথ পর্যন্ত প্রায় ৪ কিমি এলাকা জুড়ে মরা তোর্সার খাত রয়েছে। একেবারে শহর লাগোয়া হওয়ায় বর্ষার সময় নদী ফুঁসে ওঠায় বিস্তীর্ণ এলাকায় জল ঢুকে পড়লেও শুখা মরসুমে নদীতে জল প্রায় থাকে না। নদী কার্যত আবর্জনা ফেলার জায়গায় পরিণত হয়। |
সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথবাবু সংস্কারের ব্যাপারে তোড়জোড় শুরু করেন। জেলা প্রশাসন সেচ, পর্যটন, ভূমি ও ভূমি সংস্কার, মৎস, জনস্বাস্থ্য কারিগরি-সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সৌন্দযর্করণের রূপরেখা তৈরি হয়। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “মরা তোর্সার্র সংস্কার করে এলাকা সাজা’র ব্যাপারে সমীক্ষা করে প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শহর লাগোয়া চকচকা, গুড়িয়াহাটি-১, গুড়িয়াহাটি-২ লাগোয়া এলাকা দিয়ে মরা তোর্সার প্রবাহ রয়েছে। নদীখাত খনন করে সারা বছর জল ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো গেলে পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায় কৃষি জমিতে সেচের সুবিধা মিলবে। এছাড়াও বোটিং, মাছ চাষের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। নদীর গা ঘেঁষে বাঁধ তৈরি করে আলোকস্তম্ভ বসিয়ে ফুলগাছ, সুবজায়নের কাজ করা হবে। লাগোয়া জমিতে রকমারি ফলের বাগান ও পিকনিক স্পট তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে।
পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথবাবু জানান, শহর লাগোয়া ওই নদীতে রাজ আমলের নানা স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। হাতের কাছে সন্ধ্যায় ঘোরা থেকে পিকনিক স্পট হলে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণ বাড়বে। পরিবেশ প্রেমী সংস্থা ন্যাস গ্রুপের সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, “অন্তত একশো বছর আগে মূল তোর্সা থেকে বার হয়ে ফের ওই নদী মূলস্রোতে মিশেছে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে শহর লাগোয়া ৪ কিমি এলাকায় নদীটির অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। দ্রুত সংস্কার করা দরকার নদীটির।” |