রক্ত আছে। নেই ব্লাড-ব্যাগ।
রক্ত সংরক্ষণ করার ওই ব্যাগের অভাবে অনির্দিষ্ট কালের জন্য নদিয়া জেলার রক্তদান শিবির আপাতত বাতিল করে দিয়েছে নদিয়া জেলা হাসপাতালের ব্লাড-ব্যাঙ্ক। ফলে যে কোনও মুহূর্তে রক্তের চরম সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা। জেলা হাসপাতলের ব্লাড-ব্যাঙ্কে যে পরিমাণ রক্ত রয়েছে তাতে খুব বেশি হলে আর এক সপ্তাহ রক্তের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। তারপর?
স্বাস্থ্য কর্তারা স্পষ্টই বলছেন, তার মধ্যে রক্তদান শিবির চালু করতে না পারলে পরিস্থিতি চরম আকার নেবে। কিন্তু ব্লাড-ব্যাগ না থাকায় রক্ত সংগ্রহরে পরে তা সররক্ষণ করা হবে কোথায়, সে ব্যাপারে স্বাস্থ দফতরের কোনও স্পষ্ট উত্তর নেই।
এ সমস্যা শুধু নদিয়ার নয়। রাজ্য জুড়েই ব্লাড-ব্যাগের সমস্যা। বহু জেলাতেই তাই রক্তদান শিবির সিকেয় উঠেছে বলে জানা গিয়েছে। শিবির বাতিল হওয়ার ফলে বেশ কিছু গ্রুপের রক্ত অধিকাংশ ব্লাড-ব্যাঙ্কে প্রায় নেই। শিবির হলে তা-ও বা প্রাপ্তির সম্ভাবনা থাকে। ব্যাগের ভাবে শিবির করতে না পারায় সে সম্ভাবনাও শিকেয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “ব্যাগ সরবরাহ না হওয়া পর্যন্ত আর রক্ত সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। ফলে গ্রীষ্মের শুরুতেই সমস্যা তৈরি হল।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লাডব্যাঙ্কে বর্তমানে আড়াইশো ব্যাগ রক্ত রয়েছে। প্রতিদিন রক্তের চাহিদা ৪০-৪৫ ব্যাগ। জেলা হাসপাতালের পাশাপাশি কৃষ্ণনগর ও লাগোয়া এলাকার নার্সিং হোমের রক্তের প্রয়োজন এখান থেকেই মেটাতে হয়। গরম কালে সেই চাহিদা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখি হয়। তার মধ্যে যদি বড়সড় কোনও দুর্ঘনা ঘটে তখন পরিস্থতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সব চেয়ে দুঃশ্চিন্তা থ্যালাসেমিয়া রোগীদের নিয়ে। গড়ে দৈনিক ৮-১০ জন থ্যালাসেমিয়া রোগীকে রক্ত দেওয়া খুবই জরুরি। ফলে সমস্যায় পড়বে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রন্ত রোগীরা। রক্তদান শিবির বাতিল করে দেওয়ার প্রতিবাদে বড়সড় আন্দোলন করার হুমকি দিয়ে রেখেছে ডিওয়াইএফ। সংগঠনের নদিয়া জেলা কমিটির সভাপতি সুমিত বিশ্বাস বলেন, “অতীতে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। ব্যাগের অভাবে সমস্ত শিবির বাতিল হওয়ার ঘটনা এই প্রথম। বর্তমান সরকার সেটাই করে দেখাল। অবিলম্বে রক্ত সংগ্রহ শিবির শুরু না করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।” |