তিনটি পঞ্চায়েতে নিয়োগ হয়নি আশাকর্মী, দুর্ভোগ মা-শিশুদের
গ্রামীণ স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে আশাকর্মীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও হুগলির পুড়শুড়া ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েতে এখনও কোনও আশাকর্মীই নিয়োগ হয়নি। অথচ, পুড়শুড়া-২, ডিহিবাতপুর এবং শ্যামপুর ওই তিনটি পঞ্চায়েত এলাকার জন্য পরীক্ষা এবং সাক্ষাৎকারের পরে ৫৪ জন আশাকর্মী বাছাই হয়ে গিয়েছিল তিন বছর আগেই। পঞ্চায়েত প্রধানদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরের উদাসীনতাতেই নিয়োগ আটকে রয়েছে। সার্বিক স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রামের মহিলা ও শিশুরা।
কেন নিয়োগ আটকে রয়েছে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ‘আশা সেল’-এর রাজ্য কো-অর্ডিনেটর শ্যামলী ভট্টাচার্য। হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বে থাকা সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (৩) প্রবীর ঘোষ দস্তিদার বলেন, “ওই তিনটি পঞ্চায়েতের আশাকর্মী পদপ্রার্থীদের নামের তালিকা স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়েছে। কেন অনুমোদন মিলছে না জানা নেই।” পুড়শুড়ার তৃণমূল বিধায়ক পারভেজ রহমান জানিয়েছেন, সমস্যা মেটানোর জন্য স্বাস্থ্য দফতরে তিনি নিজেও তদ্বির করেছেন।
তাঁর অভিযোগ, “সরকারের বদনাম করতে স্বাস্থ্য দফতরের কিছু আধিকারিক ষড়যন্ত্র করছেন। ঢিমেতালে কাজ করছেন।” তাঁর আশ্বাস, “তিনটি পঞ্চায়েতে আশাকর্মী নিয়োগে এই টালবাহানার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব।” কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন’ প্রকল্পের অধীনে আশাকর্মী নিয়োগের জন্য হুগলিতে পরীক্ষা হয় ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে। পরীক্ষার পরেই সংশ্লিষ্ট কমিটি মনোনীত প্রার্থীদের নামের তালিকা (প্যানেল) জেলা স্বাস্থ্য দফতরে পাঠান। জেলা স্বাস্থ্য দফতর তা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে পাঠায় অনুমোদনের জন্য। ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে জেলার অন্য পঞ্চায়েতগুলিতে নিয়োগপত্র পেয়ে যান প্রার্থীরা। প্রশিক্ষণ শুরু হয় ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি। মার্চ মাস থেকে তাঁরা কাজও শুরু করে দেন। কিন্তু সেই সময়ে পুড়শুড়ার ওই তিনটি পঞ্চায়েতে বাছাই প্রার্থীদের তালিকায় কিছু ভুল-ত্রুটির কথা উল্লেখ করে তা শোধরানোর নির্দেশ দেওয়া হয় স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। পঞ্চায়েতগুলির দাবি, যাবতীয় ভুল-ত্রুটি সংশোধন করে তালিকা ফের স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু নিয়োগ হয়নি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আশাকর্মীদের মূল কাজ মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেখভাল করা। এ ছাড়াও রয়েছে, গর্ভবতী মহিলার নাম ‘জননী সুরক্ষা যোজনা’র আওতায় নথিভুক্ত করা, গর্ভকালীন যাবতীয় পরিষেবা দেওয়া, প্রসবের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া, নবজাতকদের নির্দিষ্ট দিনগুলিতে দেখতে যাওয়া, টিকা নেওয়া সুনিশ্চিত করা ইত্যাদি। অন্যান্য জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মসূচিগুলির মধ্যে রয়েছে কুষ্ঠরোগী নথিভুক্তকরণ, তাঁদের ওষুধ খাওয়ানো ইত্যাদি।
কিন্তু আশাকর্মী নিয়োগ না হওয়ায় ওই সব কাজই পুড়শুড়া-২, ডিহিবাতপুর এবং শ্যামপুর ওই তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় থমকে রয়েছে। সমস্যায় পড়ছেন মা ও শিশুরা। ডিহিবাতপুরের পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের সুচিত্রা মান্না বলেন, “অসুবিধার কথা প্রশাসনের নানা মহলে জানিয়েছি। কিন্তু কিছু হচ্ছে না।” শ্যামপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমেরই বিভাস মান্না বলেন, “নিয়োগ যে কবে হবে, কে জানে?” পুড়শুড়া-২ পঞ্চায়েতের প্রধান, ওই দলেরই অনিতা বাগের বক্তব্য, “নিয়োগের বিষয়টি যে কোথায় আটকাচ্ছে, সেটাই তো আমরা বুঝতে পারছি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.