শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে ঢোকার করিডরের পুরনো বৈদ্যুতিক লাইনে। বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার পর দ্রুত আগুন নেভানো হলেও হাসপাতালের বৈদ্যুতিক লাইনের পরিস্থিতি এবং তার জন্য অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। এ দিন বেলা ৩ টা নাগাদ প্রসূতি বিভাগে ঢোকার দরজার সামনে বৈদ্যুতিক লাইনে আগুন ধরে যায়। বিকাশ রায় নামে এক কর্মী সে সময় ওটি থেকে বাইরে বেরিয়েছিলেন। তাঁর নজরে পড়তেই তিনি লোকজন ডাকেন। বালি ছুড়ে আগুন নেভান। খবর পেয়ে দমকলের ২টি ইঞ্জিন পৌঁছলেও তার আগেই আগুন নিভে যায়। তবে করিডরের ওই অংশে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না। পরে অন্য জায়গা থেকে অগ্নিনির্বাক আনা হলেও কী করে তা ব্যবহার করতে হয় তা স্বাস্থ্য কর্মীরা ঠিক জানতেন না।
আগুন লাগার খবর শুনে হইচই পড়ে যায় প্রসূতি বিভাগে ডোকার মুখে অপেক্ষায় থাকা রোগীর আত্মীয় পরিজনদের মধ্যে। যাদের পরিবারের প্রসূতিদের অস্ত্রোপচারের কথা রয়েছে তাঁরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস বলেন, “সে সময় কোনও অস্ত্রোপচার হচ্ছিল না। শট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলেই প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছেন বৈদ্যুতিক বিভাগের কর্মীরা।” আমরির ঘটনার পর হাসপাতালের পুরনো বৈদ্যুতিক লাইন মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। দেওয়ালের ভিতর দিয়ে তা নেওয়ার ব্যবস্থা হয়। প্রসূতি বিভাগের ওই অংশেও একই ব্যবস্থা করা হয়। তবে ওই কাজ ঠিক মতো করা হয়নি বলেই স্বাস্থ্য কর্মী এবং চিকিৎসকদের একাংশ অভিযোগ তুলেছেন। কেন না এ দিন বৈদ্যুতিক লাইনের যে অংশে আগুন লেগেছে সেই অংশে দীর্ঘদিনের পুরনো তার রয়েছে এবং দেওয়ালের ভিতর সেই তার সমস্ত জায়গায় নেওয়া হয়নি। বাইরে বেরিয়ে থাকা অংশেই আগুন ধরে যায়। হাসপাতাল সুপারও জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁরও নজরে এসেছে। তিনি বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন। কেন ওই সমস্ত অংসে বিদ্যুতিক লাইন দেওয়ালের ভিতরে নেই তা দেখতে বলা হয়েছে। হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অপূর্ব মণ্ডল বলেন, “কী ভাবে আগুন লেগেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওয়ারিংয়ে গোলমাল আছে কি না দেখছি।” আগুন লাগার খবরে উদ্বিগ্ন ভীষ্ম রায়। এ দিন বেলা ২ টা নাগাদ তাঁর স্ত্রী দয়িত্রীবালা দেবীর অস্ত্রোপচার হয়েছে। ভীষ্মবাবু বলেন, “স্ত্রী তখনও ওটি বা লেবার রুমেই ছিলেন, সে জন্য ওটির সামনে আগুন লাগার খবর শুনে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম।” উদ্বিগ্ন হয়ে পনেন মেঘরাজ শর্মা, রিঙ্কু পোদ্দাররা। মেঘরাজবাবুর স্ত্রী সরস্বতীদেবী, রিঙ্কুবাবু স্ত্রী ভাগ্যপুরদেবীরও এ দিন অস্ত্রোপচার হয়। আগুন লাগার ঘটনায় ব্যহত হয়ে পড়ে প্রসূতি বিভাগে চলতে থাকা একটি সেমিনারের কাজ। বিভাগের প্রধান নীলাঞ্জনা চৌধুরী জানান, চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখেন বৈদ্যুতিক তারে আগুন জ্বলছে। বাসি ছুড়ে ছুড়ে আগুন নেভানো হয়।” |