এমডি, এমএসে ভর্তি
দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকা বাছবে বিশেষজ্ঞ কমিটি
ইন-আদালত আগেই হয়ে গিয়েছে। কোনটা ‘দুর্গম’ এলাকা, কোনটাই বা ‘প্রত্যন্ত’, সেটা চূড়ান্ত হয়নি। জেরবার রাজ্য সরকার অবশেষে তা নির্ধারণের ভার তুলে দিল তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির হাতে। এর মধ্যেই স্নাতকোত্তর মেডিক্যালে ভর্তির জন্য দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিংয়েও অনিয়মের অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ দেখালেন তফসিলি প্রার্থীরা।
গ্রামে কাজ করতে চিকিৎসকদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য বিশেষ ‘ইনসেন্টিভ’ বা সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। বলা হয়েছিল, প্রত্যন্ত ও পিছিয়ে পড়া এলাকায় কাজ করলে মেডিক্যালের স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে ভর্তির ক্ষেত্রে বাড়তি ৩০ নম্বর দেওয়া হবে। কিন্তু ওই সব এলাকার তালিকা প্রকাশের পরে দেখা যায়, তাতে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাসপাতালের নাম নেই, অথচ রয়েছে এম আর বাঙুর হাসপাতাল। এমন নজির অজস্র।
এর প্রতিবাদ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়। এমডি, এমএসে ভর্তির প্রক্রিয়াও থমকে থাকে। বিষয়টি নিয়ে বহু সমালোচনার পরে এ দিন বিধানসভায় দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট হেলথ সার্ভিস (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল পেশ করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বিলটি পাশও হয়ে যায়। তবে ‘প্রত্যন্ত’ ও ‘পিছিয়ে পড়া’ এলাকার পরিবর্তে সংশোধনী এনে ‘প্রত্যন্ত’ ও ‘দুর্গম’ এলাকা বলে বিষয়টি চিহ্নিত করা হয়।
বিলে বলা হয়েছে, যে-সব চিকিৎসক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গ্রামে কাজ করতে রাজি হবেন, তাঁদের আর্থিক ভাতার সঙ্গে সঙ্গে শংসাপত্রও দেওয়া হবে। পরবর্তী কালে পদোন্নতি এবং বদলির ক্ষেত্রেও তাঁদের বিষয়টি বিবেচিত হবে আলাদা ভাবে। স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তিতেও বাড়তি সুবিধা পাবেন তাঁরা। কোন কোন এলাকা প্রত্যন্ত ও দুর্গম, তা ঠিক করে দেবে তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি।
বিশেষজ্ঞ কমিটির নিরপেক্ষতা কী ভাবে বজায় থাকবে, সেই প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন। উত্তরে চন্দ্রিমাদেবী বলেন, “বিলেই এটা সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে বিশেষ দক্ষতা আছে, এমন ব্যক্তিকেই কমিটির প্রধান করা হবে। কমিটির সুপারিশ ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হবে, যাতে সাধারণ মানুষ সেই বিষয়ে মতামত জানাতে পারেন। কোনও কিছুই চাপিয়ে দেওয়া হবে না।”
এমডি, এমএসে সরকারি চিকিৎসকদের ভর্তির সমস্যা মেটাতে ওই কমিটির ব্যবস্থা হলেও স্নাতকোত্তর মেডিক্যাল নিয়ে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না সরকারের। ভর্তির প্রক্রিয়া নিয়ে আগেই মামলা হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করে ভর্তি নিতে বলেছিল আদালত। এ দিন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিং চলছিল। নিয়ম অনুযায়ী তিন জন সাধারণ প্রার্থীর কাউন্সেলিংয়ের পরে এক জন তফসিলি জাতি বা উপজাতি প্রার্থীর কাউন্সেলিং হওয়ার কথা। কিন্তু তার বদলে পরপর ২০ জন সাধারণ প্রার্থীর কাউন্সেলিং হয়ে যায়।
প্রতিবাদ জানান তফসিলি প্রার্থীরা। কাউন্সেলিংয়ের ঘরের সামনেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় ভুল স্বীকার করে জানান, একটা সমস্যা হয়ে গিয়েছে। ভুলটা কী ভাবে হল, তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে কাউন্সেলিংয়ের পরে যাঁদের ‘অফার লেটার’ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের কাছ থেকে তা ফিরিয়ে নেওয়া যাবে না। তাই বিকল্প কোনও ব্যবস্থার কথা ভাবতে হবে। যথাসময়ে প্রার্থীদের তা জানিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সংজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক বাধায় এমডি, এমএসে সরকারি চিকিৎসকদের ভর্তির বিষয়টি আটকে ছিল। স্নাতকোত্তরে ৭০টি আসন খালি পড়ে থাকায় হাইকোর্ট দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিংয়ের নির্দেশ দেয়। কিন্তু এ দিনের বিক্ষোভের পরে বিষয়টির আদৌ সুষ্ঠু সমাধান হবে কি না, তা অনিশ্চিতই রয়ে গেল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.